বিশ্বজিৎ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর: অসুস্থতার জেরে শরীর একেবারে ভেঙে গিয়েছিল। কিন্তু বিড়ির নেশা (Chain Smoker) ত্যাগ করতে পারেননি। তার চরম মূল্য চোকাতে হল প্রৌঢ়কে। বিড়ি আগুনেই পুড়ে গেল ঘর-বিছানা। আর তাতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে, দম আটকে মৃত্যু হল তাঁর (Burnt to Death)।
পশ্চিম মেদিনীপুর (Paschim Medinipur) জেলার খড়্গপুরের (Kharagpur) তালবাগিচা এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। মৃত ব্যক্তির নাম সনৎ বাবু। বয়স ৫৯ বছর। কিছু দিন আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। তার পর পক্ষাঘাতে কাবু হয়ে পড়েন। কোনও রকমে হাত-পা নাড়াচাড়া পারতেন তিনি। সেই অবস্থায় বিড়ি ধরাতে গিয়েই বিপত্তি ঘটে থাকতে পারে বলে সন্দেহ পরিবারের।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পাশাপাশই দু’টি বাড়ি ছিল সনতের। নতুন বাড়িতে মেয়ে এবং পরিবার থাকতেন। সেখানেই খাওয়া-দাওয়া করতেন তিনি। রাতে শুতে যেতেন পুরনো বাড়িতে। বুধবার রাতে তাঁকে খাবার দিয়ে আসেন মেয়ে। ওষুধ খাইয়ে আসেন দাদা। আচমকা রাত সওয়া ১১টা নাগাদ চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘুম ভাঙে সকলের। বেরিয়ে দেখেন দাউদাউ করে জ্বলছে সনতের শোওয়ার ঘরটি।
আরও পড়ুন: South 24 Parganas News : সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হলেও নেই হঁশ, বারুইপুরে ধরপাকড় পুলিশের
পাড়া-পড়শি মিলে আগুন পেরিয়ে সনৎকে ঘরের মধ্যে থেকে উদ্ধার করে আনেন। কিন্তু তত ক্ষণে তাঁর হাতের একাংশ পুড়ি গিয়েছে। পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে লেপ-তোষক। সাডা়শব্দও করছিলেন না সনৎ। সঙ্গে সঙ্গে খড়্গপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে সনতের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করে। তার পর দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে।
সনতের মেয়ে রিনি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বড্ড বেশি ধূমপানের নেশা ছিল বাবার। বারণ করতাম। তা-ও লুকিয়ে বিড়ি খেত। শরীর অসাড় হয়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থায় আগুন ধরাতে গিয়েই হয়ত বিপদ ঘটে যায়।’’
সনতের প্রতিবেশি চঞ্চল কর বলেন, ‘‘যখন বার করে আনা হল, তখনই দেখেছিলাম যে সনৎদার কবজির কাছটা পুড়ে গিয়েছে। পুড়ে গিয়েছে লেপ-তোষক। উনি যে মারা গিয়েছেন, তখনই বুঝতে পেরেছিলাম। বিছানার পাশে দেশলাই, বিড়ির প্যাকেট পড়ে ছিল। দেশলাই জ্বালিয়ে বিড়ি খেতে গিয়েছিলেন বোধহয়। তার উপর স্ট্রোক হয়ে প্যারালিসিস হয়ে গিয়েছিল। তাতেই বিপদ ঘটে গিয়ে থাকবে।’’
সনতের যে বিড়ির নেশা রয়েছে, তা জানতেন আশেপাশের সকলেই। অসুস্থ হয়ে পড়ার পর থেকে সকলেই বারণ করতেন তাঁকে। কিন্তু এমন ঘটনা ঘটে যাবে, তা আঁচ করতে পারেননি কেউই। প্রৌঢ়ের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া।