উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, মলয় চক্রবর্তী ও বাচ্চু দাস: সরাসরি গোর্খাল্যান্ডের কথা মুখে না আনলেও, লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে পাহাড়বাসীকে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। পাহাড়বাসীর একাংশের দাবি পূরণে কেন্দ্র যে বদ্ধপরিকর তা বুঝিয়ে দিলেন তিনি। বললেন, "আমরা সমস্যা সমাধানের কাছকাছি রয়েছি।" এ নিয়ে পাল্টা সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। তাদের দাবি, গোর্খাদের জন্য কেউ যদি উন্নয়ন ঘটিয়ে থাকেন, তিনি আসলে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। (Narendra Modi)
লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের রাজ্য-রাজনীতিতে ফিরল গোর্খাল্যান্ড প্রসঙ্গ। শিলিগুড়ির সভায় সরাসরি গোর্খাল্যান্ডের কথা মুখে না বললেও,, পাহাড়বাসীর একাংশের এই দাবি পূরণে কেন্দ্র যে বদ্ধপরিকর তা বুঝিয়ে দিলেন মোদি। শনিবার তিনি বলেন, "আমার গোর্খা বাইবোনেদের যা সমস্যা রয়েছে, যে সব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁদের, সব সময় তা নিয়ে সমবেদনাশীল BJP. আমরা সমস্যা সমাধানের কাছাকাছি রয়েছে।" (Lok Sabha Elections 2024)
মোদি আরও বলেন, "উত্তরবঙ্গের মানুষকে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত রাখার পাশাপাশি, সামাজিক বিভাজন তৈরির চেষ্টাও করা হয়েছে। কিন্তু BJP-র জন্য গোর্খা জনজাতি মানুষের উৎসাহ, রাজবংশী মানুষের সাহস এভং আদিবাসী মানুষজনের দৃঢ়তা এবং বাঙালির লেখনী শক্তিই বিকশিল বাংলা থেকে বিকশিত ভারতের চালিকা শক্তি।"
আরও পড়ুন: Abhijit Ganguly: অসম্ভব ভাল ফল করবে BJP, তৃণমূল মুছে যেতে পারে, বললেন অভিজিৎ
এ নিয়ে মোদিকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের শান্তনু সেন। তাঁর কথায়, "গোর্খাদের জন্য প্রকৃত অর্থে যদি কেউ উন্নয়ন ঘটিয়ে থাকেন বা ভবিষ্যতেও উন্নয়নের কাজ এগিয় নিয়ে যান, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাহাড়ের মানুষ জানেন, গোর্খা সম্প্রদায়ের মানুষ জানেন, গত ১২ বছরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাঁদের জন্য কী করেছে। ৩৪ বছর CPM ফিরেও তাকায়নি। লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রত্যেক বার মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছে BJP."
লোকসভা নির্বাচনের আগে গোর্খাল্যান্ড প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে তোলায় সরব হয়েছে CPM-ও। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, " যে অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভার সাংসদ করেছেন, তাঁকে জিজ্ঞেস করুন। উনি প্রকাশ্যে জানিয়েছেন যে, 'আমার সঙ্গে মোদি এবং শাহের কথা হয়েছে, বাংলাকে ভেঙে দেওয়া হবে'। সেটা হবে না বলে নাকি ক'দিন আগে জানানো হয়। দুঃখ করেছেন উনি যে, ভোটের আগে বলেছিল করে দেবে, এখন মনে পড়ছে না!"
আটের দশকে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে উত্তাল হয়েছিল পাহাড়। আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন সুবাস ঘিসিং। বাম জমানার শেষ দিকে ফের পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড়ে আগুন জ্বলে, যার নেতৃত্বে ছিলেন বিমল গুরুং। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর তৈরি হয় গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা GTA. এর পরও পাহাড়ের রাজনীতি আবর্তিত হয়েছে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুকে কেন্দ্র করেই। লোকসভা নির্বাচনের মুখে ফের একবার সামনে এল সেই গোর্খাল্যান্ড প্রসঙ্গ।