সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা : ভোট পরবর্তী হিংসা অব্যাহত জেলায় জেলায়। বৃহস্পতিবারই জেলায় জেলায় ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের নিয়ে রাজভবনে দেখা করতে গিয়ে ফিরতে হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে। সেই নিয়ে তুঙ্গে তরজা। কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতির কড়া প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে পুলিশ। এরই মধ্যে ফের রাজনৈতিক-হিংসা উত্তর ২৪ পরগনায়। এক বিজেপি কর্মীকে বাইক থেকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করল একদল দুষ্কৃতী। শুধু তাই নয়, তাঁকে গলায় দড়ি দিয়ে টেনে নদীতে ফেলে দেওয়ার চেষ্টারও অভিযোগ উঠল।
ভয়াবহ এই ঘটনার পর তৃণমূলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করেছে বিজেপি কর্মী ও তাঁর পরিবার। অভিযোগ, থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। হাড়োয়ার সোনাপুকুর শংকরপুর অঞ্চলের ঝুঝুরগাছা অঞ্চলের এই ঘটনা ঘিরে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। আক্রান্ত বিজেপি কর্মী খলিল মোল্লা চলাফেরা করতে তো পারছেনই না, কাটিয়ে উঠতে পারছেন না আতঙ্কের ঘোর। হাত পা ফুলে গিয়েছে বীভৎস ভাবে।
হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা করিয়ে তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছেন পরিবারের সদস্যরা। খলিল মোল্লার অভিযোগ, তাঁর নামে একটি মামলা দায়ের হয় বসিরহাট আদালতে। গত ১০ তারিখ বসিরহাট আদালত থেকেই তিনি বাড়ি ফিরছিলেন । রাত আটটা নাগাদ হাড়োয়া, অটো স্ট্যান্ডের কাছে আচমকা তাঁকে বাইক থেকে ফেলে তৃণমূলের চার-পাঁচজন দুষ্কৃতী ইট দিয়ে হাতে পায়ে আঘাত করে। থেতলে মারার চেষ্টা হয়। এরপর গলায় দড়ি দিয়ে বিদ্যাধরী নদীতে ফেলে দেওয়ার জন্যও চেষ্টা করেছিল তারা। সেই সময় হাড়োয়া থানার পুলিশ হাজির হলে তারা পালিয়ে যায়। এ বিষয় নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও কোন কাজ হয়নি বলে দাবি বিজেপি কর্মীর। ২০২১ সাল থেকে প্রায় দু বছর তিনি 'বিজেপি করার অপরাধে' বাড়িছাড়া ছিলেন।
আক্রান্ত বিজেপি কর্মীর স্ত্রী সালেমা বিবি জানান, তাঁর স্বামীর অবস্থা খুবই খারাপ। চলাফেরা করতে পারছেন না, হাত-পা কিছুই তুলতে পারছেন না।আতঙ্কে দিনরাত্রি কাটাচ্ছেন নিজেদের গ্রামেই ।
তবে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা বলে দাবি সোনাপুকুর শংকরপুর অঞ্চল সভাপতি আহাদ আলি মোল্লার। তিনি বলেন, খলিল মোল্লা নামে কোনও বিজেপি কর্মী এলাকায় আছেন, সেটাও নাকি জানেন না, মারধর তো দূরের কথা ! উল্টে তিনি বলেন, 'বসিরহাট লোকসভাতে তৃণমূলের যেমন ফল করেছে, তাতে বিজেপির পায়ের তলার মাটি সরে গেছে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে যিনি বিজেপি কর্মী বলে দাবি করছেন , তিনি পারিবারিক বিবাদের জেরে মারামারি করে বাইক থেকে পড়ে গিয়েছেন। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনো যোগ নেই।'
আরও পড়ুন: