আসানসোল: জুতো হাতে অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) বিক্ষোভ। এদিন আসানসোলে (Asansol) বিশেষ আদালতে হাতে জুতো উঁচিয়ে এক ব্যক্তি অনুব্রত মণ্ডলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। বৃহস্পতিবার সকালে গরুপাচারকাণ্ডে বীরভূমের (Birbhum) তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। গ্রেফতারির পর প্রথমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ECL-এর গেস্ট হাউসে। তারপর সেখান থেকে পেশ করা হয় আসানসোলের বিশেষ আদালতে। অনুব্রতকে নিয়ে গাড়ি ঢুকতে বদলে যায় কোর্ট চত্বরের চেহারা। 'গরু চোর' বলে স্লোগান দেয় বাম-বিজেপি। আর সেই সময় জুতো হাতে তুলে বিক্ষোভ দেখানো হয়। যদিও গ্রেফতারির পর থেকে মুখে কুলুপ অনুব্রত মণ্ডলের।
জুতো হাতে বিক্ষোভ: নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গত ২৩ জুলাই গ্রেফতার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি। আর এরপরই পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় কোটি কোটি টাকা, সোনার গয়না। মেলে দলিলও। এই মামলা চলাকালীন একাধিকবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয় পার্থ-অর্পিতার। গত ২ অগাস্ট জোকা ESI হাসপাতালে আসা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে লক্ষ্য করে জুতো ছোড়েন এক মহিলা। দুর্নীতি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, চাকরি দেবে বলে টাকা নিয়েছে, আর নিয়ে উনি ফুর্তি করছে, ফ্ল্যাট কিনছে। আর এদিন অনুব্রত আসানসোল বিশেষ আদালতে নিয়ে আসতেই কার্যত একই ঘটনার নজির দেখা গেল। বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতাকে ঘিরে জুতো দেখিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। একইসঙ্গে জেলায় জেলায় গুড়-বাতাসা-নকুলদানা বিলি করে বিজেপি। আসানসোল কোর্ট চত্বরেও 'গরু চোর' বলে স্লোগান দেয় বাম-বিজেপি।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর তৃণমূলের আরও এক হেভিওয়েট নেতা কেন্দ্রীয় এজেন্সির জালে। গরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডল। গতকাল হাজিরা এড়ানোর পর আজ সকালে আদালতের নির্দেশনামা ও মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে বোলপুরের নীচুপট্টিতে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়িতে পৌঁছে যান সিবিআই অফিসাররা। অনুব্রতর বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন সিবিআই আধিকারিকরা। বাড়ির সকলের মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়।
সিবিআই সূত্রে খবর, এর আগে গতকাল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিত্সক চন্দ্রনাথ অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। আজ ওই চিকিত্সকের বয়ান রেকর্ড করা হতে পারে। সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত প্রভাব খাটিয়ে চিকিত্সককে দিয়ে প্রেসক্রিপশন লেখানোর চেষ্টা করেছিলেন কিনা, তা জানতে চাওয়া হয়। কার নির্দেশে ওই সরকারি চিকিত্সক বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়িতে গিয়েছিলেন, তাও জানতে চায় সিবিআই। খবর সূত্রের। গরুপাচার মামলায় ১০ বার অনুব্রতকে তলব করে সিবিআই। ৯ বার হাজিরা এড়াল তৃণমূল জেলা সভাপতি। অসুস্থতার কথা বলে গতকালও হাজিরা এড়ান অনুব্রত। গরুপাচার মামলায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন।