কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: তখন ট্রেন চলছে। তারই মধ্যে কামরায় হুলুস্থুল। প্রসব যন্ত্রণায় (Labor pain) কাতরাচ্ছেন এক মহিলা যাত্রী। স্ত্রীর ওই অবস্থা দেখে কার্যত দিশেহারা অবস্থা তাঁর স্বামীর। সেই সময়েই সহায় হয়ে এগিয়ে এলেন জিআরপি কর্মী (GRP)-আধিকারিক এবং সিভিক ভলান্টিয়াররা। 'যুদ্ধ' শেষে কোল আলো করল শিশুকন্যা। কীভাবে ঘটল এই ঘটনা? 


শুক্রবার বিকেলে আপ মিথিলা এক্সপ্রেসের ঘটনা। তখন ১৩০২১ আপ মিথিলা এক্সপ্রেস হাওড়া থেকে বিহারের চম্পারণে যাচ্ছিল। ওই ট্রেনের সাধারণ কামরায় উঠেছিলেন বিহারের পূর্ব চম্পারণের সুগৌলির বাসিন্দা গোবিন্দ কুমার ও তাঁর স্ত্রী নিশা কুমারী। প্রথমে সবই ঠিক ছিল। তারপর মিথিলা এক্সপ্রেস ব্যান্ডেল স্টেশন (Bandel Station) পেরনোর পরেই হঠাৎ করে প্রসব যন্ত্রণা ওঠে নিশা কুমারীর। চলন্ত ট্রেনে ওই অবস্থায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না গোবিন্দ কুমার। তারপর তিনিই বিষয়টি জানান কামরায় কর্তব্যরত রেলকর্মীকে (Indian Railway)। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ফোন করেন হাওড়ার কন্ট্রোল রুমে। সেখান থেকে তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করা হয়। ফোন করে গোটা বিষয়টি জানানো হয় বর্ধমান জিআরপিকে। চলে যায় নির্দেশ। তারপরে রেলের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টা ১০ নাগাদ ট্রেনটিকে বর্ধমান জংশন স্টেশনে (Bardhaman junction) দাঁড় করানো হয়। আগে থেকেই বর্ধমান স্টেশনে অপেক্ষায় ছিলেন রেলের চিকিৎসক, সঙ্গে ছিলেন জিআরপি কর্মীরাও। ততক্ষণে কোনওমতে দাঁতে দাঁত চেপে প্রসব যন্ত্রণা সহ্য করছিলেন নিশা কুমারী। নির্ধারিত সময়ে বর্ধমান স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ায় আপ মিথিলা এক্সপ্রেস (Mithila Express)। জিআরপি সূত্রে জানা যাচ্ছে, তখন আরও বেড়ে যায় নিশা কুমারীর প্রসব যন্ত্রণা।


সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রেল প্ল্যাটফর্মেই প্রসব করানো হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী জিআরপি মহিলা কনস্টেবেল ও সিভিক ভলান্টিয়ার প্ল্যাটফর্মের বসার জায়গায় শুয়ে দেন নিশা কুমারীকে। চারিদিকে কাপড় দিয়ে আড়াল করে ঘিরে দেওয়া হয়। তারপরেই চিকিৎসকের সাহায্যে এক ফুটফুটে শিশুকন্যার (Child Birth in Railway Platform) জন্ম দেন নিশা কুমারী। তারপরেই সদ্যোজাত ও তার মাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মা ও শিশু দুই জনেই সুস্থ রয়েছেন।


আরও পড়ুন: পাহাড়ের সঙ্গে 'ব্লাড রিলেশন', উপহার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, কী কী রইল তাতে?