রাণা দাস, পূর্ব বর্ধমান: ইন্দিরা আবাস যোজনা (India Abas Yojana)। আর্থিকভাবে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য সরকারি এই প্রকল্প। কিন্তু সরকারের নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সরকারি প্রকল্পের ঘর ভাড়া দিয়ে প্রতিমাসে মোটা টাকা পাচ্ছেন উপভোক্তারা। কাটোয়ার মঙ্গলকোট চৈতন্যপুর গ্রামের এই ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। উপভোক্তার রয়েছে পাকা দোতলা বাড়ি। কীভাবে দোতলা পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও ইন্দিরা আবার যোজনা প্রকল্পের ঘর পেতে পারেন উপভোক্তা? উঠছে প্রশ্ন।


জানা গিয়েছে, কাটোয়ার মঙ্গলকোটে চৈতন্যপুর গ্রামে ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের ঘর ভাড়া দিয়ে চলছে ব্যবসা। সরকারি প্রকল্পের ঘর ভাড়া দিয়ে প্রতিমাসে মোটা টাকা আয় করছেন উপভোক্তা। এই ঘটনা জানাজানি হতেই মঙ্গলকোট তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির কর্মধক্ষ মুন্সি রেজাউল হক সাফ জানিয়ে দেন যে, বামফ্রন্টের সময় এই তালিকা তৈরি হয়েছিল। তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার কথা বলেন তিনি। সিপিআইএমের পক্ষ থেকে এই প্রসঙ্গে জানান হয়েছে যে, তাদের দলের লোকেদের এই তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছে শাসক দল। বরং, যারা টাকা দিচ্ছে, তাদেরই নাম থাকছে এই তালিকায়। বিজেপিও কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূলকে। তাদের অভিযোগ শুধুমাত্র এক জায়গাতেই নয়, মঙ্গলকোটের বিভিন্ন জায়গায় কাটমানি খেয়ে ইন্দিরা আবাস যোজনার ঘর দেওয়া হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে কাটোয়া মহকুমা শাসক জামেলা ফতেমা জেবা জানান যে তিনি বিষয়টির খোঁজ নেবেন।


আরও পড়ুন - East Burdwan: গলসিতে মাথায় কুড়ুল বিদ্ধ যুবকের দেহ উদ্ধার


জানা গিয়েছে, ২০১৯-২০২০ অর্থবর্ষে মঙ্গলকোট চৈতন্যপুর গ্রামের বাসিন্দা সোমনাথ সাইয়ের নামে ইন্দিরা অবাস যোজনা প্রকল্পের একটি ঘর তালিকাভুক্ত হয়। যদিও তাঁর একটি পাকা দোতলা বাড়ি রয়েছে। ২০২০ সাল থেকে শুরু করে ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষে তাঁর অ্যাকাউন্টে তিন ক্ষেপে মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ঢুকেছে। সেই সঙ্গে নিয়মমতো ঘর তৈরির জন্য ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে মজুরি বাবদ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। জানা গিয়েছে, এই গ্রামেরই বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই প্রকল্পের টাকা দিয়ে একটি দোকান ঘর তৈরি করেন তিনি। পরে ইজাজুল হক নামে এলাকার এক যুবককে তিনি ঘরটি ভাড়া দেন। ওই যুবক সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে নিজেকে মালিকের কর্মচারী বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। অন্য দিকে, সোমনাথ সাইয়ের বাড়িতে গেলেও তাঁর দেখা পাওয়া যায়নি। যদিও তাঁর ছেলে দেবজ্যোতি সাই এই প্রকল্পে ঘর ভাড়া দেওয়ার কথা স্বীকার করে। তাঁর স্ত্রী জানান যে, তাঁরা গরিব মানুষ। দোকান ভাড়া দিয়েই তাঁদের সংসার চালাতে হয়।