কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: মদ কাণ্ডে রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় প্রথম (first) গ্রেফতারি বর্ধমানে (burdwan)। তারা মা হোটেলের মালিক (hotel owner) গণেশ পাসোয়ানকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আজ সকালে নার্সিংহোম (nursing home) থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই তাঁকে গ্রেফতার (arrest) করা হয়। ওই ঘটনার পর অসুস্থ হয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন গণেশ।
কী অভিযোগ পুলিশের?
তারা মা হোটেলের মালিকের বিরুদ্ধে খুন, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক ধারায় মামলা করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ। আজ তাঁকে বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। পুলিশ হেফাজতে নিতে চেয়ে আর্জি জানিয়েছে। সন্ধের মধ্যে এ নিয়ে নির্দেশ দেবে আদালত।
ফিরে দেখা...
শুক্রবার ৪, শনিবার ২, রবিবার ২। বর্ধমানে একের পর এক রহস্যমৃত্যু! মদের বিষক্রিয়াতেই কি প্রাণঘাতী বিপদ?তেমনই অভিযোগ করেছিলেন মৃত ৬ জনের পরিবার! যেমন লালন শেখ। ছেলে বাপন শেখের মৃত্যু নিয়ে লালনের বক্তব্য, 'মদ পান করেই ওরা মারা গেছে।' শুক্র-শনি-রবি মিলিয়ে ৩ দিনে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয়েছে মোট ৮ জনের। এর মধ্যে রবিবার ভোররাতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ এবং শহরের এক নার্সিংহোমে মারা যান মীর মেহবুব ওরফে বাপ্পা এবং বাপন শেখ নামে খাগড়াগড়ের ২ বাসিন্দা মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে বাপ্পা এবং বাপন বর্ধমানের কলেজ মোড়ের একটি হোটেলে বসে মদ্যপান করে। তারপরই অসুস্থ হয়ে এই পরিণতি। মৃতদের আত্মীয় নেহা খাতুন বলেন, 'মা তারা হোটেল থেকে মদ খেয়েছিল। অ্যালকোহলের দ্বারা হয়েছে, অ্যালকোহলেই হয়েছে। অ্যালকোহল ছাড়া কিছু খায়নি।'
মৃতের পরিবারের তরফে এই অভিযোগ করা হলেও, জেলা আবগারি দফতরের দাবি, দু’টি সংস্থায় পরীক্ষা করানোর পরও সংগৃহীত মদের নমুনায় কোনও অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি। জেলা আবগারি দফতরের এনায়েত রাব্বি বলেন, 'মদ খেয়ে মারা গেছে কি না বলতে পারব না, দু’জায়গায় প্রাথমিক রিপোর্টে কোনও অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি, লিকার পয়জন হয়নি, অন্য কী কারণে হয়েছে বলা সম্ভব নয়।' তবে গণেশ পাসোয়ানের বিরুদ্ধে খুন, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক অভিযোগের পাশাপাশি এলাকায় বেআইনি মদ মজুত ও বিক্রির অভিযোগেও মামলা রুজু করেছে আবগারি দফতর।
সূত্রের খবর, পুলিশও গণেশের হোটেল থেকে মদের নমুনা সংগ্রহ করেছে। হোটেলের মেঝে এবং দেওয়াল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে নমুনা। ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য তা পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি খাদ্য সুরক্ষা দফতরেরও সহায়তা নিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকরা। কিন্তু এখনও ধন্দ কাটেনি। পরিবারের লোকজন মৃত্যুর জন্য মদে বিষক্রিয়াকে দায়ী করছে। আবগারি দফতরের দাবি, মদে বিষক্রিয়া হয়নি। তা হলে এতজনের মৃত্যু হল কীভাবে? এই প্রশ্ন উঠছেই। সব দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বোলপুর ট্রাফিক গার্ডের ওসি-র, ট্যুইটারে শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর