রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: নৃশংস ঘটনার পর, কেটে গেছে ৮দিন। এখনও গ্রেফতার হয়নি কেউ। কেতুগ্রামে, ধার শোধ করতে না পারায়, সরকারি কর্মীকে বেঁধে ফেলে দেওয়া হয় রেললাইনে। কাটা পড়ে তাঁর পায়ের পাতা। এবার, হুমকির মুখে পড়লেন, আক্রান্ত সেচ কর্মীর ছেলে। আতঙ্কে ভুগছে গোটা পরিবার।


বাবার পরে 'আক্রান্ত' ছেলেও: ধারের টাকা শোধ দিতে পারেননি বলে, রেললাইনে বেঁধে ফেলে রাখা হয়েছিল। যার জেরে কাটা পড়ে, ডান পায়ের পাতা। কয়েকদিন আগেই পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের এই ঘটনার নৃশংসতা নাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্যবাসীকে। বর্তমানে SSKM মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন ওই ঘটনায় জখম রাজ্য সরকারি কর্মী, ৫৪ বছরের ভৈরব মুখোপাধ্যায়। সেই ঘটনার পর ৮দিন কেটে গেলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।


আর বাবার যখন হাসপাতালের বেডে তখন, এবার তাঁর ছেলেকে ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল। আক্রান্ত সরকারি কর্মীর ছেলে সৌমিক মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রশান্ত সাহা আমাকে হুমকি দেন। বারবার একই কথা বলতে থাকেন, কেন তোমার বাবা নাম নিলেন। নামটা নিতে হত না। উনি আমাকে বলেন কেতুগ্রামে আসতে। উনি আমাকে এটা বলেন, কেতুগ্রামে থানায় এসো। আমি সঙ্গে সঙ্গে কেতুগ্রাম থানার IC সাহেবকে ফোন করি, না, আমরা কেতুগ্রাম থানা থেকে কোনওরকম ডেকে পাঠাইনি।’’


পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সেচ দফতরের কর্মী ভৈরব মুখোপাধ্যায়, বছর খানেক আগে এক সহকর্মী ও কয়েকজনের থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। মাসে ১৮ হাজার টাকার চড়া সুদে মেটাচ্ছিলেন ধার। কিন্তু অভিযোগ, চলতি মাসের ২ তারিখে সুদের টাকা শোধ না করায়, তাঁর উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। গত ২০ তারিখ, কেতুগ্রামের দেশের বাড়ি থেকে কাটোয়ায় নিজের বাড়ি ফিরছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মী ভৈরব। অভিযোগ, কেতুগ্রামে দুই দুষ্কৃতী তাঁকে রাস্তা থেকে মোটরবাইকে তুলে নেয়। এরপর তাঁকে কিছু খাইয়ে বেহুঁশ করিয়ে দেয়। তারপর সন্ধেবেলায় শিবলুন হল্ট স্টেশনের কাছে রেললাইনের ধার থেকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ভৈরব মুখোপাধ্যায়কে।


SSKM সূত্রে খবর, তাঁর ২ বার পায়ের অপারেশন হয়েছে। আরও একবার হওয়ার কথা আছে। আক্রান্ত সরকারি কর্মীর ছেলে জানিয়েছেন, “ আমাদের আর্থিক অবস্থা খুবই ভেঙে পড়েছে। মানসিক দিক থেকে আমরা খুবই দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় হয়ে পড়েছি। আমাদের প্রাণেরও ঝুঁকি আছে। অলরেডি একজন হুমকি দিয়ে ফোন করেছেন। সেহেতু আমরা মনে করছি, বাবার জীবনের ঝুঁকি আছে। আমাদেরও তাই। বাবা যাঁদের নাম নিয়েছেন, তিনি হলেন বিশ্বনাথ বৈরাগ্য ও অর্ভীক সাহা। যাঁর নাম আমি বিশু বলে। কাঁধরাতে। বইয়ের দোকান।’’ কেতুগ্রাম থানার পাশাপাশি, কাটোয়া GRP-তেও হুমকির বিষয়টি জানিয়েছেন আক্রান্তের ছেলে।


আরও পড়ুন: Saigal Hossain: ইডি হেফাজতেই থাকতে হবে সায়গল হোসেনকে, জানাল আদালত