রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতার দাবি তুলে বিস্ফোরক, কালনার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক ও বর্তমান বিজেপি নেতা বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। তাঁর দাবি, সিবিআই তদন্ত হলে দুধ-জল আলাদা হবে। এর আগেও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক।


এসএসসি নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত চলছে। সূত্রের খবর, বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে অনুসন্ধানে নেমেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও। এসব ঘিরে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিভিন্ন বিরোধী ছাত্র সংগঠন। শুক্রবারই বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনের বিক্ষোভে তুলকালাম হয়েছে করুণাময়ী। চাকরির দাবিতে আন্দোলন করছেন চাকরিপ্রার্থীরাও। এমন পরিস্থিতিতে বিস্ফোরক কালনার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক। এদিন কালনায় বিজেপির যুব মোর্চার অবস্থান বিক্ষোভ ছিল। সেখানেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে তাঁর দাবি, 'পশ্চিমবঙ্গ সরকার, তার যে নিয়োগনীতি, অস্বচ্ছতা, সেই অস্বচ্ছতা পরিষ্কার করতে হবে। বেকার ছেলেরা, সুযোগ্য ছেলেরা যাতে চাকরি পায় তার ব্যবস্থা করতে হবে। এই কথা বিগত দিনেও আমি বলেছি যে, CBI তদন্ত হলে দুধ আর জল ভাগ হয়ে যাবে।'


আগেও তোপ:
এই বিশ্বজিৎ কুণ্ডু গত বছরের গোড়ায় ২০১৪-র টেটে দুর্নীতি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর বলেছিলেন স্বজনপোষণের কথা। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বজিৎ কুণ্ডু বলেছিলেন, 'টেট কেলেঙ্কারি হচ্ছে। সারা পশ্চিমবঙ্গে ২০১৪ সালে যে নিয়োগ হয়েছে, সমস্তটাই হচ্ছে তৃণমূলের কর্মীরা বা তৃণমূলের পছন্দের লোকেরা চাকরি পেয়েছে। যদি কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকে, যদি কলঙ্কিত হয়ে থাকে, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই করেছেন। আমার বউ আর বউদি চাকরি পেয়েছে ঠিকই, এছাড়া আমি ৬২ জনকে চাকরি দিয়েছি, তাঁরা সবাই দলের কর্মী।'


তৃণমূলের তোপ: 
এদিনের অভিযোগ নিয়ে বিশ্বজিৎ কুণ্ডুকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে তাঁর প্রাক্তন দল। কালনার বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, 'বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর মুখ দিয়ে দুর্নীতির কথা মানায় না, এক কথায় চালুনি আবার সুচের বিচার করছে, আমরা প্রথম থেকেই বলছি সিবিআই নিরপেক্ষ নয়, বিশ্বজিৎ কুণ্ডু নিজের মুখে স্বীকার করেছে, তবুও তিনি জানেন সিবিআই তদন্ত হলে তিনি জড়াবেন না, নিরপেক্ষ তদন্ত হলে বিশ্বজিৎ কুণ্ডু জেলে থাকবেন।'


মুখ খুলেছে বিজেপিও:
বিজেপি, কাটোয়া সাংগঠিক জেলার সহ-সভাপতি ধনঞ্জয় হালদার বলেন, 'বিশ্বজিৎ কুণ্ডু অপরাধ করে থাকলে তাঁর বিরুদ্ধেও তদন্ত হবে, আমরা চাই তদন্ত হোক, আর ২২২ জন যাঁরা চাকরি পেলেন তাঁদের চাকরি বাতিল করে টাকা ফেরত দিতে হবে।'


আরও পড়ুন: 'গ্ল্যামার নয়, চাকরি নেই, তৈরি হচ্ছে হতাশা' মঞ্জুষার মৃত্যু সম্পর্কে বলছেন সমাজতাত্ত্বিক অভিজিৎ মিত্র