বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: আষাঢ়ের প্রায় শেষ। এই সময় বাঙালির পাতে তার দেখা পাওয়ার সময়। দুপুরে বা রাতের পাতে একাধিক পদ থাকার সময়। কিন্তু এই বছরে যেন কোনও ছবিই মিলছে না। বর্ষা এলেই পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) কোলাঘাটে ভিড় জমান ইলিশ উৎসুকরা। এবারও ভিড় হচ্ছে, কিন্তু ইলিশ মিলছে না। ইলিশের অপেক্ষায় থেকে যেমন মন খারাপ ভোজনরসিকদের। তেমনই প্রবল সমস্যায় মৎস্যজীবীরাও। কিন্তু ইলিশের এমন আকাল কেন? একাধিক কারণ তুলে ধরছেন মৎস্যজীবীরা।


কী কারণ?
মৎস্যজীবীরা জানাচ্ছেন, কোলঘাটের (Kolaghat) রূপনারায়ণের নাব্যতা কমে গিয়েছে। পাশাপাশি, জলে বাড়ছে দূষণ। মূলত এই দুই কারণেই ক্রমশ কমছে ইলিশের সংখ্যা। বর্ষার মরসুমে ইলিশের উপরেই রোজগারের একটা বড় অংশ নির্ভর করে মৎস্যজীবীদের। কিন্তু ইলিশই কমে যাওয়ায় সেই রোজগারেও কোপ পড়েছে। ফলে পেট চালাতে অন্য পেশা বেছে নিতে হচ্ছে তাঁদের। 


হতাশ মৎস্যজীবীরা:
পদ্মার ইলিশ যেমন বিখ্যাত। তেমনই নামডাক রয়েছে কোলাঘাটের ইলিশের (Elish)। রূপনারায়ণের স্রোতে জাল ফেললেই উঠে আসত রূপোলি শস্য। ইলিশ দেখে হাসি ফুটত জেলেদের মুখে। কিন্তু সেসব এখন অতীত। কোলাঘাটের মৎস্যজীবী মানু খাঁড়া বলেন, 'নাব্যতা কমে গিয়ে চরা পড়ে গিয়েছে। তার পাশাপাশি দূষণ রয়েছে। কলকারখানার দূষিত পদার্থ মিশে জল দূষিত হয়ে যাচ্ছে। ইলিশ আসছে না। আর এক মৎস্যজীবী নিত্য বারিক জানান, মাছ এমনিতেই কম উঠছে। ইলিশও কমে গিয়েছে। তার জন্য়ই পেট চালাতে বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় যাচ্ছেন তাঁরা। 


মৎস্যজীবীদের সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মৎস্য দফতর। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা মৎস্য দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (মেরিন) জয়ন্ত প্রধান বলেন, 'রূপনারায়ণের নাব্যতা কমে যাওয়ায় ইলিশের ঘাটতি রয়েছে। এর সঙ্গে জল দূষণও রয়েছে। তবে ভারি বর্ষা হলে ইলিশের খরা কাটতে পারে। পাশাপাশি ড্রেজিং করে নাব্যতা বাড়ানোরও কাজ চালানো হবে।'


তারপরেও কি ফিরবে সুসময়? ফিরবে ইলিশের ঝাঁক? উত্তর দেবে সময়। 


আরও পড়ুন: তৃণমূলের শহিদ বেদিতে বিজেপি-র পতাকা! মেদিনীপুরে জোর তরজা