হংসরাজ সিংহ, পাড়া (পুরুলিয়া) : গেরুয়া শিবিরে রাজনৈতিক রক্তক্ষরণ অব্যাহত। রাজ্যজুড়ে একের পর এক গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হচ্ছে বিজেপির। বিধানসভা ভোটের পর থেকে বিজেপির হয়ে জেতা ৪ বিধায়ক যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। নিচুতলাতেও যেন পাপড়ি খসেই চলেছে গেরুয়া শিবিরের। পুরুলিয়ার পাড়া ব্লকের ভাউরীডি গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির। আর যা নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক টানাপোড়েন। তৃণমূলের দাবি, উন্নয়ন না করাতেই ক্ষমতা হারাতে হচ্ছে বিজেপিকে। বিজেপির অভিযোগ, ভয় আর প্রলোভনের রাজনীতি করছে তৃণমূল। যদিও শাসকদলের পক্ষ থেকে যে অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।


১১ আসনের ভাউরীডি গ্রাম পঞ্চায়েতে সমান সংখ্যক আসন পেয়েছিল তৃণমূল ও বিজেপি। এক নির্দলের সমর্থনে বোর্ড গঠন করে গেরুয়া শিবির। পরে এক বিজেপি সদস্যের মৃত্যু হয়। আরেক বিজেপি সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সংখ্যা কমে হয় ৩। তৃণমূলের ৬ সদস্য অনাস্থা আনতেই তাতে সমর্থন জানান এক নির্দল। ৩-৭ ভোটে হেরে সরতে হয়েছে বিজেপির প্রধানকে। 


পাড়া ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'এলাকার মানুষ সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। উন্নয়নের জন্য আজ তৃণমূলের প্রধান গঠন করা হয়।' আর পুরুলিয়ার বিজেপি সম্পাদক বৃন্দাবন মণ্ডল বলেছেন, 'বিজেপির সদস্যদের ভয় দেখিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান করা হল। এতে বিজেপির কোনও ক্ষতি হবে না।'


এদিকে, এদিনই দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জে গ্রামপঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়েছে বিজেপির। সোমজিয়া গ্রামপঞ্চায়েতে ১৭টি আসন। বিজেপির ৭, তৃণমূলের ৬, নির্দলের ৩ এবং সিপিএমের ১ জন সদস্য রয়েছেন। ৩ নির্দলের সমর্থন নিয়ে বোর্ড গঠন করে বিজেপি।  ৬ তৃণমূল সদস্যের আনা অনাস্থায় সমর্থন জানিয়ে ভোট দিয়েছেন ৩ বিজেপি সদস্য এবং এক সিপিএম সদস্য। তার জেরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে তৃণমূল। সরতে হয়েছে বিজেপি- নির্দল জোটের প্রধানকে। রাজ্য বিজেপি কীভাবে এই ভাঙন সামলায়, এখন সেটাই দেখার।  


আরও পড়ুন-


অনাস্থা ঘিরে ভোটাভুটি, প্রধানের হারের পর তৃণমূলের দখলে গেল পুরুলিয়ার পাড়া ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েত


পদ্মের পাপড়ি খসা জারি, দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ গ্রামপঞ্চায়েত হাতছাড়া গেরুয়া শিবিরের