শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: আগে নিজের গাছ বাঁচান, তারপর ফল খান। গ্রামের রাইটার্স বিল্ডিং একবার হাতছাড়া হলে আর ফেরত পাবেন না। পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) আগে দিদির দূত (didir doot) কর্মসূচিতে গিয়ে দলীয় কর্মীদের এমনই বার্তা দিলেন তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (Rabindranath Ghosh)। তা নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিরোধীরা। 


কী বললেন রবীন্দ্রনাথ?
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সহ-সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, 'আমি চাই আপনারা আমাকে একটু সম্মান দেবেন। আমি আপনাদের ভালবাসি। আপনাদের পিঠের চামড়া যাতে না যায়, যে দলটা আপনাদের নিয়ে একসাথে তৈরি করেছি, সৃষ্টি করেছি আমরা সবাই মিলে, সেই দলটা যেন বেঁচে থাকে। আমাদের জীবদ্দশায় যেন দেখতে না হয় দলটা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।' পঞ্চায়েত ভোটের আগে দিদির দূত কর্মসূচিতে জেলায় জেলায় গিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রীরা। 
সেই দিদির দূত কর্মসূচিতেই কোচবিহার জেলায় দেখা গেল অন্য ধরনের ছবি!!! রবিবার সকালে দিদির দূত হয়ে তুফানগঞ্জ এক নম্বর ব্লকের চিলাখানায় যান কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ও তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। চিলাখানা এক নম্বর অঞ্চল পার্টি অফিসে দলীয় বৈঠকে স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের সতর্ক করেন তিনি। বলেন, 'জীবদ্দশায় যদি দেখি যে দলটা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, এর থেকে কষ্টের আর কিছু হবে না। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এককাট্টা হয়ে লড়াই করে ভোটটা জেতাতে হবে। একবার যদি হাতছাড়া হয় গ্রামের রাইটার্স বিল্ডিং, আর কিন্তু ফেরত পাবেন না।'


পাল্টা বিজেপির...
বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, 'ওপর তলার মাঝারি নেতারাই যা খাওয়ার খেয়ে নিয়েছেন। উনি ক্ষোভ বুঝতে পেরে মলম লাগানোর চেষ্টা করেছেন। কোচবিহারের মানুষ এবার পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করবে। তৃণমূল তোর্সার জলে পড়বে।) স্কুল, পুরসভা থেকে দমকল, একাধিক ক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে সরগরম রাজ্য। আবাস যোজনা ও একশো দিনের কাজেও উঠেছে বেনিয়মের অভিযোগ। এমন একটা আবহে সিপিএমের উদাহরণ টেনে দলীয় কর্মীদের সতর্ক করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি। যদিও সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, 'ভাল কথা বুঝতে পেরেছে। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোট করতে দেয়নি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন গুন্ডা কন্ট্রোল করেন। গুন্ডা দিয়েই পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল। সিপিএমকে সাধারণ মানুষ মারেনি। গুন্ডা দিয়ে ভোট করানো হয়েছিল।) নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে বাম জমানাকে নিশানা করতে গিয়ে শনিবার নিজের প্রয়াত বাবা, ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা কমল গুহকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন তাঁর ছেলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাম জমানার উদাহরণ টেনে দলকে সতর্ক করলেন কোচবিহারের আরেক হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা।


আরও পড়ুন:রাহুল গাঁধীর ইস্যুতে সত্যাগ্রহের ডাক কংগ্রেসের, মোদিকে আক্রমণ প্রিয়ঙ্কার