পার্থপ্রতিম ঘোষ, সন্দীপ সমাদ্দার ও হংসরাজ সিংহ, রাণাঘাট : রানাঘাটে সোনার দোকানে ডাকাতির (Ranaghat Robbery) তদন্তে চাঞ্চল্যকর মোড়। সূত্রের খবর, কয়লা মাফিয়া রাজু ঝার (Raju Jha Murder) খুনিই রানাঘাটের ডাকাত কুন্দনকুমার সিংহ, রানাঘাটে ডাকাতিকাণ্ডে গ্রেফতার কুন্দনের হাতেই খুন হন রাজু ঝা। গত ১ এপ্রিল শক্তিগড়ে গুলি করে খুন করা হয় কয়লা মাফিয়া রাজু ঝাকে। সূত্রের খবর শার্প শ্যুটার কুন্দনের হাতেই খুন হন রাজু ঝা। যে ঘটনার পর রাজুকে খুনের পরই গা ঢাকা দিয়েছিল বিহারের বৈশালীর কুন্দন। কার নির্দেশে খুনের পর ডাকাতি, নেপথ্যের মাথা কে ? তদন্তে নেমেছে পুলিশ (Police)।


প্রসঙ্গত, একই দিনে পিঠোপিঠি সময়ে রানাঘাট ও পুরুলিয়ায় সেনকোর শোরুমে জোড়া ডাকাতি সার্বিক নিরাপত্তা ইস্যুতে যেন সাধারণ মানুষের বিশ্বাসকে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর পৌনে দুটো নাগাদ খাস পুরুলিয়া (Purulia Robbery) শহরে, সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের শোরুমে ডাকাতদল চড়াও হয়। প্রায় সোয়া এক ঘণ্টার মধ্যে একই ঘটনা ঘটে রানাঘাটে। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের চাবিগেট এলাকায় সেনকোর শোরুমে হানা দেয় ডাকাতের দল। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, জোড়া ডাকাতির নেপথ্যে কি রয়েছে একই গ্যাং ?


গত ২৪ মে ব্যারাকপুরের আনন্দপুরীতে সোনার দোকানে ডাকাতি ও খুনের ঘটনায় উঠে এসেছিল বিহার-গ্যাংয়ের হাত। রানাঘাটে সেনকোর শোরুমে ডাকাতির নেপথ্যেও কি সেই বিহার গ্যাং ? পুলিশ সূত্রে খবর, রানাঘাটকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড বিহারের বৈশালীর বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে খবর, এক মাস আগে জব্বলপুরে একটি বাড়িতে প্রায় একই কায়দায় ডাকাতি হয়। সেই গ্যাংই রানাঘাটে লুঠপাট চালিয়েছে কি না , তা খতিয়ে দেখতেই রানাঘাটে আসে মধ্যপ্রদেশ পুলিশের টিম। মাসদেড়েক আগে কল্যাণীর B ব্লকে একটি বাড়িতে দুটি ঘর ভাড়া নেয় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সূত্রে দাবি, বাড়ির মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁরা জানতে পেরেছেন, রেলের অস্থায়ী কর্মী পরিচয় দিয়ে ঘর ভাড়া নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। কখনও ৩ জন, কখনও ৫ জন থাকত সেই ভাড়া বাড়িতে।


বাংলা কি দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে গেল? প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। পুরুলিয়ায় সেনকোর শোরুমে ডাকাতির সময়, সিসি ক্যামেরার হার্ড ডিস্ক ভেঙে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। পাশেই নির্মীয়মাণ প্রকল্পে লাগানো সিসি ক্যামেরায় তাদের চম্পট দেওয়ার ছবি ধরা পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, দুটি মোটরসাইকেলে ৬ জন দুষকৃতী এসেছিল। ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, একটি মোটরসাইকেলে ৩ জন রয়েছে। মাঝের জনের হাতে লাল রঙের ব্যাগ, একদম পিছনের জনের মাথা হেলমেটে ঢাকা। শোরুমের মালিকের দাবি, রেকি করেই ৮ কোটি টাকার গয়না লুঠ করেছে ডাকাতদল।


রানাঘাটে ডাকাতির ঘটনায় মঙ্গলবারই ৫ দুষকৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুরুলিয়ার ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপারের বক্তব্য, ডাকাতির ১৮ মিনিট পরে পুলিশকে ফোন করা হয়েছিল। ওই ১৮ মিনিটের মধ্যে ঝাড়খণ্ড সীমানার দিকে অনেকটাই এগিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। সেনকোর শোরুমে সিসি ক্যামেরার হার্ড ডিস্ক ওপেন জায়গায় রাখা ছিল। ডাকাতির পর দুষকৃতীরা সেই হার্ড ডিস্কও নিয়ে চলে যায়। সেনকোর শোরুমের বিপদঘণ্টিও তিন মাস ধরে খারাপ অবস্থায় পড়ে ছিল। ডাকাতদল ঝাড়খণ্ডে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারে। কয়েকজনকে চিহ্নিত করা গেছে। আশা করি, দুষ্কৃতীরা দ্রুত ধরা পড়বে। 


আরও পড়ুন- কোন কোন পদে কীভাবে নিয়োগ ? পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আরও ১২ পুরসভাকে নোটিস ইডির


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial