করুণাময় সিংহ, মালদা:  রাজ্য জুড়ে নিয়োগ দুর্নীতির তর্জা তুঙ্গে। সম্প্রতি সর্বভারতীয় স্তরে নিটে অনিয়ম, প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ নিয়ে সারা দেশ উত্তাল। এবার রাজ্যে আবারও প্রকাশ্যে এল নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) নজির। মালদার চাঁচোল থানায় জমা পড়েছে অভিযোগ। ফর্ম ফিলাপ না করে, পরীক্ষা না দিয়েই মেধা তালিকায় নাম উঠেছে মালতিপুরের বাসিন্দা গোলাম সারোওয়ার আলম সিদ্দিকীর। এমনকী সেই জন্য সাত লক্ষ টাকার দাবিও করা হয় তাঁর কাছে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই চাঁচোলের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহ-শিক্ষক পরিমল কুন্ডুর সঙ্গে তাঁর বিবাদ চরমে ওঠে। ঘটনা কী ?


ফুড সাব ইন্সপেক্টরের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। অভিযোগকারী যুবক কখনও পরীক্ষাতেই বসেননি, করেননি ফর্ম ফিলাপ। কিন্তু ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মেধা তালিকায় তাঁর নাম। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত এক শিক্ষকের কারসাজিতে এই ধরনের জালিয়াতির ঘটনাতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে মালদার চাঁচোলে। মালতিপুরের বাসিন্দা গোলাম সারোওয়ার আলম সিদ্দিকী চাঁচোল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর দাবি, নদীয়া জেলার ভীমপুরের বাসিন্দা পরিমল কুন্ডু ২০১৭ সাল নাগাদ চাঁচোলের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহ-শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তার সঙ্গে পরিমল কুণ্ডুর পরিচয় হয়। পরিমল তাঁকে প্রলোভন দেন ২০১৮ সালের ফুড সাব ইন্সপেক্টরের পরীক্ষায় তাঁর চাকরি করে দেবেন। পরিবর্তে তাঁকে চাকরি হওয়ার পর সাত লক্ষ টাকা দিতে হবে।


গোলাম সারোয়ার সিদ্দিকীকে পরিমল আরো বলেন যে তিনিও এইভাবে টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন। আরও অনেককেই চাকরি করে দিয়েছেন। প্রমাণস্বরূপ বেশ কিছু ব্যক্তির জয়েনিং লেটারও দেখান। সেই সময় অভিযোগকারী বলেন, তিনি তো পরীক্ষাতেই বসেননি, সেক্ষেত্রে কীভাবে তিনি চাকরি করবেন আর কীভাবেই বা ওয়েবসাইটে তাঁর নাম দেখাবে ?


তারপর জুন মাসের ১৪ তারিখে অভিযোগকারীর চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। পরিমল কুণ্ডুর সহযোগী পরিচয়ে একটি নম্বর থেকে ফোন আসে অভিযোগকারীর কাছে। জানানো হয় ফুড সাব ইন্সপেক্টরের ২০১৮ সালের তালিকায় তাঁর নাম উঠে গেছে। দেওয়া হয় একটি রোল নম্বর। অভিযোগকারী ওয়েবসাইটে যাচাই করে দেখে হতবাক হয়ে যান। পরবর্তীতে পরিমল কুণ্ডু এবং আরো বেশ কয়েকটি নম্বর থেকে আধিকারিকদের পরিচয় দিয়ে বারবার ফোন আসে অভিযোগকারীর কাছে। তাঁর কাছে টাকার দাবি করা হয়। তিনি অবৈধ উপায়ে টাকার বিনিময়ে চাকরি করতে অস্বীকার করলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।


শুক্রবার সমগ্র ঘটনা নিয়ে চাঁচোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন গোলাম সারওয়ার আলম সিদ্দিকী। সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ওই যুবক। গোলাম সারোয়ার আলম সিদ্দিকী এই প্রসঙ্গে বলেন, 'মাঝে ঈদের জন্য আমি অভিযোগ করিনি। আজ স্বেচ্ছায় এসে অভিযোগ করলাম। এই পরিমল কুণ্ডুর সঙ্গে আরো বেশ কয়েকজন রয়েছে। আমি বারবার বলছি আমি এইভাবে চাকরি করতে চাই না। কিন্তু তারা আমার কাছে টাকার দাবি করছে এবং হুমকি দিচ্ছে। আমি কোনওরকম পরীক্ষা দিইনি। এরা এইভাবে অনেক চাকরি করিয়েছে বলে দাবি করেছে। আমি চাই পুলিশের তদন্ত করে এই দুর্নীতির পর্দা ফাঁস করুক। তদন্তের জন্য আমি সমস্ত রকম সহযোগিতা করব।"


আরও পড়ুন: Bangaon News: বনগাঁয় ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবককে গণপ্রহার। ABP Ananda Live


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI