কলকাতা : 'ডিস্কো ডান্স করে কোনও আন্দোলন সফল হয় না, কিছুদিন মানুষকে বিভ্রান্ত করা যায়, এটা কখনও হয় না' এমন মন্তব্য করে জুনিয়র ডাক্তার ও আরজি কর কাণ্ডে প্রতিবাদ করছেন যাঁরা তাঁদের কার্যত হুমকি দিয়েছিলেন তৃণমূলের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। শুধু তিনিই নয়, আর জি কর কাণ্ডের 'বিচারের দাবি' যত প্রকট হয়েছে শাসক দলের বিভিন্ন নেতা নেত্রীরা ততই বেলাগাম হয়েছেন আক্রমণে । 'পয়সা পাচ্ছেন তাঁরা, নিশ্চিত টাকা পাচ্ছেন, খাওয়া পাচ্ছেন, এত লাট সাহেবি কায়দায় মোবাইল টয়লেট আসছে কী করে?' এমন সুরে হুঁশিয়ারি এসেছিল রাজ্যের এক ক্যাবিনেট মন্ত্রীর তরফে। এবার জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূলের বর্ষীয়াণ নেতা সৌগত রায়।
টানা ৪০ দিন ধরে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের বিদ্ধ করে সৌগত রায় বলেছেন, 'এটা চিকিৎসকদের জয় বলে মনে করি না'। এখানেই থামেননি তিনি। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে খাটো করে তিনি বলেন, ' সারা রাত মোমবাতি নিয়ে বসে থাকলে সরকার বদলানো যায় নাকি ! '
আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে, জুনিয়র ডাক্তারদের অভূতপূর্ব আন্দোলন দেখেছে বাংলা। সেই আন্দোলনের কাছেই, সোমবার নতিস্বীকার করতে হয়েছে রাজ্য় সরকারকে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদ থেকে বিনীত গোয়েলকে সরিয়ে সেই জায়গায় মনোজ ভার্মাকে বসিয়েছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। ডিসি নর্থ অভিষেক গুপ্তকে সরিয়ে পাঠিয়েছেন EFR এর সেকেন্ড ব্য়াটেলিয়ানের CO পদে। এরপরেও সৌগত রায় মনে করেন, এটা কোনও বিষয় নয়। সিপি, ডিসি নর্থ, স্বাস্থ্য অধিকর্তা, স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে সরানো নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের আক্রমণ করে সৌগত রায়ের কটাক্ষ , 'ট্রান্সফার নিয়ে নাকি ডিস্কো নাচছিল কি না জানি না। তিন-চারজন অফিসার ট্রান্সফার হয়েছে, তাঁরা তো পারমানেন্ট'। আন্দোলনকারীদের 'নাবালক - নাবালিকা ' বলে কটাক্ষ করে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন 'সবার ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা বোঝা উচিত। দুদিন বৈঠক ভেস্তে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করেছেন, আমাদের গায়ে জ্বালা ধরেছে। জুনিয়র ডাক্তাররা মনে করছে তাঁরা বিপ্লবী হয়ে গেছে, জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে তির্যক মন্তব্য করিনি, করার সুযোগ ছিল'
রাজ্যে শাসক-বিরোধীর রাজনৈতিক আকচাআকচি বাংলা অনেক দেখেছে। কিন্তু , এমন অভূতপূর্ব নাগরিক আন্দোলন এই প্রথম। সৌগত রায়ের মন্তব্য শুনে জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, 'আমরা তো সরকার বদলের দাবি করিনি। সিস্টেম বদলের দাবি করেছি। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইনি। উনিই আগ বাড়িয়ে বলেছেন। আমরা বলেছি এটা একটি ইনস্টিটিউশনাল মার্ডার। কারণ , মৃতার বাবা-মাকে একবার বলা হয়েছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন, একবার বলা হয়েছে তিনি অসুস্থ, জেনারেল ডায়েরিতে লেখা হয়েছিল , তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে।'
আরও পড়ুন :