কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, হিন্দোল দে ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়, কলকাতা: স্কুল-পুরসভার নিয়োগ থেকে গরু-কয়লা পাচার দুর্নীতির তদন্তের আবহে আচমকাই আবার শিরোনামে উঠে এসেছে, একদা রাজ্য়ে সাড়া ফেলে দেওয়া নারদাকাণ্ড। একদিকে নারদকাণ্ডের নেপথ্য়ে থাকা ম্য়াথ্য়ু স্য়ামুয়েলকে ডেকে পাঠিয়েছে সিবিআই। অন্য়দিকে বুধবার, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়ার পর, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের মুখে উঠে এসেছে নারদকাণ্ডের প্রসঙ্গ! 


'শুরু হোক শুভেন্দু অধিকারীকে দিয়ে'


বুধবার ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়ার পর, নারদকাণ্ডে শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেফতারের দাবি তুললেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। বললেন, তৃণমূলের সবাইকে গ্রেফতার করা হোক। শুরু হোক শুভেন্দু অধিকারীকে দিয়ে। বিজেপিতে গেছেন বলে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এজেন্সি ব্য়বস্থা নেয় না বলেও সরব হন তিনি।  আর দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সেই মন্তব্য় নিয়ে এবার মুখ খুললেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। যিনি নিজেও নারদকাণ্ডে অভিযুক্ত!


অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এদিন বলেন, 'যারা নারদায় আছে, সবাইকে তুলুক... আমি বলে দিচ্ছি, এর পর এনডিএ সরকার গিয়ে ‘ইন্ডিয়া’ ক্ষমতায় আসবে। তখন গ্রেফতার হবেন শুভেন্দু।' 


কী বললেন সৌগত ?


সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ' পাঁচ বছর আগে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। সিবিআই এগোয়নি, আমি কি করব? অভিষেক যা ঠিক মনে করেছে, তাই বলেছে! অ্যারেস্ট করবে তখনই, যখন জিজ্ঞাসাবাদ করে আপত্তিকর কিছু পাবে। অ্যারেস্ট তো সঙ্গে সঙ্গে করে না, যেই বলুক না কেন! '


এর মধ্য়ে নারদ স্টিং মামলায় সোমবার ম্য়াথ্য়ু স্য়ামুয়েলকে ডেকে পাঠিয়েছে সিবিআই। যদিও, সিবিআইকে চিঠি দিয়ে ম্য়াথ্য়ু জানিয়ে দিয়েছেন, স্বাস্থ্য়ের কারণে ৬ দিন ট্রেনে যাতায়াত করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। সিবিআই তাঁকে বাড়ির কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইলে, তিনি সহযোগিতা করতে তৈরি। 


আরও পড়ুন :


যে সাইকেলে চড়ে ঘুরত, সে এখন গাড়িতে ঘোরে, কার দিকে ইঙ্গিত অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের


বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে, বিজেপি সাংবাদিক বৈঠক করে সামনে এনেছিল নারদ স্টিং অপারেশনের ফুটেজ! এখানে দেখা গেছিল সেই সময়কার তৃণমূলের হেভিওয়েট সাংসদ, মন্ত্রী, বিধায়কদের! প্রায় এক বছর পর, ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ সিবিআইয়ের হাতে নারদকাণ্ডের তদন্তভার তুলে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এর এক মাস পর, ১৭ এপ্রিল নারদকাণ্ডে এফআইআর দায়ের করে সিবিআই। যেখানে নাম ছিল মোট ১৩ জনের। তাঁর মধ্য়ে ছিলেন মুকুল রায়, 
সৌগত রায়, কাকলি ঘোষদস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার, শোভন চট্টোপাধ্যায়, মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিম, শুভেন্দু অধিকারী, ইকবাল আহমেদ, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সুলতান আহমেদ এবং আইপিএস অফিসার এসএমএইচ মির্জা। বুধবার অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় সেই নারদকাণ্ড নিয়ে মুখ খোলার পরই, স্টিং অপারেশনের নেপথ্য়ে ষড়যন্ত্র আছে বলে দাবি করেছিলেন শুভেন্দু অধিকরী। এদিন কার্যত সেরকম সুরই শোনা গেছে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের গলায়।