শিবাশিস মৌলিক ও সুনীত হালদার, কলকাতা: দিল্লির লালকেল্লার কাছে হাইপ্রোফাইল জোনে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ! তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই পোক্ত হচ্ছে রাজধানীর বুকে সন্ত্রাসের সূত্র। তার মধ্যেই আবার বাজেয়াপ্ত বিস্ফোরক ফেটে কার্যত ভস্মীভূত হয়ে গেছে জম্মু ও কাশ্মীরের নওগাম থানা। এই প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে নিরাপত্তার কড়াকড়ির মধ্যেই হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে শিয়ালদা ও হাওড়া স্টেশন চত্বরে।

Continues below advertisement

আরও পড়ুন, বিহারে NDA ঝড়, নীতীশের প্রশংসায় তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হা ! কটাক্ষ শুভেন্দুর

Continues below advertisement

দফায় দফায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে যাত্রীদের ব্যাগ থেকে স্টেশনমুখী গাড়িগুলিতে। সন্দেহজনক কিছু মনে হলেই চলছে জিজ্ঞাসাবাদও। শিয়ালদার মতোই প্রতিদিন হাওড়া স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করেন অসংথ্য মানুষ। ভিনরাজ্য থেকে এরাজ্যে ঢোকার অন্যতম গেটওয়ে এটি। দিল্লির বিস্ফোরণের পর টালমাটাল পরিস্থিতি হাওড়া স্টেশন চত্বরেও চলছে নাকা তল্লাশি। RPF-এর পাশাপাশি নজরদারি করা হচ্ছে বম্ব স্কোয়াডের তরফেও।রেলমন্ত্রকের তরফে এক নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, আপাতত হাওড়া ও শিয়ালদা ২ স্টেশনে RFF কর্মীদের কাজের সময় বাড়িয়ে ১২ ঘণ্টা করা হয়েছে।পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সব স্টেশনেই সিসি ক্যামেরার নজরদারির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে বলে রেলসূত্রে খবর।

দিল্লির বুকে একটা বিস্ফোরণ কাঁপিয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। কেড়ে নিয়েছে বহু প্রাণ! এরকম বিস্ফোরণ দেশের আরও চারটে শহরে ঘটলে, কী হত ?! ভাবতেই গায়ে কাঁটা দেয়।কারণ, গোয়েন্দা সূত্রকে উদধৃত করে সংবাদসংস্থার তরফে যে দাবি করা হচ্ছে, তা শুনে যে কোনও মানুষের হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাবে! সূত্রের দাবি,জঙ্গিদের প্ল্য়ান ছিল একটা দুটো নয়, ৪টে শহরে বিস্ফোরণ ঘটানো! দিন হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল ৬ ডিসেম্বরকে। কারণ ১৯৯২ সালে এই দিনেই বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়। আর জঙ্গিদের উদ্দেশ্য় ছিল বাবরি ধ্বংসের বদলা নেওয়া। সেই জন্য় তারা টার্গেট করেছিল অযোধ্য়ার রামমন্দিরকেও। দিল্লির ধাঁচে সিরিয়াল ব্লাস্টের জন্য় তৈরি করা হচ্ছিল একাধিক গাড়ি!ফরিদাবাদের ঘটনায় সামনে এসেছে জঙ্গিদের চমকে দেওয়া ডাক্তার-মডিউল। অর্থাৎ প্রাণ বাঁচানো ডাক্তারদের দিয়ে প্রাণ নেওয়ার কাজে লাগানো! এই বিস্ফোরণে মৃত্য়ু হয়েছে চিকিৎসক আল উমর উন নবি-র। আদিল আহমেদ রাথের এবং মুজাম্মিল আহমেদ নামে আরও দুই ডাক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সূত্রের দাবি, গোয়েন্দা সূত্রকে উদধৃত করে সংবাদসংস্থার দাবি, জঙ্গিরা যে প্ল্য়ান করেছিল, তার উদ্দেশ্য় ছিল একসঙ্গে একাধিক বার্তা দেওয়া। অপারেশন সিঁদুরের বদলা। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বদলা। রিক্রুটমেন্ট সেলকে চাঙ্গা করা এবং তরুণদের নিজেদের দিকে আকৃষ্ট করা। এবং একেবারে দিল্লির বুকে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এই বার্তা দেওয়া, ইচ্ছা হলে তারা ভারতে যে কোনও প্রান্তে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।

গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, ৪ শহরে বিস্ফোরণের জন্য় ৮ জনের দল তৈরি করা হয়েছিল। পরিকল্পনা ছিল, IED নিয়ে প্রতিটা শহরে পৌঁছে যাবে ২ জন করে। গোয়েন্দা সূত্রকে উদধৃত করে সংবাদসংস্থার আরও দাবি, জঙ্গিরা প্রথমে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা করেছিল ১৫ অগাস্ট। কিন্তু, কোনও কারণে সেই দিন পাল্টে করা হয় ৬ ডিসেম্বর।তা-ও সম্ভব না হলে জঙ্গিরা ২৬ জানুয়ারি বিস্ফোরণ ঘটানোর ছকও কষে রেখেছিল।ফরিদাবাদে বিস্ফোরক উদ্ধার এবং দিল্লির বিস্ফোরণের পর একে একে সামনে এসেছে জঙ্গিদের এই মারাত্মক পরিকল্পনা। কিন্ত প্রশ্ন হল এই সন্ত্রাসবাদী মডিউলের শাখা প্রশাখা আরও বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে নেই তো?