মলয় চক্রবর্তী ও সনৎ ঝা, শিলিগুড়ি (দার্জিলিং) : হোয়াইট বোর্ডে (White Board) অঙ্কের (Mathematics) আঁকিবুকি। পাশে একট্টা ছোট্ট স্মাইলি (Smily)। আর তার পাশে লেখা 'মা আই কুইট' (I Quit)। শিলিগুড়ির (Siliguri) মেধাবী এক ছাত্রের আত্মহত্যায় (Suicide) শোকস্তব্ধ ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের জ্যোতিনগর এলাকা। শিলিগুড়ি উচ্চতর বালক বিদ্যালয়ের ছাত্র সোমনাথ সাহা (১৮)-র আত্মহত্যা যেন মনে করিয়ে দেয় প্রখ্যাত হিন্দি সিনেমা 'ত্রি ইডিয়েটস'-এর সেই হৃদয় বিদারক দৃশ্য। যেখানে অত্যন্ত প্রতিভাবান এক ছাত্র পড়াশোনার চাপে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। আর বোর্ডে লিখে গিয়েছিল 'আই কুইট'। শিলিগুড়ির পড়ুয়াও অবশ্য ঠিক কোন কারণে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে, তা নিয়ে রয়েছে প্রবল ধোঁয়াশা। দুপুরের খাওয়া-দাওয়া সেরে নিজের ঘরের পড়াশোনা করছিল সে। বিকেলে সোমনাথের ঠাকুমা ঘরে ঢুকে দেখেন ফ্যান থেকে ঝুলছে সোমনাথ।


স্থানীয় সূত্র ও সোমনাথের স্কুল মারফত জানা গিয়েছে, পড়াশোনায় যথেষ্ট মেধাবী ছিল সে। এবারে উচ্চ মাধ্যমিকে বসতে চলা সোমনাথ মাধ্যমিকে ৯৩ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছিল। একাদশ শ্রেণিতে সে পেয়েছিল প্রায় ৮৫ শতাংশ নম্বর। পড়াশোনার জন্য ছেলেকে কোনওদিন তারা চাপ দেননি বলেই জানিয়েছেন সোমনাথের বাবা সুবীর সাহা। পেশায় ওষুধের দোকানের কর্মী শোক সামলাতে সামলাতে জানিয়েছেন, ছেলে পড়াশোনায় বরাবরই ভাল ছিল। ওকে কিছু বলার প্রয়োজন পড়ত না। নিজের মতোই পড়াশোনার ব্যাপারে যথেষ্ট সিরিয়াস ছিল সে। পড়াশোনার পাশাপাশি বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলোও করত। স্কুল পড়ুয়ার এভাবে আত্মহত্যা প্রসঙ্গে মনোবিদ চিকিৎসক নির্মল বেরা জানিয়েছেন, সম্ভবত কোনও অবসাদ বা হতাশা থেকেই আত্মহনন। পাশাপাশি তিনি জানান, এই মুহূর্তে সারা বিশ্বে যত আত্মহত্যা হচ্ছে, তার পাঁচ ভাগের একভাগই ভারতে।


মাঝে স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়িতে থেকে নিজের মতোই পড়াশোনা-খেলা নিয়ে সোমনাথ ব্যস্ত থাকত বলেই জানিয়েছেন স্থানীয়রাও। তাদের পাশাপাশি শিলিগুড়ি উচ্চতর বালক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও তাদের প্রিয় ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনায় হতবাক। ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার। আপাতত ঠিক কী কারণে এই আত্মহত্যা, সেই নিয়েই খোঁজ চলছে। 


আরও পড়ুন- ঘরজামাই হতে অস্বীকার, শ্বশুরের প্রাণনাশের হুমকি থেকে বাঁচতে আত্মহত্যা, দাবি পরিবারের