গৌতম মন্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বড়দিনে যখন গোটা রাজ্যে উৎসবের আবহ, ঠিক তখন বাঘের আতঙ্কে কাঁটা প্রাথরপ্রতিমার এই এলাকার বাসিন্দারা। রাতভর বাঘের আতঙ্কে রাতপাহারা দিল পাথরপ্রতিমার শ্রীধরনগর পঞ্চায়েতের উপেন্দ্রনগর গ্রামের বাসিন্দারা।
সকালে ঠাকুরাইন নদীর চরে মিলল বাঘের পায়ের ছাপ। বড়দিনের সকালেও আতঙ্কে কাঁটা হয়ে আছেন বাসিন্দারা। জানা গিয়েছে, ধান কাটার কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাঘের ভয়ে। রাতে মশাল ও টায়ার জ্বেলে চলে পাহারা। বনকর্মী ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এলাকায়। ধনচির জঙ্গল এলাকায় নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। আজ বেলায় বনদপ্তরের পক্ষ থেকে বাঘ ধরার জন্য খাঁচা পাতা হবে।
সম্প্রতি সুন্দরবনের লোকালয়ে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। দেখা মিলেছিল বাঘের পায়ের ছাপ। কিছুদিন আগে কুলতলির লোকালয়েও ছড়িয়েছিল বাঘের আতঙ্ক। কুলতলি বিধানসভার অন্তর্গত মৈপিঠ কোস্টল থানার ভুবনেশ্বরী গৌড়ের চক এলাকায় জন্তুর পায়ের ছাপ ঘিরে এলাকায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। গ্রাম সংলগ্ন নদীর চরে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পাওয়া গিয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন গ্রামবাসী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন পুলিশ ও বন দফতরের কর্মীরা।
বন দফতরের কর্মীরা ওই এলাকায় পৌঁছে পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সব কিছু খতিয়ে দেখা শুরু করেছিলেন। সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে নদী পেরিয়ে সত্যিই কি বাঘ লোকালয়ে সংলগ্ন জঙ্গলে এসেছিল ? সত্যিই কি সেগুলি বাঘের পায়ের ছাপ, না অন্য কোন বন্য পশুর পায়ের ছাপ তা খতিয়ে দেখেছিলেন বন দফতরের আধিকারিকরা ।
শীতের শুরুতেই সুন্দরবনের লোকালয়ে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। দেখা মিলেছিল বাঘের পায়ের ছাপের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুর উপকূল থানার এল-প্লট শ্রীধরনগর এলাকায় ঠাকুরাইন নদীর পাড়ে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নিমেষেই বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা এলাকায়। খবর দেওয়া হয়েছিল বনদফতর ও পুলিশকে। পাশাপাশি জঙ্গল ও নদী তীরবর্তী লোকালয় নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছিল। যাতে বাঘ কোনওভাবেই লোকালয়ে ঢুকতে না পারে।
আরও পড়ুন, শুঁড় দিয়ে ধুলো ওড়াচ্ছে হাতি, খোশমেজাজে বাঘ, বড়দিনে উপচে পড়া ভিড় চিড়িয়াখানায়
কিন্তু এ তো গেল লোকালয়ের বাঘের আতঙ্ক। তবে এই জেলারই কিছু মানুষেকেই প্রাণ হাতে করে মাছ ধরতে যেতে হয়। প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছরে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলেছে সুন্দরবনে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন মৎসজীবীরা। কখনও লুকিয়ে বন দফতরের নিষেধ অমান্য করে গভীর জঙ্গলে পেটের জ্বালায়, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে, দুটো পয়সা রোজগারের আশায় পাড়ি দেয় মৎসজীবীদের দল। আর তাতেই নিমেষে সব শেষ ।