কলকাতা: শোকজ করা হয়েছে আগেই। নিরাপত্তাও কমেছে। এ বার দলনেত্রীর কাছে তিরস্কৃত হলেন তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্রেতা-সুরক্ষা প্রতিমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো (Srikanta Mahata)। তৃণমূল (TMC) সূত্রে খবর, জুন মালিয়া, নুসরত জাহানদের নিয়ে মন্তব্য করায় শ্রীকান্তকে ভর্ৎসনা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শ্রীকান্তকে ক্ষমা চাইতে বললেন তিনি (Mamata Banerjee)।
ভাইরাল ভিডিওর জের, মমতার কাছে তিরস্কৃত শ্রীকান্ত
তৃণমূল সূত্রে খবর, মন্ত্রিসভার বৈঠকে শ্রীকান্তকে ভর্ৎসনা করেন মমতা। বলেন, "দলের কারও বিরুদ্ধে এভাবে প্রকাশ্যে মন্তব্য করা ঠিক নয়। জুনের কাছে ক্ষমা চাও, এমনভাবে যেন জুন আমাকে জানায়।" (June Malia)
সম্প্রতি মন্ত্রিসভার রদবদলে শ্রীকান্তর হাত থেকে ক্ষুদ্র-ছোট এবং মাঝারি শিল্প থেকে সরিয়ে, ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার পরই তাঁর একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তাতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শোনা যায় শ্রীকান্তকে। তিনি বলেন, ", "দলকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী তাঁরা বুঝতে চায় না। খারাপ লোককে তাঁরা ভাল বলছে। তাহলে আমরা বাঁচব কী করে? খারাপ লোককে খারাপ বলতে হবে। ভাল লোককে ভাল বলতে হবে।"
সেখানেই না থেমে দলের তারকা নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন শ্রীকান্ত। তিনি বলেন, "খারাপ লোকের কথা শোনা চলবে না, ভাল লোকের কথা শুনতে হবে। খারাপ লোকের কথা শুনছে। এখানে যদি দেবাদিদেব মহাদেব, উমা সোরেন, সন্ধ্যা রায়, মুনমুন সেন, জুন মালিয়া, সায়নী, সায়ন্তিকা, মিমি, ঝিমি, নুসরত, মুসরত, উত্তরা সিংহ, নেপাল সিংহ, সন্দীপ সিংহ যারা লুটেপুটে খাচ্ছে, তারা পার্টির সম্পদ হয়। তাহলে আর পার্টি করা যাবে না। তাহলে মন্ত্রীর তো জেলে গেলেই ভাল হয়। ওই ক্যাবিনেটের মন্ত্রীরা সবাই চোর বলছে তো। এই চোরদের কথা শুনছে পার্টি। চোর ডাকাতের কথা শুনছে পার্টি।"
এর পরই দলের তরফে শোকজ করা হয় শ্রীকান্তকে। ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী রেখে দিয়ে তাঁর বাকি সমস্ত নিরাপত্তা এবং এসকর্ট গাড়ি তুলে নেওয়া হয়েছে বলে সামনে আসে মঙ্গলবার। তার পর মমতাও তাঁকে তিরস্কার করলেন বলে খবর। ভিডিও বিতর্কের পর শ্রীকান্তও সাবধানী হচ্ছেন। নিজের শালবনির বাড়িতে বাইরের লোকজনের ফোন নিয়ে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন তিনি। তবে মমতার কাছে তিরস্কৃত হওয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে কিছু বলতে চাননি তিনি। দলের কাজে ব্যস্ত আছেন বলে জানিয়েছেন।
শ্রীকান্তর পর দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরিও
তবে শ্রীকান্তর পর পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের তৃণমূল কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরিও নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন। পিংলার তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। শ্রীকান্তকে সমর্থন করে তিনি বলেন, "আমাদের সঙ্গে নয়, চোর ডাকাতদের সঙ্গে দেখা করছেন দিদি। টাকা দিতে পারিনি বলেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে আইএনটিটিইউসি থেকে। অভিষেক জানে না, টাকা তুলছে আইপ্যাক। ভুল জায়গায় রাজনীতি করা হয়ে গিয়েছে। পার্টি ছেড়ে দেব। ২দিন অপেক্ষায় আছি। দল ছেড়ে দেব।"