প্রকাশ সিনহা, সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও ঊজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়: নিয়োগ দুর্নীতিতে কোটি কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য় উঠে আসছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (Enforcement Directorate) তদন্তে। কিন্তু এই টাকা শেষমেশ পৌঁছেছিল কার কাছে? ইডির অনুমান, তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ (Kuntal Fhosh)। প্রকৃত দোষীদের থেকে নজর ঘোরাতে কি রোজ নতুন নতুন নাম আনছেন কুন্তল, উঠছে প্রশ্ন।
শেষমেশ টাকা পৌঁছেছিল কার কাছে!
ইডি-র একটি সূত্র জানাচ্ছে, গোপাল দলপতির কাছে কোটি কোটি টাকা যেত (Gopal Dalapati)। তার পর OSD মারফত সেই টাকা পৌঁছে যেত পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের কাছে। শুক্রবার জেরার মুখে যুব তৃণমূলের রাজ্য় সম্পাদক কুন্তল নাকি এমনই দাবি করেছেন, বলছে ইডি-র একটি সূত্র।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে গোপালের নাম উঠে এসেছে কুন্তলের মুখে। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "অনেক টাকা নিয়েছে ওরা। জোর করে...।" ইডি সূত্রে দাবি, সম্প্রতি জেরার মুখে বারবার দুই জনের নাম প্রকাশ করেছেন কুন্তল, পার্থ এবং গোপাল।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, যে দু'জনের নাম কৌশলে বা রবার টাকা লেনদেনে তুলে ধরতে চাইছেন ধৃত যুব তৃণমূলের রাজ্য় সম্পাদক, তাঁরা দু'জনেই কিন্তু অনেক আগে থেকে জেলবন্দি। বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন পার্থ। চিটফান্ড মামলায় ২০২১ সাল থেকে দিল্লির তিহাড় জেলে রয়েছেন গোপাল। কুন্তলের দাবির প্রেক্ষিতে আপাতত মুখ খোলার কোনও সুযোগ নেই তাঁদের।
আরও পড়ুন: Presidency University: গুজরাত-তথ্যচিত্র প্রদর্শনকে ঘিরে ঝামেলা প্রেসিডেন্সিতেও, বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে
তাহলে কি অত্য়ন্ত কৌশলে তদন্তের নজর ঘোরাতেই বারবার এই দুই জেলবন্দির নাম টেনে আনছেন যুব তৃণমূল নেতা? সূত্রের খবর, ইডির অনুমান, বার বার শুধু এই দু'টি নাম 'টেনে এনে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন কুন্তল। ইচ্ছাকৃত ভাবে এমন দু'জনকে বেছে নিয়েছেন, যাঁরা এখন জেলে।
প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি বিশেষ কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন ধৃত যুব তৃণমূলের রাজ্য় সম্পাদক? সেই জন্য়ই কি ইতিমধ্য়েই কালিমালিপ্ত পার্থ এবং গোপালের গায়ে আরও কালি ছেটানোর কৌশল? অথচ ইডি সূত্রে দাবি, আশ্চর্যজনক ভাবে হুগলির যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্য়পাধ্যায়কে নিয়ে সম্পূর্ণ নীরব কুন্তল ঘোষ। শান্তনু কত টাকা নিয়েছে জানতে চাইলে জানান, তিনি ঠিক বলতে পারবেন না।
ইডি সূত্রে দাবি, শান্তনুর বলাগড়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি ৩০০ জন চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা পাওয়া গিয়েছে। যে লিস্টে চাকরিপ্রার্থীদের নাম, রোল নম্বর, অ্য়াডমিটকার্ডের নম্বর সমস্ত বিশদে লেখা। শুধু নিজের জেলাই নয়, হুগলির যুব তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে পাওয়া তালিকায় নাম রয়েছে কলকাতা, বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব মেদিনীপুর সহ একাধিক জেলার চাকরিপ্রার্থীদের।
জেনেবুঝেই শান্তনুর প্রসঙ্গে আড়াল করতে চাইছেন কুন্তল!
ইডি-র প্রশ্ন তাহলে কি জেনেবুঝেই শান্তনুর প্রসঙ্গে আড়াল করতে চাইছেন কুন্তল? যুব তৃণমূল নেতা শান্তনুর বিলাসবহুল রেস্তোরাঁর উৎসই বা কী? কুন্তল কি কোথাও বড় কোনও মাথাকে আড়ালের চেষ্টা করছেন ? উঠছে একাধিক প্রশ্ন। ইডি সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তিহাড়ে গিয়ে গোপাল দলপতিকে জিজ্ঞাসাবাদেের ব্য়াপারে ভাবনা চিন্তা করছেন তাঁরা।