কলকাতা: 'জীবনকৃষ্ণ অ্যান্ড কোম্পানি'র বিরুদ্ধে এবার আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে নিয়ে এল ইডি। শুধুমাত্র অযোগ্যদের থেকে নয়, যোগ্যদের থেকেও জীবনকৃষ্ণ টাকা তুলেছিলেন বলে দাবি করা হল আদালতে জমা দেওয়া ইডির বয়ানের কপিতে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় CBI-এর পর ED-র হাতে শুধু গ্রেফতার হওয়াই নয়। একই কায়দায় মোবাইল ফোন লোপাটের চেষ্টা করেও শেষরক্ষা হয়নি বড়ঞাঁর তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃ্ষ্ণ সাহার।
বৃহস্পতিবারও তাঁর জামিন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। এবার তাঁকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। আদালতে ED-র তরফে সাক্ষীদের বয়ানের কপি জমা করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, শুধু অযোগ্য প্রার্থীদের থেকে নয়, যোগ্য প্রার্থীদের থেকেও মোটা টাকা তুলেছিল 'জীবনকৃষ্ণ অ্যান্ড কোম্পানি'। যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের থেকে সাড়ে ১৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দাবি করেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক! একাধিক যোগ্য প্রার্থীর বয়ান থেকে এমনটাই উঠে এসেছে বলে ইডির দাবি। ইডির দাবি...বয়ানে এক মহিলা বলেছেন। তাঁর কাছ থেকে চাকরির জন্য ৯ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। ৫০ লক্ষ টাকা অগ্রিম নিয়েছিলেন। কিন্তু পরীক্ষা দিয়ে নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়ে যান তিনি। এরপর জীবনকৃষ্ণ সাহাকে দেওয়া অগ্রিম টাকা ফেরত চাইতে গেলে হুমকির মুখে পড়তে হয় তাঁকে। বলা হয়, পুরো টাকা না দিলে চাকরি চলে যাবে।
এমনকী, অভিযোগ, ওই চাকরিপ্রার্থীর বাবার কাছ থেকে তাঁর অ্যাডমিট কার্ডও নিয়ে রেখে দেন তৃণমূল বিধায়ক। এই মহিলার মতোই আদালতে জমা দেওয়া ইডির কপিতে আরও অনেকের বয়ান উল্লেখ করা হয়েছে। সেই বয়ান অনুযায়ী এক যোগ্য চাকরিপ্রার্থী মহিলা দাবি করেছেন, চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁর কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। এই চাকরিপ্রার্থীও ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়েছিলেন। কিন্তু নিজের যোগ্যতাতেই চাকরি হয়ে যায় তাঁর। এরপর টাকা ফেরত চাইতে গেলে নিয়োগ বাতিল করে দেওয়ার হুমকি দেন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা।
আদালতে জমা দেওয়া ED-র বয়ানের কপি অনুযায়ী, আরও এক যোগ্য চাকরিপ্রার্থীর থেকে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। কিন্তু কোনও টাকা তিনি দেননি। অন্যদিকে আরেক চাকরিপ্রার্থীর দাবি, তাঁর কাছ থেকে সাড়ে ১৬ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন তৃণমূল জীবনকৃষ্ণ সাহা। তিনি চাকরিও পাননি, টাকাও দেননি। ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত ED হেফাজতে রয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা।