কলকাতা: জোকা ইএসআই-তে (ESI) দেড়ঘণ্টার বেশি সময় ধরে স্বাস্থ্যপরীক্ষা সুজয়কৃষ্ণর। স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর সুজয়কৃষ্ণ বেরোতেই চোর চোর স্লোগান। সুজয়কৃষ্ণকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ব্যাঙ্কশাল আদালতে (Court)।
'নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তৃণমূল নেতার ফোনে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই গ্রেফতার সুজয়কৃষ্ণ। নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত এক তৃণমূল নেতার মোবাইলেই মিলেছে তথ্য। কালীঘাটের কাকুর'-নিজের মোবাইলের তথ্য যথেষ্ট ছিল না। ধৃত তৃণমূল নেতার ফোনের তথ্য দেখিয়েই গতকাল ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ। মোবাইলের তথ্য দেখানোর পরেও তথ্য গোপন করছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। সুজয়কৃষ্ণের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল বলে স্বীকার করেছেন ধৃত নেতা' দরকারে কেস ডায়রিতে সেকথা উল্লেখ করা হবে বলেও দাবি ইডি-র। 'এবার নজর সুজয়কৃষ্ণের বেনামি সম্পত্তিতে। নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা লেনদেনে জড়িত সুজয়কৃষ্ণ', খবর ইডি সূত্রে। ৩টি সংস্থার মাধ্যমে কোটি কোটি কালো টাকা সাদা করা হত, সন্দেহ ইডি-র।
প্রায় ১২ ঘণ্টা জেরার পর গ্রেফতার করা হয়েছে 'কালীঘাটের কাকু' সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে (SujanKrishna Bhadra)। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ট্যুইট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোশাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, 'শেষ পর্যন্ত আইনের লম্বা হাত মাস্টারমাইন্ড পর্যন্ত পৌঁছল। কেউ রেহাই পাবে না, মাথারাও জেলে যাবে, সময় হয়ে গেছে।' আর এবার শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের।
জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, 'শুভেন্দু অধিকারী, অমিত শাহ-র হৃদয়ের কাছে পৌঁছে গিয়ে হাত জোড় করে, নিজের যাতে ইডি-সিবিআই যাতে না হয়, নিজের রক্ষাকবচটা জোগাড় করেছিলেন। সেখানে আমি নিজে উপস্থিত ছিলাম। সেটা একবার মনে করিয়ে দিলাম অধিকারীকে।' উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam Case) মঙ্গলবার প্রায় মাঝরাতে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি (Enforcement Directorate)। তথ্য গোপন, তদন্তে অসহযোগিতা করায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি ইডি সূত্রে।
'কালীঘাটের কাকু' নামে যাঁর পরিচিতি তিনি নিজেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) সংস্থার কর্মরত এক কর্মী হিসেবে নিজেকে বর্ণণা করেছিলেন। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া তাপস মণ্ডলের মুখে প্রথমবার শোনা গিয়েছিল কালীঘাটের কাকু তথা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নাম। পরে কুন্তল ঘোষের মুখেও শোনা গিয়েছিল তাঁর নাম। চলতি মাসের ২০ মে যখন সিবিআইয়ের ডাকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেদিনও কালীঘাটের কাকু তথা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের বেহালার বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। চলেছিল ম্যারাথন তল্লাশি। জিজ্ঞাসাবাদ। চলতি বছরের শুরুতেই অবশ্য কালীঘাটের কাকু দাবি করেছিলেন, তাঁর সাহেবকে কেউ ছুঁতে পারবে না। বড়জোড় তাঁর কাছে এসেই সব থেমে যাবে।
আরও পড়ুন, গরমে কোন সরবতগুলি না খেলেই নয় ? কোনগুলি খুবই স্বাস্থ্যকর ?
আরও পড়ুন, জানেন কি রান্নাঘরের এই মশলা জীবন বদলে দিতে পারে ?
গত ২২ ফেব্রুয়ারি এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে কালীঘাটের কাকু তথা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র বলেছিলেন, 'আমার যে সাহেব, পৃথিবীর কারোর ক্ষমতা নেই তাঁকে ছোঁবে। কারণ, তাঁর নাম কেউ করতে পারবে না। তাঁর সঙ্গে কেউ দেখা করতে পারবে না। তাঁর সঙ্গে কেউ ফোনে কথা বলতে পারবে না। তাই যা চেষ্টা হচ্ছে, সেটা আমার পর্যন্ত এসে থেমে যেতে হবে।' যার পরই তাপস মণ্ডল বর্ণিত কালীঘাটের কাকু জুড়েছিলেন, 'আমার সাহেব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ওঁর অফিসে চাকরি করি। ২০০৯ সাল থেকে।' প্রসঙ্গত, যে প্রসঙ্গে কালীঘাটের কাকুকে চেনেন কি না জানতে চাইলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছিলেন, 'আমি চিনতাম, কিন্তু কীভাবে চিনি, সেটা আপনাদের বলব না।'