গৌতম মণ্ডল, সুন্দরবন: কাঁকড়া ধরতে গিয়েসুন্দরবনে ফের আক্রান্ত মৎস্যজীবী। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে হামলা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। মৎস্যজীবীর মাথায় এলোপাথাড়ি থাবা বসাতে থাকে ডোরাকাটাটি। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন ওই মৎস্যজীবী। কিন্তু বাঘের সঙ্গে লড়াই করে ফিরেছেন বটে, কিন্তু রাতে শুক্রবার রাতে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় ওই মৎস্যজীবীকে। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
বৃহস্পতিবার সুন্দরবনের বিজুয়াড়া জঙ্গলে বাঘের মুখে পড়েন ওই মৎস্যজীবী। তিনি পাথরপ্রতিমার জি-প্লট গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সত্যদাসপুরের বাসিন্দা। ৫১ বছরের ওই ব্যক্তির নাম দিলু মল্লিক। শুক্রবার দুপুরে বিজুয়াড়া জঙ্গলে প্রবেশ করেন দিলু। কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ই অতর্কিতে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে একটি রয়্যাল বেঙ্গল। এলোপাথাড়ি দিলুর মাথায় থাবা বসাতে থাকে।
ডোরাকাটার হামলার সময় অদূরেই ছিলেন দিলুর স্ত্রী নমিতা মল্লিক এবং মেয়ে। তাদের সঙ্গে ছিলেন এক পড়শিও। সকলে মিলেই কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন দিলু। বাঘের সঙ্গে দিলুকে লড়াই করতে দেখে আঁতকে ওঠেন তাঁরা। তড়িঘড়ে বেঁধে রাখা নৌকা থেকে লাঠি, শাবল নিয়ে ছুটে আসেন। তা হাতে নিয়ে বাঘটিকে পাল্টা আক্রমণ করেন তাঁরা। তাতেই ভয় পেয়ে পিছিয়ে যায় ওই রয়্যাল বেঙ্গল। দিলুকে ছেড়ে জঙ্গল থেকে যেমন বেরিয়ে এসেছিল, তেমনই পালিয়ে যায়।
এর পর স্ত্রী এবং মেয়ে মিলেই জখম দিলুকে নৌকায় তোলেন। সন্ধেয় তাঁকে পাথরপ্রতিমা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা হয় তাঁর। তবে বাঘের সঙ্গে লড়াই করে ফেরা, দিলু শারীরিক অবস্থা ভাল ছিল না। শুক্রবার রাতে তাঁরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তাতে পাথরপ্রতিমা ব্লক হাসপাতালে থেকে কাকদ্বীপ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে।
কাঁকড়া ধরতে গিয়ে সুন্দরবনে বাঘের মুখে পড়ার ঘটনা যদিও এই প্রথম নয়। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসেও একই ঘটনা সামনে আসে। সেবার তিনজনের একটি দল কাঁকড়া ধরতে গেলে, অতর্কিতে হামলা চালায় এক ডোরাকাটা। তাতে এক ব্যক্তি গুরুতর জখম হন। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি সেবার। মারা যান ওই ব্যক্তি। এবারও ফের বাগের মুখে পড়লেন এক ব্যক্তি। তবে স্ত্রী-কন্যা না থাকলে আদৌ তাঁকে উদ্ধার করা যেত কিনা, সংশয়ে গ্রামবাসীর।