কলকাতা: বাংলার মাটিতে বিজেপির রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি কী হবে- তা নিয়ে উঠল প্রশ্নচিহ্ন। আর তার সঙ্গেই প্রকাশ্যে চলে এল শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) এবং বঙ্গ বিজেপির মতের বড়সড় অমিলের ছবি। বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে শুভেন্দুর বিস্ফোরক বক্তব্য়ের পরেই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দলের অবস্থান স্পষ্ট করতে দেখা গেল রাজ্যসভার সাংসদ এবং রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকে (Samik Bhattacharya)। দূরত্ব তৈরি করলেন শুভেন্দুর বক্তব্যের সঙ্গেও। 


সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Election) বাংলায় আগেরবারের তুলনায় খারাপ ফল করেছে বিজেপি, কমেছে আসন। তার পরপরই রাজ্যের ৪টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে বিজেপিকে। যেখানে ওই চারটি মধ্যে ৩টিই বিজেপির জেতা আসন ছিল- সম্প্রতি লোকসভা ভোটেও সেখানে এগিয়ে ছিল বিজেপি। এই আবহেই বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনেই বড়সড় মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। 


মোদির 'সব কা সাথ, সব কা বিকাশ' স্লোগান বদলের ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু। এখানেই থামেনি, সংগঠন থেকে সংখ্যালঘু মোর্চা বাদ দেওয়ার সওয়ালও করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু- যার মধ্যে প্রায় পুরোটাই মুসলমান সম্প্রদায়ভুক্ত। সরাসরি তাঁদের বাদ দিয়ে রাজনীতির কথা বলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপরেই আসরে নামেন সাংসদ ও রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ১৪০ কোটি ভারতবাসীর জন্য় রাজনীতি করে বিজেপি। শুভেন্দুর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে শমীক বলেন, 'বিজেপি জাতীয়বাদী মুসলমানদের পক্ষে, তাঁরা বিজেপিকে ভোট দিক বা না দিক।'


নজরুল ইসলাম থেকে সৈয়দ মুজতবা আলির প্রসঙ্গ তুলে আনেন বিজেপি সাংসদ। তিনি বলেন, 'নজরুল ইসলামের একটি নির্দিষ্ট ভূমিকা ছিল। খিলাফৎ আন্দোলনকে ভারতের জাতীয় আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করে ভারতের রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ পোঁতা হয়েছিল একজন কংগ্রেস নেতা প্রকাশ্যে তার বিরোধিতা করেছেন তাঁর নাম কাজী নজরুল ইসলাম। আমরা আবার পশ্চিমবঙ্গে আবার একজন সৈয়দ মুজতবা আলিকে চাই। আমরা জাতীয়তাবাদী প্রত্যেক মুসলমানের পক্ষে।' বিজেপি কাদের বিরুদ্ধে সেটাও স্পষ্ট করেছেন তিনি। শমীক বলেছেন, 'কিন্তু যাঁরা না-পাক বলে একবার এই দেশটাকে ছেড়ে গিয়েছিলেন, ওপার থেকে আসছেন এবং সাইলেন্ট ডেমোগ্রাফিক ইনভেশনের মধ্যে দিয়ে বিনাযুদ্ধে ভারত দখলের ছক করছেন তাঁদের আমরা চিহ্নিত করব, আমরা তাঁদের বিরুদ্ধে। এটা আমাদের ঘোষিত নীতি।'


পরে কী বললেন শুভেন্দু:
এদিন রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে যা বলেছেন সেটা কেন বলেছেন, তাও পরে জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, 'পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে দাঁড়িয়ে এটা অস্বীকার করতে পারবেন না যে এখানে বিজেপিকে শুধুমাত্র সনাতনী হিন্দুরা ভোট দিয়েছে। সংখ্য়ালঘু বিশেষ করে মুসলিমরা বিজেপিকে ভোট দেয়নি। এবার ৯৫ শতাংশ মুসলমান তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। সেই কারণে আমি আমার রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলেছি। আমি যা বলেছি তার সঙ্গে মোদি সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের কোনও সম্পর্ক নেই। আমি শুধু বলেছি, যাঁরা আমাদের সঙ্গে রয়েছে, তাঁদের সঙ্গে আমাদের থাকা উচিত।' 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: কাড়াকাড়ি পড়ে গিয়েছে ইউরোপ-আমেরিকায়, ভারতের বাজারেও শীঘ্রই মিলতে পারে রোগা হওয়ার ওষুধ