কলকাতা: রাজভবনে মোদি-মমতার বৈঠকের আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। শুভেন্দু বলেন, মোদিজি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি থেকে একেবারে রেশন দুর্নীতি নিয়ে বলেছেন, 'আমি একজনকেও ছাড়বো না। একজনের মধ্যে যারা যারা পড়ছেন, সবাই জানে।.. বলেছেন, আমি সব টাকা উদ্ধার করে দেব। আর টাকা উদ্ধার করলে, যাদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার হবে, তাঁদেরকে তো জেলে যেতেই হয়। চোর মমতা, তিনি রাজভবনে পা ধরতে যাচ্ছেন। কোনও লাভ হবে না। চোর মমতাকে বলবো, কোনও লাভ হবে না, এর নাম নরেন্দ্র মোদি। না খাব, না খেতে দেব (দুর্নীতি ইস্যুতে)।'


মূলত এদিন ভোটের আগে বাংলায় এসে দুর্নীতি ইস্যুতে তৃণমূলকে কড়া আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদি বলেন, 'দুর্নীতি-অপরাধের মডেল তৈরি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। স্কুল-পুরসভায় নিয়োগে দুর্নীতি, সরকারি জিনিস কিনতেও দুর্নীতি', মানুষের টাকা লুঠ করতে দেব না, আরামবাগের সভা থেকে হুঙ্কার মোদির। 'এতদিন ধরে যাঁদের লুঠ করেছে তৃণমূল, তাঁদের টাকা ফেরত দিতেই হবে। লুঠেরাদের আক্রমণে ভয় পাই না । লুঠেরাদের হারাতেই হবে, ছাড়ব না', বলে হুঙ্কার নরেন্দ্র মোদির। এদিন নরেন্দ্র মোদি আরও বলেন, আমি পশ্চিম বাংলার বোন, পশ্চিমবাংলার গরিব, পশ্চিমবাংলার তরুণদের গ্য়ারান্টি দিচ্ছি। আর মোদির গ্য়ারান্টি হল, যারা গরিবের টাকা লুঠ করেছে, তাকে ফেরত দিতেই হবে। 


এদিকে সিপিএম-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন,কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলো কার্যত পশ্চিম বাংলায় পিসি-ভাইপোকে সাহায্য় করছে, প্রধানমন্ত্রী পারলে সেটা বন্ধ করুন।লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি। তার আগেই বাংলায় এসে ভোটের দামামা বাজিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঝোড়ো আক্রমণ শানাতে অস্ত্র করলেন শিক্ষা-পুরসভা-রেশন-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সামনে আসা বিপুল দুর্নীতির অভিযোগকে।


প্রধানমন্ত্রী বলেন,তৃণমূল এখানে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি করেছে। করেছে কিনা? দুর্নীতি করেছে, না করেনি? তৃণমূল এখানে পুরসভার নিয়োগে দুর্নীতি করেছে, না করেনি? দুর্নীতি করেছে, না করেনি? তৃণমূল এখানে সরকারি জিনিস কেনায় দুর্নীতি করেছে, না করেনি? দুর্নীতি করেছে, না করেনি? তৃণমূল এখানে গরিবের রেশন নিয়ে দুর্নীতি করেছে, না করেনি? করেছে, না করেনি? গরিব ও মধ্য়বিত্তের জমি দখল হোক, চিটফান্ডে দুর্নীতি হোক, সীমান্তে পশু পাচার হোক, তৃণমূল দুর্নীতির কোনও রাস্তা বাদ দেয়নি। 


আরও পড়ুন, 'মুখ্যমন্ত্রীর জবাব চাওয়ার সাহস পর্যন্ত দেখায়নি..', সন্দেশখালিকাণ্ডে মোদির নিশানায় কংগ্রেস


এদিন তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র শান্তনু সেন পাল্টা বলেন,'ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী যার মন্ত্রিসভার ৪২ শতাংশ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল কেস আছে। আমাদের বাংলায় লোডশেডিংয়ে জেতা বিরোধী দলনেতা, যাকে নারদা কেসে প্রকাশ্য়ে টাকা নিতে দেখা গেছে, যার বিরুদ্ধে CBI-এর FIR-এ নাম আছে, ২০টা FIR আছে, তিনি হচ্ছেন তাঁর দলের সম্পদ।' যদিও নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ধৃত, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতার ফ্ল্য়াট থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা এবং গয়নার পাহাড় চমকে দিয়েছিল গোটা রাজ্য়কে। লোকসভা ভোটের আগে কৌশলে ফের একবার সেকথা মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।