কলকাতা: তৃণমূলের নবীন-প্রবীণ ইস্যুতে ফের বিতর্কের ঝড়। গতকাল তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনেও এই ইস্যুতে মুখ খুলেছেন একাধিক জন। তবে গত কয়েক মাস ধরেই এই ইস্যুতে কম জল গড়ায়নি। মদন মিত্র, সৌগত রায়, সব্যসাচী দত্ত, কুণাল ঘোষ-সহ তৃণমূলের শীর্ষ নের্তৃত্ব, প্রত্যেকেই নিজের দাবিতে অটুট রয়েছেন। গতকাল সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) না থাকলে বাংলা ছাগলের তৃতীয় সন্তান হয়ে যাবে।' তারপরেই পাল্টা কুণাল ঘোষ বলেন, '..অন্ধ আনুগত্য দেখাতে চাইছেন, সামনে থাকলে ভাব সম্প্রসারণ শুনিয়ে দিতাম।' তবে এখানেই শেষ নয়, আজ এবার এই ইস্যুতে আরও একধাপ এগিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন তাপস রায়। বললেন, 'সুদীপের এটা বিলম্বিত বোধোদয়।' কিন্তু কেন ? আসা যাক উৎসস্থলে।


'নন্দীগ্রামে যা হয়েছিল, বিষয়টি এখনও বিচারাধীন। কিন্তু যা হয়েছিল, তা আমাদের ব্যথা দেয়। অভিষেক নেতৃত্বে ছিল, আছে, থাকবে। মমতার জন্যেই আমরা তৃণমূল করতে এসেছি। মমতার মুখই বাংলার মানুষের কাছে একটা প্রতীক। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব অপরিহার্য। আমরা সবাই মমতার আশীর্বাদে ভোটে জিতেছি। আমাদের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই, নবীনদের জায়গা দিতে হবে। দলের জন্য কতটা পরিশ্রম করছে, সেটা সবার ক্ষেত্রেই দেখতে হবে। সুব্রত বক্সী সাধারণত কিছু বলেন না, অভিষেক-মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া তাপস রায়ের। পাশাপাশি 'সুদীপের এটা বিলম্বিত বোধোদয়, মাঝে তো কিছুদিন দলেই ছিলেন না। 'মমতা না থাকলে বাংলা ছাগলের তৃতীয় সন্তান, একথা বলেন কী করে?' সুদীপকে আক্রমণে তাপস রায়।


মূলত গতকাল তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) না থাকলে বাংলা ছাগলের তৃতীয় সন্তান হয়ে যাবে। দেশের রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন বলেই বাংলায় আলোচনায় থাকে।' আর এরপরেই পাল্টা মন্তব্য কুণাল ঘোষের। তিনি বলেন, 'সুদীপদা তো দেখলেন, দিল্লিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কী ঝাঁঝ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে, বাংলা ছাগলের তৃতীয় সন্তান হবে, এটা উনি কেন বললেন? অন্ধ আনুগত্য দেখাতে চাইছেন, সামনে থাকলে ভাব সম্প্রসারণ শুনিয়ে দিতাম', প্রতিক্রিয়া কুণাল ঘোষের। 


অপরদিকে,  তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী বলেছিলেন, 'এই নির্বাচনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যদি লড়াই করেন, নিশ্চিতভাবেই তিনি লড়াইয়ের ময়দান থেকে পিছিয়ে যাবেন না। যদি লড়াই করেন, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই তিনি লড়াই করবেন। জোড়াফুলকে সামনে রেখেই তিনি লড়াই করবেন, এই বিষয়ে আমি নিশ্চিত।' আর এরপরেই মুখ খোলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।


আরও পড়ুন, প্রাথমিকে নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় মুখবন্ধ খামে CBI-এর রিপোর্ট পেশ


 দলের রাজ্য সভাপতির উদ্দেশে কুণালের মন্তব্য,'অভিষেকের পিছিয়ে যাওয়ার কথা আসছে কী করে? সুব্রত বক্সীর বাক্য গঠনে সমস্যা আছে। অভিষেকের লড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্তিশালী করার জন্য। অভিষেকের ক্ষেত্রে নেতিবাচক শব্দ ব্যবহার হচ্ছে কেন? অভিষেক তো নেতা, নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাঁকে নিয়ে এসব কথা আসছে কেন? সুব্রত বক্সীর উচিত, বাক্য গঠনটি পুনর্বিবেচনা করা।'