হিন্দোল দে, কলকাতা: আরাবুল ইসলাম গ্রেফতার। এক ISF কর্মীকে খুনে অভিযুক্ত আরাবুল। তাঁর বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগও রয়েছে। ভাঙড় থেকেই তৃণমূল নেতা আরাবুলকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা হিসেবেই পরিচিত আরাবুল। নির্বাচনের সময় বিশেষ করে অহরহ খবরের শিরোনামে উঠে আসেন তিনি। সেই আরাবুলকেই গ্রেফতার করল পুলিশ। ISF কর্মীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল। লালবাজারে আনা হচ্ছে আরাবুলকে। (Arabul Islam)
সন্দেশখালিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের উপর হামলার ঘটনার আঁচ এখনও রয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। ৩৪ দিন কেটে গেলেও, এখনও খোঁজ মেলেনি তৃণমূলের নেতা শেখ শাহজাহানকে। সেই নিয়ে তরজার মধ্যেই আরাবুলকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আরাবুল ভাঙড় দু'নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুল। এলাকায় যথেষ্ট প্রভাবশালী হিসেবেই পরিচিত তিনি। (Arabul Islam Arrested)
পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশ আরাবুলকে গ্রেফতার করেছে। অতি সম্প্রতিই ভাঙড় কলকাতা পুলিশের অধীনে এসেছে। সেই সূত্রে উত্তর কাশীপুরও। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় সেখানকার পুলিশই আরাবুলকে গ্রেফতার করে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নের শেষ দিন ISF কর্মীকে খুনে অভিযুক্ত আরাবুল। সেই মামলাতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। (ISF Worker Murder Case)
গ্রেফতারির পর আরাবুলকে লালবাজার আনা হচ্ছে। লালবাজারের তরফে এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে বলে খবর। আজই আরাবুলকে লালবাজারে আনা হবে। সেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। তার পর পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন, গত বছর ১৫ জুন এক ISF কর্মী খুন হন। জানা গিয়েছে, মইনউদ্দিন মোল্লা নামের এক ISF কর্মী খুন হন। এতদিন সেই নিয়ে তদন্ত চলছিল, তাতেই আরাবুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, আরাবুলের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগও রয়েছে। সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে খবর।
আরাবুলের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় আরাবুলের বিরুদ্ধে সরব হন ISF বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকিও। আরাবুল এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা তাঁকে ভাঙড়ে ঢুকতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন নৌশাদ। তার পরও এতদিন মুক্ত ছিলেন নৌশাদ। লোকসভা নির্বাচনের আগে এবার গ্রেফতার হলেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই সম্প্রতি ভাঙড়কে কলকাতা পুলিশের এক্তিয়ারের মধ্যে আনা হয়। ভাঙড়কে শান্ত করতে তার পর থেকে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়। এবার গ্রেফতার হলেন আরাবুল। যদিও এ নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য, "দেখুন এটা গ্রেফতারি নয়। গ্রেফতার করে ভোটের সময় জামিন দেবে, যাতে আরাবুলকে দিয়ে ভোট করানো যায়। আপনারা ভাবছেন পুলিশ রাজধর্ম পালন করছেন। কিন্তু মমতার পুলিশ এসব করে না। আরাবুল, সওকতকে দিয়ে ভোট লুঠ করবে তৃণমূল। পরোয়ানা ছিল, গ্রেফতার করা হল, যাতে নির্বাচনের সময় কমিশনের গ্রেফতারির মুখোমুখি না হতে হয়।" গোটাটাই পরিকল্পিত বলে দাবি শুভেন্দুর।