মালদা: মণিপুরে গণধর্ষণ, দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো এবং যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ঘিরে যখন উত্তাল দেশ, সেই সময় একটি ভাইরাল ভিডিও-কে হাতিয়ার করে বাংলার দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। মালদায় দুই মহিলকে বিবস্ত্র করে মারধর, জুতোপেটা করার অভিযোগ সামনে এসেছে। সেই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন কেন্দ্রের বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। সেই আবহে এবার মুখ খুললেন রাজ্যের নারীকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা (Shashi Panja)। মহিলাদের নিজেদের মধ্যেকার ঝামেলাকে বিজেপি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করলেন তিনি (Malda News)।
বিজেপি-র তরফেই ওই ভিডিও সামনে আনা হয়। দলের আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এ নিয়ে ট্যুইটারে সরব হন। উপজাতি সম্প্রদায়ের দুই মহিলার সঙ্গে এমন আচরণের পরও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন নিশ্চুপ প্রশ্ন তোলেন তিনি। এর পর একে একে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, অনুরাগ ঠাকুররা রাজ্যের সরকারকে নিশানা করা শুরু করেন। তাতেই সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন শশী।
এদিন সংবাদমাধ্যমে শশী বলেন, "মালদায় একটি বিশাল হাট রয়েছে। বিক্রিবাটা, কেনাকাটার জন্য বহু মানুষ আসেন। এই দুই প্রান্তিক মহিলাও এসেছিলেন। সেখানে চুুরির ঘটনা ঘটে থাকবে। তাতে মহিলাতে মহিলাতে ঝগড়া, ঝামেলা বাধে। এতে রাজনীতির কী আছে? কী বক্তব্য বিজেপি-র? ওখানে মহিলা সিভিক পুলিশ ছিলেন। তাঁরা ঝামেলা মেটানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ভিড় তাঁদের পরোয়া করেনি। পরে ওই দুই মহিলা চলে যান। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। মানুষ নিজে হাতে আইনশৃঙ্খলা তুলে নিয়েছেন, যা কোনও অবস্থাতেই কাম্য নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। "
আরও পড়ুন: Malda News: 'মমতা নির্মমতার প্রতীক', মালদাকাণ্ডের পর বিস্ফোরক অনুরাগ ঠাকুর
রাজ্যে তৃণমূলের (TMC) সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারও (Jay Prakash Majumdar ) এ নিয়ে বিজেপি-কে একহাত নেন। তিনি বলেন, "আমি যেহেতু বিজেপি-তে ছিলাম, অনুরাগ ঠাকুর এবং বাকিদের ভাল করে জানি। বিজেপি-র একটি আলাদা বিভাগ রয়েছে, যেখানে ভুয়ো খবর তৈরি হয়, ভুয়ো খবর প্রচার করা হয় এবং তার ভিত্তিতে রাজনৈতিক অভিমত তৈরি করা হয়। পৃথিবীর আর কোনও দলের এমন বিভাগ রয়েছে বলে জানা নেই, কিন্তু বিজেপি-র আছে। এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে পাঁচলার স্থানীয় মানুষরাও জানেন না। বিজেপি বিষয়টিকে তৈরি করেছে। মণিপুর চোখ ঘোরাতে এখন উঠেপড়ে লেগেছেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজনীতির সঙ্গে কোনও যোগই নেই এই ঘটনার। রাজ্যের নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।"
মালদার ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে ইতিমধ্যেই পুলিশ পাঁচ জনকে আটক করেছে। পরিবারের দাবি, হাটে লেবু বিক্রি করতে গিয়েছিলেন ওই দুই জা। সেই সময় চোর সন্দেহে তাঁদের বিবস্ত্র করে মার ধরা হয় বলে অভিযোগ। চুরির অভিযোগে দুই মহিলাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলেও দাবি পরিবারের।