কলকাতা : ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা আদায়ে এবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করলেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় (Abhishek Banerjee)। এক কোটি স্বাক্ষর-সহ প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি দিল্লি স্তব্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। যা নিয়ে পাল্টা সুর চড়িয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। এদিকে আজ থেকেই জেলায় জেলায় কেন্দ্রকে ১ কোটি চিঠি পাঠানোর কর্মসূচি শুরু করেছে তৃণমূল।
দিল্লি-হুঙ্কার-
২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে পঞ্চায়েত ভোটকে সেমিফাইনাল হিসেবে দেখছেন পর্যবেক্ষকরা। রাজনৈতিক দলগুলিও পঞ্চায়েত থেকেই লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ফের গ্রামের লড়াইকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার ডাক দিলেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ! তিনি বললেন, "১ মাস পর ৫০ হাজার লোক নিয়ে, ১ কোটি চিঠি নিয়ে দিল্লি যাব। ক্ষমতা থাকলে আটকাক। প্রধানমন্ত্রী আর গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর দফতরে পৌঁছে দেব। ক্ষমতা থাকলে ফেলুক।"
১০০ দিনের বকেয়া টাকা আদায়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, "১৬ তারিখ থেকে কর্মসূচি শুরু। একমাস চলবে। সই সংগ্রহ করে চিঠি করিয়ে, প্রধানমন্ত্রীর নামে আগামী এক মাসে এক কোটি চিঠি তৈরি করে রাখুন। তারপর এক কোটি চিঠি নিয়ে, আমি অভিষেক দিল্লির বুকে যাব। দেখব কেন্দ্রীয় সরকারের কত ক্ষমতা রয়েছে, কানে তুলো দিয়ে বসে থাকতে পারে কি না দেখব।"
এনিয়ে পাল্টা সুর চড়াতে ছাড়েননি বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, "ভাইপো... আলিপুরদুয়ারে বড় বড় কথা না ! ১০০ দিনের কাজে, বলছে ২ হাজার জন চোর হতে পারে, আমরা তো ভদ্রলোক। কয়লা চোর বলছে আমরা ভদ্রলোক, গরু চোরের পার্টি বলছে আমরা ভদ্রলোক। দিল্লি যাক না,! দিল্লি পুলিশের লাঠি ৬ ফুট লম্বা। দিল্লি পুলিশ কেজরিওয়াল চালান না, স্বরাষ্ট্র দফতর চালায়। অমিত শাহজির দফতর চালায়। যাক না ভাইপো একবার। পিসিকে নিয়ে।"
বকেয়া সংক্রান্ত দাবিদাওয়া জানাতে, বুধবারই অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সাংসদরা পৌঁছে গেছিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের দফতরে। মোদি সরকারের মন্ত্রীর দেখা না পেয়ে, সচিবের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। শনিবার আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে আরও একধাপ এগিয়ে একশো দিনের টাকা আদায়ে দিল্লি স্তব্ধ করার হুঙ্কার ছাড়েন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। বিজেপির স্থানীয় নেতাদের ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। এনিয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।
অভিষেক বলেন, "দিল্লি আমরা স্তব্ধ করে ছাড়ব। টাকা না ছাড়লে মন্ত্রক চলতে দেব না। শেষ রক্তবিন্দু অবধি লড়ব, কথা দিচ্ছি, কেউ আটকাতে পারবে না। বিজেপি নেতাদের বাজারে দেখলে ঘিরে নেবেন। হাতজোড় করে বলবেন, কী গো তোমার নেতাকে বলো আমার ১০০ দিনের টাকাটা ফেরত দিতে। বাংলার বিরোধী দলনেতা কেন্দ্রকে চিঠি করে বলছেন, বাংলার মানুষের টাকা বন্ধ করে দাও।" যদিও এর জবাব দিতে ছাড়েননি শুভেন্দু। তিনি পাল্টা দিয়ে বলেছেন, "বলছে নামে নামে দরখাস্ত করো। আরে গ্রামে যে হস্তাক্ষর করতে আসবে, লোকে বলছে, আসছে দিদির দূত, ওরা সব ভূত। l তৃণমূল গেলেই লোকে বলে এই চোর যাচ্ছে।"
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপি যখন দুর্নীতি অস্ত্রে ভর করে তৃণমূলকে নিশানা করছে, তখন তৃণমূল আবার সাধারণ মানুষের বঞ্চনার ইস্য়ুকে বড় করে তোলার চেষ্টা করছে। এখন দুর্নীতি বনাম বঞ্চনার এই লড়াইয়ে অ্য়াডভান্টেজ পাবে কে ? সেটা বোঝা যাবে পঞ্চায়েত ভোটের ফলে।
আরও পড়ুন ; ‘মানুষের অধিকারের টাকা আটকে রাখে, এমন নেতা দেখেছেন কখনও’! দিল্লি থেকে বকেয়া ছিনিয়ে আনার হুঁশিয়ারি অভিষেকের