সমীরণ পাল,মাজদিয়া: এক কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার সোনা কলকাতায় (Kolkata) পাচার করার সময় বিএসএফের (BSF) হাতে ধরা পড়ল দুই মহিলা পাচারকারী (women summglar)। তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার ময়ূরহাট হল্ট স্টেশন (Mayurpur halt railway station) থেকে। ধৃতরা হল নদিয়া জেলার চাকদহ এলাকার জনৈক তারক মণ্ডলের স্ত্রী পদ্মা ওরফে জয়ন্তী মণ্ডল এবং অন্য মহিলাটি হল একই জেলার হরিশ নগরের বাসিন্দা বিশু মণ্ডলের স্ত্রী মিঠু বিশ্বাস।
বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, গত ২ এপ্রিল বিএসএফের গোয়েন্দা বিভাগ সীমান্ত চৌকি গেদে-তে কর্তব্যরত বিএসএফ জওয়ানদের শিয়ালদহগামী ট্রেনের মাধ্যমে সোনা পাচারের কথা জানায়। খবর পেয়ে গেদের কোম্পানি কমান্ডার আরপিএফ-এর সঙ্গে বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে মাঝদিয়া রেলস্টেশনে ট্রেনে ওঠেন। তারপর সূত্র দ্বারা পাওয়া সন্দেহভাজনদের ছবি মিলিয়ে দেখে দু-জন মহিলাকে দুপুর ২টো ২০ মিনিটে চিহ্নিত এবং শনাক্ত করার পরে বিএসএফ ও আরপিএফ জওয়ানরা আড়াইটের সময় ময়ূরহাট রেল স্টেশনে উভয় সন্দেহভাজন মহিলা পাচারকারীকে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেন। প্রাথমিক তল্লাশির সময় তাদের কাছ থেকে ০২ টি প্যাকেট পাওয়া যায়। যার মধ্যে ১৩টি সোনার বিস্কুট এবং একটি সোনার ইট উদ্ধার করা হয়। এরপর বাজেয়াপ্ত সোনা ও গ্রেফতার করা মহিলাদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সীমান্ত চৌকি গেদে-তে আনা হয়। জেরায় আরও জানা যায়, বাজেয়াপ্ত হওয়া সোনার মোট ওজন ১ কেজি ৯২৯ গ্রাম। যার আনুমানিক মূল্য এক কোটি ৩৪ লক্ষ ৫৪ হাজার ৭৭৫ টাকা বলে জানা গেছে।
জেরায় ধৃত মিঠু বিশ্বাস জানায়, সে রঘুনন্দনপুর গ্রামের এক অজ্ঞাত পরিচয়ের মহিলার কাছ থেকে এই চালানটি পেয়েছে এবং টাকার বিনিময়ে সে বাহক হিসেবে কাজ করেছে। এই কাজটি করতে পারলে সে ৮০০ টাকা পায়। সে আরও বলে যে রানাঘাট রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করার পর, সে তার মোবাইলের মাধ্যমে নির্দেশ পেত যে তাকে কোথায় নামতে হবে এবং প্রতিবার বিভিন্ন রেল স্টেশনে নামত। অন্যদিকে পদ্মা বলে আরেক ধৃত মহিলা জানায়, সে শ্যামল বিশ্বাস নামে একজনের কাছ থেকে চালানটি পেয়েছিল এবং মিঠু বিশ্বাসের সঙ্গে তা দিতে যাচ্ছিল। সম্পর্কে সে মিঠু বিশ্বাসের পিসি। বর্তমানে বাজেয়াপ্ত সোনা ও ওই দুই ধৃত মহিলাকে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বনপুর কাস্টমস অফিসে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিএসফ জওয়াদের এই সাফল্যে খুশি হয়েছেন দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের জনসংযোগ কর্মকর্তা। এপ্রসঙ্গে তিনি জানান,কুখ্যাত চোরাকারবারীরা দরিদ্র ও নিরীহ মানুষকে সামান্য অর্থের প্রলোভন দিয়ে ফাঁদে ফেলে। কুখ্যাত পাচারকারী চক্র সরাসরি চোরাচালানের মতো অপরাধে জড়িত নয়,তাই তারা দরিদ্র মানুষকে টার্গেট করে। তিনি সীমান্তে বসবাসকারী লোকদের কাছে আবেদন করেছেন যে তারা যদি সোনা চোরাচালান সম্পর্কিত কোনও তথ্য পান তবে যেন বিএসএফের সীমা সাথী হেল্পলাইন নম্বর ১৪৪১৯ -এই সংক্রান্ত তথ্য দিতে পারেন। এছাড়াও দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত আরও একটি নম্বর ৯৯০৩৪৭২২২৭ চালু করা করেছে। তাতে সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা ভয়েস মেসেজও পাঠানো যেতে পারে। সঠিক তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তিকে উপযুক্ত পুরস্কারের দেওয়া হবে এবং তাঁর পরিচয় গোপন রাখা হবে।