কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, বর্ধমান: পুরসভা ভোটে (Municipal Election) ফিরল অশান্তির (Violence) ছবি। যা দেখে অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে ২০১৫ সালের পুরভোট এবং ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের কথা। দু’বারই নির্বাচনী সন্ত্রাসের অভিযোগে তপ্ত হয়ে উঠেছিল বাংলা। বাংলার ভোটে সন্ত্রাসের সেই ভয়ঙ্কর ছবিটা বদলাল না। ১০৮টি পুরসভার ভোটে দিকে দিকে আক্রান্ত হলেন বিরোধী দলের প্রার্থী, এজেন্টরা। গুলি-বোমা চালানোর অভিযোগ উঠল, হল রক্তপাত। শুধু বিরোধীরাই নন, কর্তব্য পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকরাও আক্রমণের শিকার হলেন। নানা জায়গায় গণতন্ত্রের উৎসবে এই ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখা গেল। যেন ফিরে এল ২০১৫-র পুরসভা ভোটের সেই ছবি। ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনের সেই ভয়াবহতা।


২০১৫ সালে পুরভোটের দিন বিধাননগরে বিভিন্ন জায়গায় তাণ্ডব চালায় বহিরাগতরা। আক্রান্ত হন ভোটাররা। আক্রান্ত হন ভোটাররা। বুথ দখল, ছাপ্পা ভোট, মারধর, সন্ত্রাসের একের পর এক ছবি প্রকাশ্যে চলে আসায় পরিকল্পিত হামলার শিকার হন একের পর এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি। বাঁশ-লাঠি-রড দিয়ে মারা হয় এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি অরিত্রিক ভট্টাচার্যকে। 


এরপর ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটেও ফিরে আসে সন্ত্রাসের সেই চেনা ছবি। ৩৪ শতাংশ আসনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই জয়ী হয় রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। ভোটের দিনও ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠে। মালদায় প্রথমবার পঞ্চায়েত ভোট দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন এক তরুণ। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে তিরবিদ্ধ হতে হয় এক মহিলা ভোটারকে। জায়গায় জায়গায় ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়।


আরও পড়ুন তুফানগঞ্জে বিজেপি প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ, নিশানায় তৃণমূল


এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে সাম্প্রতিককালে একের পর এক তৃণমূল নেতা-মুখপাত্র আশ্বাস দিয়েছিলেন, যে ঘটনা আগে ঘটেছে, আর হবে না। সম্প্রতি যুব তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে কার্যত সতর্ক করেছিলেন, ‘আরেকবার ২০১৮ হলে আরেকটা ২০১৯ কিন্তু সময়ের অপেক্ষা। আরেকটা ২০১৮ হলে কিন্তু বারবার সবটা ২০২১-এর মতো হবে না।’


কিন্তু তারপরও ১০৮টি পুরসভার ভোটে দেখা গেল এই ছবি! সেই আগের পুনরাবৃত্তি! বাংলায় ভোট সন্ত্রাস কি কোনওদিন বন্ধ হবে? এটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।