কাঁথি: পূর্ব মেদিনীপুরে কাঁথিতে (Contai Municipality) , পুরভোটের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে, রক্তাক্ত হলেন এবিপি আনন্দর সাংবাদিক এবং চিত্র সাংবাদিক। লাথি এবং ঘুঁষি মেরে, চিত্র সাংবাদিক ভগবান শাহের মুখ এবং চোখ ফাটিয়ে দেওয়া হয়। সাংবাদিক প্রকাশ সিন্হাকেও মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। ক্যামেরা এবং বুম কেড়ে নিয়ে, ভেঙে দেওয়া হয়। এই ঘটনা ঘটেছে কাঁথি পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের রহমানিয়া মাদ্রাসায়। আজ সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ ভোটের খবর করতে এই বুথে পৌঁছোন এবিপি আনন্দর সাংবাদিক প্রকাশ সিন্হা এবং চিত্র সাংবাদিক ভগবান শাহ। বুথের বাইরের মাঠে একশো থেকে দেড়শো জন জমায়েত করে দাঁড়িয়ে ছিল। এবিপি আনন্দর সাংবাদিক এবং চিত্র সাংবাদিক গাড়ি থেকে নেমে, তাঁদের বক্তব্য নিতে যেতেই, তাঁরা তেড়ে আসে। কোনও কথা বলার আগেই শুরু হয় বেধড়ক মারধর।
প্রথমেই চিত্র সাংবাদিক ভগবান শাহের ক্যামেরা কেড়ে, ভেঙে দেওয়া হয়। ঘুঁষি এবং লাথি মেরে চিত্র সাংবাদিকের মুখ-চোখ ফাটিয়ে দেওয়া হয়। সাংবাদিক প্রকাশ সিন্হা এগিয়ে যেতেই, তাঁকেও বেধড়ক মারধর শুরু হয়। তিনি সেখান থেকে বেরনোর চেষ্টা করলে, পিছন থেকে ধাওয়া করে, ধরে, মাটিতে ফেলে ফের শুরু হয় লাথি এবং ঘুঁষি মারা। প্রকাশ সিন্হার হাত থেকে চ্যানেলের বুম কেড়ে নিয়ে, ভেঙে দেওয়া হয়। সাংবাদিকের পরিচয়পত্র কেড়ে নেওয়া হয়। প্রায় ছ-সাত মিনিট ধরে এই তাণ্ডব চলে। শেষে তিনি যন্ত্রণায় চিৎকার করতে শুরু করলে, একজন এসে হামলাকারীদের সেখান থেকে সরায়। এবিপি আনন্দর গাড়িও ভাঙচুরের চেষ্টা হয়। গাড়িচালক কোনওমতে গাড়ি চালিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যান।
অন্যদিকে, একই ছবি উত্তর দমদমে। উত্তর দমদম পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে খবর সংগ্রহ করতে যান এবিপি আনন্দের সাংবাদিক সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও চিত্র সাংবাদিক শ্যামল জানা। মেরে মুখ ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে সুকান্ত মুখোপাধ্যায়ের। বেধড়ক মারধর করা হয়েছে চিত্র সাংবাদিক শ্যামল জানাকেও। দুষ্কৃতীদের চড়াও হওয়ার ছবি ধরা পড়ে ক্যামেরায়। উদয়পুরের আলিপুর খেলার মাঠ এলাকায় সিপিএম প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ পেয়ে খবর সংগ্রহ করতে যান সুকান্ত। অভিযোগ, সেখানে বহিরাগতরা জড়ো হয়েছিল। ভোটারদের বাধা দেওয়া হচ্ছিল বলেও অভিযোগ করে সিপিএম। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী শিবশঙ্কর ঘোষ, ভোটারদের নিয়ে বুথের দিকে যাচ্ছিলেন। সেখানে ছিলেন আমাদের প্রতিনিধি সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও চিত্র সাংবাদিক শ্যামল জানা।
দেখা যায়, গলির উল্টোদিক থেকে ২০-২৫ জন যুবক আসছে। সেই ছবি ধরা পড়ে এবিপি আনন্দর ক্যামেরায়। সিপিএম প্রার্থী অভিযোগ করেন, এঁরা সকলেই বহিরাগত এবং এঁরাই ভোট দিতে বাধা দিয়েছেন। অভিযুক্তদের পরিচয় জানতে গেলে, সুকান্তর উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়। বেধড়ক মারধর করা হয়, এবিপি আনন্দর সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিককে। ক্যামেরা ভেঙে ফেলে দেওয়া হয় ড্রেনে। জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয় বুম। দুষ্কৃতীদের কাউকেই এখনও ধরা হয়নি। গুরুতর জখম অবস্থায় সুকান্ত মুখোপাধ্যায় ও শ্যামল জানাকে বেলঘরিয়ার বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।