কলকাতা : জাতীয় স্তরে যুযুধান দুই পক্ষ। রাজ্য স্তরেও মাঝে মধ্যেই একে অপরে আক্রমণের রাস্তাতেই থাকেন তারা। কিন্তু রাজ্য প্রশাসনের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যেন একজোট রাজ্যের বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর গ্রেফতারিতে (Kaustav Bagchi Arrested)  তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন বিজেপি (BJP) নেতারাও। ব্যক্তিগত আক্রোশের জের বলে দাবি করার পাশাপাশি নিঃশর্ত মুক্তির দাবিও করেছেন তারা।


এমনিতেই সদ্য সাগরদিঘিতে উপনির্বাচন জয়ে কংগ্রেসের (Congress) জোটসঙ্গী বামফ্রন্ট (Left) পাশে দাঁড়িয়েছে। কৌস্তভ বাগচীর বাড়িতে গিয়ে দেখা করে এসেছেন শীলভদ্র দত্ত। গ্রেফতারির কড়া সমালোচনা করেছেন মহম্মদ সেলিম (MD Selim), সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty), বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যরাও (Bikash Ranjan Bhattacharya)। এবার যাতে কংগ্রেস নেতা মুক্তি পান সেই জন্য সরব হয়েছেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh), শঙ্কর ঘোষ (Shankar Ghosh), শুভেন্দু অধিকারীরাও (Suvendu Adhikari)। 


সোশ্যাল মিডিয়ায় কৌস্তভ বাগচীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেছেন বিজেপি নেতা শঙ্কর ঘোষ। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'কেউ যদি শুরু করে, তাহলে প্রত্যুত্তর স্বাভাবিক। তবে সেটা একটা সীমার মধ্যে থাকা উচিত। ওঁর কাছে তথ্য থাকলে, তা সামনে আসা উচিত।  কাদা ছোড়াছুড়ির রাজনীতির ঠিক না। প্রতিহিংসা, বদলার রাজনীতি সবার পক্ষেই খারাপ।' কংগ্রেস নেতার মুক্তির দাবি জানালেও তৃণমূল ও কংগ্রেসকে অবশ্য খোঁচা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বলেছেন, 'আমার কাছে হারের পর যাতে ভবানীপুরে উনি কর্মাটমেন্টাল মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন তাই কংগ্রেস প্রার্থী দেয়নি। সেই কাজের যোগ্য প্রতিদান দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ইস্যুতে যেমন কংগ্রেসের কপিল সিব্বল, অভিষেক মনু সিংঘিরা লড়েন, আশা রাখি এক্ষেত্রেও তাই হবে। দ্রুত মুক্তি পাবেন কংগ্রেস নেতা।'


এদিকে, কৌস্তভ বাগচীর গ্রেফতারি ভয় দেখানোর চেষ্টা বলে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছেন মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র। যদিও মুখ্যমন্ত্রীকে কংগ্রেস নেতা ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন বলেই প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে বলেই মতামত তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের। শান্তনু সেন, পার্থ ভৌমিকের মতে দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী। 


এদিকে, সাগরদিঘিতে কংগ্রেসের জয়ের পর অধীর চৌধুরীকে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর। তার জেরে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক ও অবসরপ্রাপ্ত IAS অফিসার দীপক ঘোষের লেখা বই নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলনেত্রীকে পাল্টা আক্রমণের পরেই, আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীকে গ্রেফতার করল বড়তলা থানার পুলিশ।
জামিন অযোগ্য ধারায় কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হবে কৌস্তভকে। 


কৌস্তভের দাবি, গতকাল রাত আড়াইটে নাগাদ পুলিশ তাঁর ব্যারাকপুরের বাড়িতে যায়। সকালে পুলিশের আরও একটি দল পৌঁছয় কৌস্তভের বাড়িতে। গ্রেফতারের আগে ধারা দেওয়া নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তুমুল কথা কাটাকাটি হয় আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীর। কৌস্তভকে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় স্লোগান দিতে শুরু করেন কংগ্রেস কর্মীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছেন, এভাবে ভয় দেখিয়ে কণ্ঠরোধ করা যাবে না, গ্রেফতারির পর প্রতিক্রিয়া কৌস্তভ বাগচীর।


আরও পড়ুন- 'অভিজ্ঞতা থেকে বলছি...' কৌস্তভ গ্রেফতারিতে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ অম্বিকেশ মহাপাত্রর