সন্দীপ সরকার, কলকাতা : উদ্বেগ বাড়াচ্ছে রাজ্যের ডেঙ্গি (Dengue) পরিস্থিতি। ইতিমধ্যেই কলকাতা (Kolkata) ও হাওড়ায় (Howrah) ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ডেঙ্গি চিকিৎসার আদর্শ চিকিৎসা বিধি সম্পর্কে সরকারি চিকিৎসকদের ওয়াকিবহাল করা হয়েছে।

রাজ্যজুড়ে বাড়ছে ডেঙ্গি

কলকাতা ও জেলাজুড়ে ক্রমশ বাড়ছে মশাবাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই কলকাতা ও হাওড়ায় ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। রবিবার, স্বাস্থ্যভবন সূত্রে পাওয়া পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যে বর্তমানে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ২৯২ জন। এই মুহূর্তে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ২৫১ জন রোগী।

রবিবার, নতুন করে ৯১ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। যে সব জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি তার মধ্যে রয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে, জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ১৬ জন বাসিন্দা। মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) ১৬ জন। ১৫ জন উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Pargans) বাসিন্দা। ১২ জন হুগলি ও ৯ জন হাওড়ার (Howrah) বাসিন্দা।

চিন্তা বাড়াচ্ছে কলকাতার পরিস্থিতি

কলকাতার পরিস্থিতিও যথেষ্ট উদ্বেগজনক। হাসপাতাল থেকে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ল্যাবে বাড়ছে জ্বরের উপসর্গ নিয়ে রোগীদের ভিড়। কালীঘাটে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেখা গেল রোগীদের লম্বা লাইন। ডেঙ্গি আক্রান্ত অনেকেরই প্লেটলেট কমে যাচ্ছে অনেকটাই, যার জেরে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হচ্ছে অনেক আক্রান্তকেই।

কী বলছেন চিকিৎসকরা

মাইক্রো বায়োলজিস্ট সুমন পোদ্দার বলেন, 'একটা জিনিস দেখতে পাচ্ছি, রিপোর্ট নেগেটিভ, ডেঙ্গির উপসর্গ আছে। IVM-এ ধরা পড়ছে। ল্যাবের রিপোর্টকেই ধ্রুব সত্য ধরে নেবে না।' স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ডেঙ্গির আদর্শ চিকিৎসা বিধি সম্পর্কে সরকারি চিকিৎসকদের ওয়াকিবহাল করা হয়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে প্লেটলেট মজুত রাখার বিষয়টিও নিশ্চিত করার চেষ্টা হচ্ছে।

আরও পড়ুন- জ্বর ছেড়ে গেলেও ডেঙ্গি থেকে নিশ্চিন্ত নয়! কোন লক্ষণ দেখেই চিনবেন

ডেঙ্গির ধরন ও উপসর্গ: 

ডেঙ্গি তিন ধরনের হয়

  • ডেঙ্গি ক্লাসিক্যাল ফিভার (১-৩তম দিন): এ ক্ষেত্রে জ্বর, গা-হাত-পায়ে ব্যথা থাকে। চিকিৎসায় দু-তিন দিনে রোগী সুস্থও হয়ে যান।
  • ডেঙ্গি হেমারেজিক ফিভার (৫-৭তম দিন): এ ক্ষেত্রে রক্তপাতজনিত সমস্যা দেখা যায়, যেমন দাঁত, নাক, মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। মেয়েদের ক্ষেত্রে অসময়ে  পিরিয়ডও দেখা দিতে পারে। এ ছাড়াও ব়্যাশ হতে বেরোতে পারে এই পর্বে। 
  • ডেঙ্গি শক ফিভার (৫-৭তম দিন): এ ক্ষেত্রে রোগীকে দেখে কিছুই বোঝা যায় না। তবে এই গ্রুপের রোগীর প্রেসার এবং পালস প্রায় থাকেই না। যার ফলে হঠাৎ করেও মৃত্যু হতে পারে।