কলকাতা: কংসাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে ভাসছে পাঁশকুড়া। বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ সড়কপথে সেখানে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল কলকাতা থেকে রওনা দিয়ে হুগলির পুরশুড়া, আরামবাগ ও গোঘাটে বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পর্যাপ্ত ত্রাণ মিলছে কি না জানতে চাওয়ার পাশাপাশি, বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের অভাব-অভিযোগের কথাও শোনেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন পাঁশকুড়ায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করে মমতা বলেন, সরকার যা সাহায্য করার করবে। কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা ডিভিসি জল ছাড়ায় এই বন্যা হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে এই বন্যা হওয়ার কথাই নয়। আমরা কয়েকশো পুকুর কেটেছি, চেক ড্যাম করেছি, এরকমটা হওয়ার কথাই নয়। কপালেশ্বর-কেলেঘাই প্রোগ্রামের মাধ্যমে অনেকটাই সমস্যা মিটিয়ে ছিলাম। ১০ বছর ধরে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান পড়ে আছে। সেটা আগামী ২ বছরের মধ্যে করে দেব। এইভাবে জল ছাড়লে তো এটা হবেই। কেন্দ্রীয় সরকার ড্রেজিং করাচ্ছে না। সেই কারণে ৩৬ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে ডিভিসির জল ধারণের ক্ষমতা। কেন বাংলা ডুববে? আমরা প্রশ্নের উত্তর চাই। বাংলায় জল ছেড়ে দিয়ে ঝাড়খন্ডকে ঠিক রাখে। এটা তো ঠিক নয়। আমি শুনেছি কাল রাতে জলের উপর আরও জল ছেড়েছে।'
এরপরই বন্যা দুর্গতদের জন্য সতর্কবার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'জল আর আগুনে ঝুঁকি নেবেন না। অন্তত কয়েকদিন ত্রাণ শিবিরে কিংবা কোনও সেফ জায়গায় থাকুন। তারপর জল নামলে বাড়িতে যান। প্রশাসনকে বলব ত্রাণে যেন কোনও অসুবিধা না হয়। যা যা প্রয়োজন সেটা করুন। প্রতিটা পরিবারকে দেখে নেবেন। কেউ যেন অসুবিধায় না পড়েন। আমি সত্যিই শঙ্কিত। আমি ভিডিসির সঙ্গে সব সম্পর্ক কাট-অফ করব। মানুষকে যদি এই ভাবে ডোবায় তারা। এটা পরিকল্পিত চক্রান্ত।'
প্রসঙ্গত, পাঁশকুড়া স্টেশন, বিডিও অফিস-সহ শহরের ১৮টি ওয়ার্ডই জলমগ্ন। গতকাল পাঁশকুড়ার গড় পুরুষোত্তমপুরে কংসাবতীর বাঁধ ভেঙে যায়। ৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় হু-হু করে জল ঢুকতে শুরু করেছে। সেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন, জলমগ্ন হাসপাতাল-স্কুল, ডিভিসির ছাড়া জলে বন্যা পরিস্থিতি হুগলির খানাকুলে
এদিকে, অতিবৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে হুগলি জেলায় প্রায় ৭ হাজার হেক্টর ধান জমি ও ২ হাজার ২৫ হেক্টর সবজী চাষের জমি জলমগ্ন হয়েছে। জমি থেকে জল নামলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানা যাবে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি দফতর। পুজোর আগে চাষবাসে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে কার্যত মাথায় হাত চাষীদের। সরকারি সাহায্য না পেলে পুনরায় ঘুড়ে দাঁড়ানো অসম্ভব, দাবি কৃষকদের। জেলায় প্লাবিত এলাকার জলস্তর সামান্য কমলেও এখনও আতঙ্ক কাটেনি।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে