অরিন্দম সেন, শুভেন্দু ভট্টাচার্য, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার : ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড জলপাইগুড়ি। মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। আহত শতাধিক। গতকাল দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ আকাশ কালো করে ঝড় ওঠে। চার মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ হয়ে যায় জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। তবে রবিবার শুধু জলপাইগুড়ি নয়, ক্ষতিগ্রস্ত কোচবিহার, আলিপুর দুয়ারও।
রবিবার বিকেলের ঝড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছে আলিপুরদুয়ারের বিস্তীর্ণ এলাকা। সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকের তপসিখাতা গ্রাম। ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে টিনের তৈরি আস্ত বাড়ি। মাথার ওপর ছাদ হারিয়ে দিশাহারা দিনমজুরের পরিবার। বাড়িতে তিন পড়ুয়া রয়েছে। বেশিরভাগ বই-খাতা উড়ে গিয়েছে, জলে ভিজে নষ্ট হয়েছে জামাকাপড়, বিছানাপত্র। রান্নাঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কুমারগ্রামের উত্তর হলদিবাড়ি ও ফালাকাটার জটেশ্বর এলাকায়। প্রচুর গাছ পড়ে গিয়েছে। ভেঙে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। ভুট্টা খেত নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রচুর টাকার ক্ষতি হয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলাতেও। কুমারগ্রামে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দুটি স্কুলে ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছে শতাধিক পরিবার।
কয়েক মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড অবস্থা কোচবিহারের মাথাভাঙারও। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। রবিবার বিকেল ৫টা নাগাদ মাথাভাঙা ১ নম্বর ব্লকের শিকারপুর,কুরশামারি, এলঙমারি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে যায়। প্রায় ২০০ কাঁচাবাড়ি ভেঙে পড়ে। গাছপালা উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায়, বিদ্যুৎহীন এলাকা। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে নষ্ট হয়েছে বিঘার পর বিঘা জমির ফসল। রাতে এলাকা পরিদর্শনে যান প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
জলপাইগুড়ির পরিস্থিতিই সবথেকে খারাপ। ঝড়ের তাণ্ডবের চিহ্ন সর্বত্র। কোথাও উল্টে পড়ে আছে গাড়ি। প্রচুর গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে। মাথার ওপরের ছাদই শুধু নয়, ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে জিনিসে ঠাসা আস্ত আলমারি, ট্রাঙ্ক, স্য়ুটকেস। কয়েক মিনিটের ঝড় কেড়ে নিয়েছে সব কিছু। বার্নিশ গ্রামে ২ জন এবং জলপাইগুড়ি পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের সেনপাড়া এলাকায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন : এবার কোন ইস্যু নির্ণয় করবে পাহাড়ের ভোট-ভাগ্য? ১৫ বছরের জয়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারবে BJP?
প্রবল ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গুয়াহাটি বিমানবন্দর। গতকাল দুপুরে ভেঙে পড়ে লোকপ্রিয় গোপীনাথ বরদলুই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ছাদের একাংশ। অল্পের জন্য রক্ষা পান যাত্রীরা। ৬টি বিমানকে অন্যত্র ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।