বিশ্বজিৎ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর: ডেবরায় জলের তোড়ে ভাঙল কাঁসাই নদীর উপরে থাকা অস্থায়ী সেতু। ঘটনাটি গতকাল সকালে ডেবরা ব্লকের ৪ নং খানামোহন অঞ্চলের খানামোহন নদী ঘাট এলাকায়। ডেবরা থেকে কেশপুর যাওয়ার জন্য কাঁসাই নদীর উপর এই অস্থায়ী সেতু ছিল। গতকাল সকালে ওই বাঁশের সেতু দিয়ে নিত্যযাত্রীরা যাতায়াত করছিল হঠাৎ জলের তোড়ে ভেঙে ভাসিয়ে নিয়ে যায় বাঁশের সেতুটিকে। নদীতে ঝাঁপ দিয়ে একজন প্রাণে বাঁচেন। আজ সেই ভিডিও ভাইরাল হয়। 


পুজোর আগেই আরও একটি ঘটনার মুখোমুখী হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর। যদিও সেবার অভিযোগের আঙুল উঠেছিল ম্যানমেড বন্যার দিকে।সেবার ভেঙেছিল কাঁসাই নদীর বাঁধ। হুহু করে জল প্রবেশ করছিল গ্রামে, রাতে দিশেহারা একাধিক এলাকার মানুষজন। দাসপুরে কাঁসাই নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় ছিল দাসপুরের একের পর এক গ্রাম।


 পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর এক নম্বর ব্লকের হোসেনপুর এলাকায় এই নদী বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। বাঁধ ভাঙ্গার ফলে সামাট রাজনগরের বেশ কিছু এলাকা এবং হোসেনপুর প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। সেবার নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ভাসছিল দুই মেদিনীপুর, বীরভূম, হুগলির একাংশ। তার উপর ডিভিসির ছাড়া জলে নিম্ন দামোদর উপত্যকায় প্লাবন আশঙ্কা দেখা গিয়েছিল। 


ডিভিসি র ছাড়া জলে দামোদরের বাঁধ উপচে জল ঢুকতে শুরু করেছিল উদয়নারায়ণপুরে। ইতিমধ্যেই হরিহরপুর, কুরচি শিবপুর, টোকাপুর, শিবানীপুর সহ একাধিক জায়গা দিয়ে ঢুকতে শুরু করেছিল জল। প্লাবিত হয়েছিল পাঁচ ছয়টি গ্রাম। জলের তলায় উদয়নারায়নপুর ডিহিভুরসুট রাজ্য সড়ক।দুর্গাপুর ব্যারাজ লাগোয় বাঁকুড়ার গ্রামগুলিতে পরিদর্শনে গিয়ে DVC-কে আক্রমণ করেন মন্ত্রী মলয় ঘটক। প্রতিবার পুজোর মুখে DVC-র জলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় মন্ত্রীর অভিযোগ।


প্রসঙ্গত, আশঙ্কা থাকলেও ঘূর্ণিঝড় দানার বিশেষ প্রভাব পড়ল না বাংলায়। তবে ঝড়ের দাপট না থাকলেও বৃষ্টিতে ভাসছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ। লাগাতার বৃষ্টিতে ডুবেছে কলকাতার একাধিক এলাকা। জল জমেছে উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায়। ফের জল জমার যন্ত্রণার মুখোমুখি বেহালা। যদিও এই প্রথমবার নয়, আগেও জল যন্ত্রণার মুখোমুখি হয়েছিল। প্রতিবারেই তাই প্রশ্নের মুখে পড়ে নিকাশি ব্যবস্থা। তবে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় জমেছে অথৈ জল। বাড়ি ছেড়ে বেরোনোই দায় হয়েছে। এদিকে এখনও বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। হাওয়া অফিসের তরফে এখনও রয়েছে সতর্কতা। ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা এখনও চলে যায়নি।


আরও পড়ুন, জলমগ্ন আগেও বহুবার, দানা যেতেই 'নিকাশি' নিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে পূর্ব বর্ধমান


ধামারার কাছে ল্যান্ডফল করে ওড়িশাতেই 'অ্যারেস্ট' ঘূর্ণিঝড়। সকালেই ল্যান্ডফলের প্রক্রিয়া শেষ করে ধীরে ধীরে শক্তি হারাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় দানা। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সবথেকে বেশি পূর্ব মেদিনীপুরে। উপকূলবর্তী এলাকায় ৮০ থেকে ৯০ কিমি বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। নন্দীগ্রাম-খেজুরি-এগরায় ভাঙল গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি। আগামীকাল থেকে আবহাওয়ার উন্নতির সম্ভাবনার কথা জানাল হাওয়া অফিসের।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।