অলোক সাঁতরা এবং সোমনাথ দাস, পশ্চিম মেদিনীপুর: পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Midnapore) গোয়ালতোড় রেঞ্জে হাতির হানায় (Elephants) মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। পুলিশ সূত্রে খবর, ২টি হাতি দুধ পাথরি গ্রামে ঢুকে পড়ে। তার মধ্যে ছিল রামলাল নামে শান্ত স্বভাবের বিশালদেহী একটি হাতি (Elephants)। গ্রামবাসীরা খেদানোর জন্য বাঁশ, লাঠি নিয়ে তাড়া করে ওই হাতিটিকে। গ্রামবাসীরা উত্যক্ত করায় হাতিটি আচমকা ঘুরে দাঁড়ায়। সে সময় সামনে পড়ে যান গ্রামের বাসিন্দা মাধব মল্ল। হাতিটি শুঁড়ে জড়িয়ে তাঁকে আছাড় মারলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে হাতিটি জঙ্গলের দিকে চলে যায়।
শুক্রবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় থানার অন্তর্গত দুধপাথরি গ্রামে প্রবেশ করেছিল বিশাল দেহি হাতি রামলাল। বিশাল এই দাঁতাল হাতিটি শান্ত স্বভাবের বলেই পরিচিত। সে নিয়েই গ্রামে প্রবেশ করার পর বহু কৌতুহলীরা তাকে নিয়ে লেজ টেনে উত্তপ্ত করছিল। দীর্ঘক্ষণ এমন চলার পর উত্তেজিত হাতিটি হঠাৎ বাঁক নিয়েই পেছনে থাকা এক বৃদ্ধকে আছড়ে মারল সকলের সামনে। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় বছর ৫৫-র মাধব মল্ল নামে ওই বৃদ্ধের। বিশাল দেহী এই হাতিটি বেশ কয়েক বছর ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড় গ্রামের জঙ্গলমহলে ঘুরে বেড়াচ্ছে।শান্ত স্বভাবের দাঁতাল এই হাতির নাম জঙ্গলমহলের বাসিন্দারা দিয়েছেন "রামলাল"। দল বিচ্ছিন্ন এই হাতিটি যখন তখন বিভিন্ন এলাকাতে প্রবেশ করে খাবারের খোঁজে। দল বিচ্ছিন্ন এই হাতিটি শান্ত স্বভাবের হওয়ায় তাকে উত্তপ্ত করতে কম করেননি কেউই। মৃতের ছেলে অশ্বিনী মল্ল জানান, তার বাবা একটি দোকানে বিড়ি কিনতে যাচ্ছিলেন। তখনই ওই দুর্ঘটনা ঘটে। ইতিমধ্যেই হাতির হামলার মৃত্যুর ঘটনায় সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করেছে মৃতের পরিবার। এবং বন দফতরের তরফে ৭৫ শতাংশ ক্ষতিপূরণের দ্রত তোড়জোড় করা হচ্ছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ হাতিটি প্রবেশ করেছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের রূপনারায়ণ ডিভিশনের গোয়ালতোড় থানার অন্তর্গত দুধপাথরি গ্রামে। গ্রামে প্রবেশ করতেই বহু মানুষ তার পিছনে ভিড় করে। তার সঙ্গে ঢিল ছোঁড়া লেজ ধরে টানা সবই চলছিল। একটি সময়ের পর বিরক্ত হয়ে যাওয়া হাতিটি হঠাৎ বাঁক নিয়ে আক্রমণ করে উত্তপ্তকারীদের। পেছনেই থাকা মাধব মল্ল নামে এক প্রৌঢ়কে শুঁড়ে তুলে আছড়ে পিষ্ট করে মেরে ফেলা সেখানেই। হাতিকে কোনও ভাবে তাড়িয়ে ওই বৃদ্ধকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে গেল চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার পর আতঙ্ক তৈরি হয়েছে ওই এলাকায়। তবে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি বন কর্তারা।
আরও পড়ুন, 'বিপর্যয়ের ক্ষতিপূরণ ১০ লক্ষ টাকা হওয়া উচিত', 'মাননীয়া'-কে একাধিক প্রশ্ন শুভেন্দুর
সম্প্রতি হাতির তাণ্ডবে একাধিক জায়গায় চাষের জমির ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তবে এই ক্ষেত্রে শুরুটা তেমনটা ছিল না। জাান গিয়েছে, প্রথমে গোয়ালতোড় রেঞ্জে ওই রামলাল নামে বিশালদেহী হাতিটি শান্ত স্বভাবেরই ছিল। কিন্তু আচমকাই পরিস্থিতি বদলে যায়। হাতিটি শুঁড়ে জড়িয়ে মাধব মল্লকে আছাড় মারলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। বন দফতর সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে মেদিনীপুর ডিভিশনে ৪০ থেকে ৫০টি হাতি রয়েছে।সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে দফায় দফায় হাতির দল এসে উপস্থিৎ হয় বাঁকুড়া জেলায় । বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকে দ্বারকেশ্বর নদ পেরিয়ে সোনামুখী , বেলিয়াতোড় হয়ে হাতির দলটি হাজির হয় বড়জোড়া রেঞ্জে । বর্তমানে বড়জোড়া রেঞ্জের উত্তর সরাগড়ার জঙ্গলে ৩৬ টি , দক্ষিন সরাগড়ার জঙ্গলে ৫ টি, বেলিয়াতোড় রেঞ্জের রসিকনগরের জঙ্গলে ১ টি, সোনামুখী রেঞ্জের করঞ্চমনি খয়রাশোলের জঙ্গলে ১ টি ও ভূলার জঙ্গলে ১ টি মিলিয়ে বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগে মোট ৪৪ টি হাতি রয়েছে।