হিন্দোল দে, কলকাতা: পুলিশের (Police) মারধরে যুবকের মৃত্যুর (youth death) অভিযোগ উঠল খাস কলকাতায়। গল্ফ গ্রিন থানার (Golf Green Police Station) বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন দীপঙ্কর সাহা নামে এক যুবকের পরিবার। আজ ভোরে এম আর বাঙুর হাসপাতালে (MR Bangur Hospital) মারা যান দীপঙ্কর। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গলফ গ্রিন থানার পুলিশের মারে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করছে লালবাজার।


যুবকের মৃত্যু ঘিরে বিতর্ক


অঝোরে কাঁদছেন মা। মুখে একটাই কথা, 'আমার ছেলেকে মেরে দিল'।


রাজ্যে ফের পুলিশের মারধরে মৃত্যুর অভিযোগ! যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল গল্ফগ্রিন থানার পুলিশের বিরুদ্ধে! বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করল লালবাজার। 


মৃত দীপঙ্কর সাহার পরিবারের সদস্যদের দাবি, গত ররিবার দুপুর ২টোর সময় দীপঙ্করকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ি থেকে নিয়ে যায় গল্ফগ্রিন থানার পুলিশ। অভিযোগ, রাত ৯টার সময় দীপঙ্করকে গুরুতর আহত অবস্থায় আজাদগড় মোড়ে ফেলে রেখে দিয়ে চলে যায় তারা। 


পরিবারের দাবি, এরপর থেকে অসুস্থই ছিল দীপঙ্কর। পরিবারের সদস্যদের তরফে, পুলিশের মারের প্রমাণ বলে অভিযোগ করে যে সমস্ত ছবি সামনে আনা হয়েছে তা শিউরে ওঠার মত।


মৃতের দিদি নেহা বারুইয়ের কথায়, 'পুলিশ ওকে নিয়ে গিয়ে এমন মেরেছে, ও ওই কারণে মারা গেছে। আমরা শাস্তি চাই।'


পরিবারের সদস্যদের দাবি, বুধবার দীপঙ্কর অসুস্থ বোধ করায়, তাঁকে নিয়ে যাওয়া শিশুমঙ্গল হাসপাতালে। প্রাথমিক চিকিৎসায় ধাতস্থ হতে, রাতে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয় তাঁকে। কিন্তু, বৃহস্পতিবার রাতে ফের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।


পুলিশি অত্যাচারের কারণেই দীপঙ্করের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ ও পরিবার সূত্রেও একথা মেনে নেওয়া হয়েছে যে, দীপঙ্কর কিন্তু মাদকাসক্ত ছিলেন। ঘটনাটি ঘিরে বিতর্কের রেশ চরমে। পরিবারের তরফে এদিনই পুলিশ কমিশনার ও ডিসি সাউথ সাবার্বান ডিভিশনে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। 


গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে লালবাজার। লালবাজার সূত্রের খবর, রবিবার দুপুর ২টোর সময় থানায় নিয়ে যাওয়ার তথ্য সঠিক নয়। দীপঙ্করকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় রবিবার রাত ১০.২৬ মিনিটে। আধঘণ্টা পরে দীপঙ্কর-সহ ৫ জনকে ছেড়েও দেওয়া হয়। থানার সেই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে লালবাজার। 


আরও পড়ুন: Malda: ডিউটির লাঠি দিয়েই স্ত্রীর উপর অত্যাচার, খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ পুলিশকর্মী স্বামীর


লালবাজার সূত্রে দাবি, দীপঙ্করকে ছেড়ে দেওয়ার সময় তাঁর গতিবিধি স্বাভাবিকই ছিল। দীপঙ্করের শরীরে যে আঘাতের চিহ্ন আছে, তা প্রাথমিকভাবে দেখে মনে হচ্ছে নতুন আঘাত। গত রবিবারের নয়। থানার বাইরে কোথাও মারধর করা হয়েছিল কি না, তাও দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি শারীরিক পরীক্ষার জন্য ৩ সদস্যের মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়ার। 


লালবাজারের আশ্বাস, ময়নাতদন্তে যদি কোনও রকম পুলিশের ভূমিকা থাকার প্রমাণ মেলে, তাহলে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।