শাল্মলি বসু, কলকাতা: স্কুল থেকে একাধিক বিষয়ের সঙ্গে পরিচয় ঘটে। একটা ধাপের পর বেশ কিছু বিষয় বেছে নেওয়ার সুযোগও আসে। তবে সেই সব স্তর পেরিয়ে প্রতিযোগিতামূলক বা সরকারি চাকরির পরীক্ষায় আবারও পড়তে হয় সেই বিষয়গুলি। যার মধ্যে অন্যতম ভূগোল। এমন এক বিষয় পড়লে বা জানলে পারিপার্শ্বিক বিষয় সম্পর্কেও ধারনা পেতে পারি। WBCS পরীক্ষায় যা অন্যতম একটি বিষয়। এবিপি লাইভে WBCS প্রিলিমসে ভূগোলের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করলেন ২০১৮ সালে WBCS পরীক্ষায় তৃতীয় স্থানাধিকারী বর্তমানে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে কর্মরত অভিরূপ ভট্টাচার্য।
সিলেবাসের অংশ: প্রিলিমসে মূলত ভারতের ভূগোলের (Indian Geography) অংশই থাকে। এর মধ্যে কৃষি, খনিজর উৎস, শিল্প, কৃষি ক্ষেত্রে শিল্প, জনসংখ্যার মতো বিষয় থাকে। ভারতের ফিজিওগ্রাফি বিভাগ, রাজনৈতিক বিভাগ, অর্থনৈতিক বিভাগ নদী, কৃষি, মাটি, জলবায়ু। পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতের মানচিত্রও খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশের ক্ষেত্রে ভারত এবং পশ্চিমবঙ্গ- দুটোই WBCS-এর প্রিলিমসে ভূগোলের সিলেবাসের অংশ।
গুরুত্বপূর্ণ অংশ: মানচিত্র অনুযায়ী ভারতের অবস্থান, জলবায়ু, ভারতের বিভিন্ন অংশে জঙ্গল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষির বৈচিত্র কেমন, অর্থাৎ কোন রাজ্যে কেমন ফসল হয় সেটা পড়তে হবে। রাজ্য ভিত্তিতে খনিজের উৎস, শিল্প, কোন রাজ্যে জনসংখ্যার হার কেমন তাও পড়তে হবে।
মানচিত্রের গুরুত্ব কতটা?
মানচিত্র শুধুই গুরুত্বপূর্ণই নয়, এটা বাধ্যতামূলক। দুভাবে আমরা পড়তে পারি। যেমন, গতানুগতিকভাবে তথ্য সংগ্রহ করলাম। কিছু মুখস্থ করলাম এবং পরীক্ষা দিতে চলে গেলাম। কিন্তু এটা কখনই ঠিক প্রস্তুতি নয়। কারণ এটা করলে পড়া মনে রাখার সম্ভাবনা খুবই কম। কোনও জায়গার ভৌগলিক অবস্থান বুঝতে পারলে সেটা ইতিহাসের সঙ্গে রিলেট করা যাবে। তাই ম্যাপ পয়েন্টিং করে প্রস্তুতি নেওয়া খুব প্রয়োজন। যাঁরা খুব ঘুরতে ভালবাসেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ভূগোল কিন্তু কোনও বিষয় নয়। এটা কিন্তু খুব আনন্দের এবং বিভিন্ন জায়গাকে জানার হাতিয়ার হতে পারে। যে কোনও ভ্রমণমূলক বইতেও দেখা যায়, যে ম্যাপের মাধ্যমে জায়গার অবস্থান বোঝানো হয়েছে। ফলে ম্যাপ পয়েন্টিং করতেই হবে ভূগোল পড়ার সময়।
কীভাবে মানচিত্রকে সঙ্গে নিয়ে পড়া যাবে?
যারা এখন স্কুলে বা কলেজে পড়ে, তারা এখন থেকেই ম্যাপ সংক্রান্ত এই অভ্যাস তৈরি করলে সিভিল সার্ভিসের প্রস্তুতির জন্য অনেকটা এগিয়ে যাবে। যারা সিভিল সার্ভিসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা মাধ্যমিক স্তরের অ্যাটলাস থেকে ফিজিক্যাল, পলিটিক্যাল, কৃষি এবং খনিজ উৎসের ম্যাপ প্র্যাক্টিস করতে হবে। এই চারটি ম্যাপ সমাধান করে, দেওয়ালে টাঙিয়ে রাখলে সব সময় চোখে পড়বে, কোথায় কোন জায়গা, বা কোথায় কোন খনিজের উৎস, কোথায় কোন ফসল বেশি বা কম হয়- এই সব কিছু সম্পর্কেই সম্মোখ ধারণা থাকলে। এইভাবে পড়লে ভূগোল প্রতি ভীতি তো কেটে যাবেই পাশাপাশি বিষয়টার প্রতি ভাললাগা তৈরি হবে।
MCQ-র জন্য বিশেষ প্রস্তুতি: প্রিলিমসের জন্য প্রথমেই ম্যাপটা দেখে নিতে হবে। পড়ার পর প্রতিটি অংশ ধরে প্রশ্ন সামাধান করা যেতে পারে। দুটো, চারটে বই থেকে পড়লেই হবে না, সেই সংক্রান্ত MCQ সমাধান করতে হবে। ম্যাপ থেকে শুধু তথ্য সংগ্রহই নয়, পড়ার সময় এতটাই মনযোগী হতে হবে যে চোখ বন্ধ করলেই গোটা ম্যাপটাই যেন চোখের সামনে দেখা যায়। যে তথ্য, পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে সেটা লিখে, রিভিশন করতে থাকলে মনে রাখা সহজ হবে। ওয়ান লাইনারও পড়তে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, প্রশ্নটা পরিচিত নয়, কিন্তু বিষয়টা সম্পর্কে ধারণা স্বচ্ছ থাকলে যে কোনও প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব।
পড়ুয়াদের জন্য বিশেষ টিপস: প্রথমেই মনে রাখতে হবে, ভূগোল কিন্তু এটা বিজ্ঞানসম্মত বিষয়। একইসঙ্গে ইন্টারেস্টিং। অনেকেই মাধ্যমিক স্তরের পর আবার সিভিল সার্ভিসের প্রস্তুতি পর্বে ভূগোল পড়েন। তাঁদের জন্য বলব বই দিয়ে পড়া শুরু না করে, তাঁরা যদি ভ্রমণমূলক কোনও বই পড়েন, তাহলে আগ্রহ বাড়বে। ম্যাপ পয়েন্টিংয়ের মাধ্যমে পড়লে দ্রুত ধারণা স্বচ্ছ হবে। শুধু মোটা বই না পড়ে, আগের বছরের প্রশ্নগুলি দেখে নেওয়ার পরামর্শ দেব। পরীক্ষায় কী ধরণের প্রশ্ন আসছে সেটা দেখলে নিজের মতো করে পড়ার সময়, পড়ার প্যাটার্ন তৈরি করে নেওয়া যাবে। কন্যকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত যে বৈচিত্র, তা নিয়ে আগ্রহ তৈরি করলেই পড়াটা অনেক সহজ হবে।
আরও পড়ুন: WBCS Exam Preparation: স্বচ্ছ ধারণা থাকলেই বাজিমাত! WBCS-এ কীভাবে ইকোনমিকস, পলিটির প্রস্তুতি?
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI