Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMIজুতো সেলাই করে সংসার সামলে উচ্চমাধ্যমিকে দারুণ সাফল্য, উচ্চশিক্ষার জন্য সরকারি সাহায্যের আশা মালদার মেধাবি ছাত্রর
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ | 17 Jul 2020 10:10 PM (IST)
কিন্তু এভাবে পড়াশোনা চালানো যে খুবই কঠিন, তা জানে সঞ্জয়। কিন্তু সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার অদম্য আগ্রহই তাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। পড়াশোনা যেভাবেই হোক চালিয়ে নিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সে।
কলকাতা :লকডাউনে সংসারের হাল ধরতে জুতো সেলাইয়ের কাজে নেমে পড়তে হয়েছিল তাকে। মালদার এই মেধাবী ছাত্রকে এখনও সেই কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। এরইমধ্যে উচ্চমাধ্যমিকের ফল বেরিয়েছে। দারুণ রেজাল্ট করেছে সঞ্জয় রবিদাস। তবে বাংলা ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের নম্বর আশানুরূপ হয়নি তার কাছে। এই দুটি বিষয়ে রিভিউ করতে চায় সে। সবমিলিয়ে ৪৫১ নম্বর নিয়ে কলা বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছে সে। ছেলে ভালো রেজাল্ট করলেও বুক কাঁপছে সঞ্জয়ের মায়ের। সঞ্জয়ের ইচ্ছে, ইংরেজি বা ইতিহাস নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করার। বড় হয়ে অধ্যাপনার স্বপ্ন তার চোখে। কিন্তু বাধ সেধেছে আর্থিক সামর্থ্য। হত দরিদ্র পরিবারের সন্তান সঞ্জয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বা রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আগ্রহী। কিন্তু সেজন্য বাড়ির বাইরে থাকতে হবে। তখন অর্থোপার্জনের কাজ তো আর সামলাতে পারবে না। সেইসঙ্গে রয়েছে থাকা ও খাওয়ার খরচ। তাই আপাতত সেই ইচ্ছে মুলতুবী রেখে বাড়ির কাছাকাছি কোনও কলেজে পড়ার পরিকল্পনা করছে। যাতে কাজের পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এভাবে পড়াশোনা চালানো যে খুবই কঠিন, তা জানে সঞ্জয়। কিন্তু সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার অদম্য আগ্রহই তাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। পড়াশোনা যেভাবেই হোক চালিয়ে নিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সে। লকডাউনের কারণে এবারের উচ্চমাধ্যমিকে একটি বিষয় ভূগোলের পরীক্ষা দিতে পারেনি সঞ্জয়। তার মা জমিতে নিড়ানির কাজ করে সংসার চালাতেন। কিন্তু লকডাউনে সেই কাজ বন্ধ হওয়ায় আটান্তরে পড়ে পরিবার। মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের কনুয়া বাজারের মোড়ে অস্থায়ীভাবে জুতো সেলাইয়ের কাজ শুরু করে কনুয়া ভবানীপুর হাইস্কুলের ফার্স্ট বয়। সেই কাজ এখনও চালিয়ে যেতে হচ্ছে তাকে। লকডাউনে মেধাবি ছাত্রের পরিবারের দুরবস্থার খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় কিছু সরকারি সাহায্য পেয়েছিল সঞ্জয়ের পরিবার। পরবর্তী পর্বের পড়াশোনার জন্য সরকারি সাহায্যের আশা করছে মেধাবি এই ছাত্র। সঞ্জয় বলেছে, সরকারি কোনও সাহায্য পেলে খুবই ভালো হত। পরিস্থিতি কিছুটা সহজ হত। ২০১৮ সালে প্রথম দুরন্ত রেজাল্ট করে গোটা স্কুলের নজর কেড়েছিল সঞ্জয়। উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষাতেও প্রথম হয় সে। ২০০৩ সালে সঞ্জয়ের বাবা মারা যান। ছোটবেলায়ও জুতো সেলাই করেছে সঞ্জয়। অভাব অনটনের সংসারে গত ৭-৮ বছর ধরে সঞ্জয় জুতো সেলাই করে মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে। সংসার টানার পাশাপাশি পড়াশোনাও করছে।