দিল্লি : সুযোগ পাননি, তাই নিজের স্বপ্নকে ছেড়ে দিয়েছেন, ভুলে গিয়েছেন স্বপ্নের পথে যাত্রা। এমন মানুষ চারপাশে অনেক। কিন্তু, স্বপ্নের পথে মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে পারে ক'জন ? কঠোর পরিশ্রম আর দৃঢ় সংকল্পে যত কঠিনই নিজের স্বপ্ন হোক না কেন, স্বপ্নকে বাস্তুবায়িত করা যায়। দিল্লির সৌম্যা শর্মা যেন এরই দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন। নিজেই গড়েছেন নিজের দুনিয়া। স্বপ্নকে ছেড়ে দেননি এক মুহূর্তের জন্য। আর তাই দেশের সমস্ত সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার্থীর কাছে আজ তিনি আইকন। কে এই সৌম্যা শর্মা ? কী তাঁর জীবন-সংগ্রাম ?


কেমন ছিল শৈশব ?


সৌম্যা শর্মার বাবা-মা দু'জনেই ছিলেন ডাক্তার। ১১ বছর বয়স থেকেই তাঁর শ্রবণশক্তি নষ্ট হতে শুরু করেছিল। তারপর ধীরে ধীরে ১৬ বছর বয়সে সম্পূর্ণভাবে বধিরতা গ্রাস করে তাঁকে। বহু চিকিৎসা হয়েছে, ওষুধপত্র চলেছে অনেক অনেক দিন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে একটি হিয়ারিং এইড ব্যবহার করতে হয় সৌম্যাকে।


পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া


স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে ন্যাশনাল ল স্কুলে ভর্তি হন সৌম্যা। আইন নিয়ে স্নাতক উত্তীর্ণ হওয়ার পর দিল্লি হাইকোর্টে সৌম্যা আবেদন করেন যাতে সেখানে শারীরিক বিশেষভাবে সক্ষম কোটায় শ্রবণ প্রতিবন্ধকতাও যোগ করা হয়। চিঠি লিখে আবেদন করেছিলেন সৌম্যা। বলা যায়, এটা তাঁর জীবনে অন্যতম সাহসী পদক্ষেপ ছিল। অবশেষে তৎকালীন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি রাজিও হন এই প্রস্তাবে এবং সেই থেকেই শ্রবণে বিশেষভাবে সক্ষমরা সংরক্ষণ পেয়ে আসছেন।



সাফল্য এল


মাত্র ১৬ বছর বয়সেই শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল সৌম্যার। প্রায় কিছুই শুনতে পেতেন না তিনি। এক অর্থে শারীরিক প্রতিকূলতা ছিল তাঁর। কিন্তু কখনও এক মুহূর্তের জন্য হেরে যাওয়ার মানসিকতা মনে আনেননি তিনি। পড়াশোনা থেমে যায়নি এক মুহূর্তের জন্য। আর কঠোর পরিশ্রমে মাত্র ২৩ বছরেই দেশের অন্যতম কঠিন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা UPSC উত্তীর্ণ হন নয়াদিল্লির সৌম্যা শর্মা। ২০১৭ সালে সর্বভারতীয় স্তরে ৯ র‍্যাঙ্ক অর্জন করেন সৌম্যা, কোনও রকম কোচিং ছাড়াই মাত্র ৪ মাসের প্রস্তুতিতে একবারেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চমকে দিয়েছেন সৌম্যা।


সংরক্ষণ নিতে চাননি


সৌম্যা শর্মা নিজে শ্রবণে ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সক্ষম হলেও, পরীক্ষার ফর্ম ফিলআফের সময় তিনি কোনওভাবেই বিশেষভাবে সক্ষম হিসেবে পরীক্ষা দেননি। নিজের যোগ্যতায় একজন সাধারণ পরীক্ষার্থী হিসেবেই ইউপিএসসি উত্তীর্ণ হন সৌম্যা।


আরও পড়ুন: NEET Success Story: রাত জেগে পড়া আর দিনে দিনমজুরি, কঠোর পরিশ্রমে ভাগ্য বদলেছেন কাশ্মীরের উমর


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI