কলকাতা: গ্রীষ্মের দুপুর। টেস্ট পেপারে দিন যাপন। টেনশনে বুক দুরু-দুরু। আর লাস্ট মিনিট পিপারেশনের ভয়ে হঠাৎ পেট ব্যথা। আজ থেকে শুরু হল মাধ্যমিক পরীক্ষা। ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনে প্রথম বোর্ড পরীক্ষা। এই লক্ষ্মণ-রেখা পার করলেই তো মাধ্যমিকের বাধ্য ছাত্র-ছাত্রীর একধাপ পেড়িয়ে দুম করে বড় হয়ে যাওয়া মরশুম শুরু। তাই না? কাজেই এক রাশ ভয় নয়, নতুন পথ চলার এই গণ্ডি পেরোনো যাক খোশমেজাজে। গোটা বছরের পড়াশোনা তো রইলই শুধু এই কয়েকটা টিপস মাথায় রেখে পরীক্ষার হলে যাওয়া যাক।


বিষয়- ভূগোল


শিক্ষক- ভাস্কর মৈত্র, হুগলি ব্রাঞ্চ (গভ:) স্কুল



ভূগোল নিয়ে অযথা ভয় না পেয়ে শেষ মুহূর্তে কোন কোন জায়গাগুলো আরেকবার অনুশীলন করতে হবে সেই পরামর্শ দিলেন হুগলী ব্রাঞ্চ (গভ:) স্কুলের শিক্ষক ভাস্কর মৈত্র। 


নম্বর বিভাজন (লিখিত ৯০+ প্রোজেক্ট ১০=১০০)


বিভাগ ক: ১৪টি মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন। পূর্ণমান ১৪ (এই বিভাগে কোনও অপশন নেই)
বিভাগ খ: ১ নম্বরের ২৬টি ছোট প্রশ্ন। এর মধ্যে ২২টির উত্তর দিতে হবে। পূর্ণমান ২২।
বিভাগ গ: ২ নম্বরের ৬টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে (সব প্রশ্নেই অপশন অর্থাৎ or থাকছে) পূর্ণমান ১২।
বিভাগ ঘ: ৩ নম্বরের ৪ টি প্রশ্ন। দুটো প্রাকৃতিক এবং দুটি আঞ্চলিক বিভাগ থেকে। (অপশন অর্থাৎ or থাকছে) পূর্ণমান ১২।
বিভাগ ঙ: প্রাকৃতিক থেকে ৪টি প্রশ্নে থাকবে, যার মধ্যে লিখতে হবে ২টি (পূর্ণমান ৫+৫=১০)
আঞ্চলিক বিভাগ থেকেও ৪টি প্রশ্ন থাকবে, যার মধ্যে লিখতে হবে ২টি (পূর্ণমান ৫+৫=১০)
থাকছে কম্পালসারি ম্যাপ পয়েন্টিং। (পূর্ণমান ১০)


খাতা পেয়েই পরীক্ষার্থীর নাম, রোল নম্বর এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখে ফেলতে হবে। এ ক্ষেত্রে বারবার মিলিয়ে নিতে রোল এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর যেন কোনও ভুল না হয়। 


ছবি আঁকায় গুরুত্ব 
মনে রাখতে হবে ভূগোলে ছবি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। সে ক্ষেত্রে প্রশ্নের উত্তর লেখার পাশাপাশি ছবি আঁকায় জোর দিলে নম্বর ভাল হবে। বই-এর মতো হুবহু আঁকার প্রয়োজন নেই। বিষয়টি বুঝে নিয়ে সঠিকভাবে উপস্থাপন করলেই নম্বর মিলবে। একসঙ্গে শুরুতে বা শেষে না এঁকে, সংজ্ঞার পাশেই সংশ্লিষ্ট চিত্র আঁকতে হবে। এতে যাঁরা খাতা দেখবেন তাঁদের বুঝতে সুবিধে হবে। 


পাঠ্যবই পড়লেই সহজ হবে বিভাগ ক এবং বিভাগ খ-এর ছোট প্রশ্নের উত্তর দেওয়া। প্রাকৃতিক বিভাগে যেহেতু খুবই সংক্ষিপ্ত সিলেবাস, সে কারণে এই বিভাগের জন্য সম্পূর্ণ পাঠ্য বইটিই পড়তে হবে পরীক্ষার্থীদের। 


বড় প্রশ্নের জন্য



  • নদীর ক্ষয়কার্যে ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ

  • নদীর ক্ষয়কার্যের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ

  • হিমবাহ দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ

  • পূর্ব উপকূলের সমভূমি এবং পশ্চিম উপকূলের সমভূমির পার্থক্য

  •  উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদ-নদীর পার্থক্য 

  • পূর্ব ও মধ্য ভারতে লৌহ ইস্পাত শিল্পের কেন্দ্রীভবনের কারণ

  • পশ্চিম ভারতে পেট্রো রসায়ণ শিল্পের কেন্দ্রীভবনে কারণ

  • ভারতে নগর গড়ে ওঠার কারণ

  • পরিবহণ ব্যবস্থার গুরুত্ব 


সাজাব যতনে



  • নীল আর কালো কালি ব্যবহার করে উত্তরের পয়েন্টিং

  • দুটো কালি ব্যবহারের সুযোগ না থাকলে ফাঁকা ফাঁকা করে লিখতে হবে

  • যাঁদের হাতের লেখা ধীর, তাঁদের অবশ্যই একাধিক কালি ব্যবহারের ঝুঁকি না নিয়ে একটি পেন দিয়েই পরীক্ষা দেওয়ার পরামর্শ

  • খাতা পরিষ্কার রাখতে হবে

  • অতিরিক্ত কাটাকুটি এড়িয়ে চলতে হবে

  • কোনও উত্তরে ওভাররাইট না করে নতুন করে শুরু লাইন শুরু করতে হবে।

  • সঠিক দাগ নম্বর দিয়ে লিখতে হবে


কোন উত্তর আগে, কোনটা পরে


প্রশ্নপত্র পড়ার জন্য নির্ধারিত ১৫ মিনিটেই দেখে নিতে হবে কোন কোন প্রশ্নগুলো লিখবে পরীক্ষার্থীরা। এ ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর ভাল করে পড়ে নিতে হবে। এরপর গ, ঘ, ঙ অর্থাৎ যেই বিভাগে প্রশ্নের অপশন রয়েছে সে গুলোয় কোনটা করবে আগে থেকেই মার্ক করে নিতে হবে। 


খাতা পাওয়ার পরই প্রথমেই বিভাগ ক এবং বিভাগ খ লিখে নিতে হবে। এই বিভাগে সবচেয়ে কম সময়ে বেশি নম্বর তোলার সুযোগ রয়েছে অনায়াসেই। ক বিভাগে ১৪  এবং খ বিভাগে ২২ নম্বরের প্রশ্ন থাকে অর্থাৎ ৯০ নম্বরের মধ্যে এখানেই চটজলদি ৩৬ নম্বর তুলে ফেলতে পারে ছাত্র-ছাত্রীরা। পরীক্ষার শুরুতেই এই নম্বর শেষ করে ফেললে চিন্তা কমিয়ে ফেলা যাবে অনেকটাই। ফলে পরের বড় প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় মিলবে।


ম্য়াপ পয়েন্টিং
শেষ মুহূর্তে অভ্যাস করে নিতে হবে ম্যাপ পয়েন্টিং। হবে ম্যাপের মধ্যে রোল এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখতে ভুললে চলবে না। প্রশ্নের নম্বরও লিখতে হবে ম্যাপে।


বোনাস টিপস
সব প্রশ্নের উত্তরই লিখে আসাক চেষ্টা করতে হবে। পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই শারীরিক সুস্থতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ভয়ের কারণ নেই। সারা বছরের পরিশ্রম কখনই বৃথা যাবে না। হলে ঢুকে প্যানিক নয়। মনে রাখাতে হবে যা পড়া হয়েছে তা থেকেই প্রশ্ন আসবে। পরীক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাই ভাল ফলাফলের চাবিকাঠি।


লাস্ট মিনিট টিপস সাজেশন মাত্র।  বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের পরামর্শ পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে। তবে একইসঙ্গে নিজস্ব প্রস্তুতি ও আত্মবিশ্বাসের উপর আস্থা রাখতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। শুভেচ্ছা


আরও পড়ুন: Madhyamik Exam 2022: ভয়-ভীতি কাটালেই বাজিমাত, মাধ্যমিকের ভৌতবিজ্ঞান পরীক্ষা নিয়ে রইল খুঁটিনাটি


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI