একাগ্রতা আর কঠোর পরিশ্রম। সাফল্য পেতে এর কোনও বিকল্প নেই। সাফল্যের শীর্ষস্তরে পৌঁছতে নেই কোনও শর্টকার্ট। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের মুখেই নানা সময়ে উঠে এসেছে এই কথা। প্রতিযোগিতা যেখানে চরম, সেখানে সফল হতে যে পরিশ্রমের চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছতে হবে তা আর নতুন কী ! আর সেই প্রতিযোগিতার নাম যদি হয় IAS,তাহলে প্রস্তুতির জন্য পরিশ্রম ঠিক কতটা হতে হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে কি ? তবে, নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে IAS-র দরজা পেরোতে সফল হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের নিজমুখে সে লড়াইয়ের গল্প শুনলে কঠিন রাস্তাটা সুগম হয়ে যেতে পারে। আজ থাকল IAS পুষ্পলতার সংগ্রাম কাহিনি।


বাড়িতে মেয়ে বড় হলে আজও আমাদের সমাজে মেয়ের বাবা-মাকে শুনতে হয় বিয়ে দিয়ে দেওয়ার কথা। আজও সংসার, সন্তান সামলে স্বনির্ভর হতে মেয়েদের হাজারো বাধার সম্মুখীন হতে হয়। সেসব বাধা পেরিয়ে লড়াইয়ে জয় এলে তার তৃপ্তি যে কী তা সেই লড়াকু নারীই জানেন। আর তাঁর লড়াই অনুপ্রেরণা জোগায় তাঁরই মতো লড়াইয়ের ময়দানে থাকা হাজারো মেয়েকে। শুধু মেয়েরাই বা কেন ? এই লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা পান অন্যরাও- প্রতিযোগিতার ময়দানে রয়েছেন যাঁরাই। 


পুষ্পলতা। হরিয়ানার রেওয়াড়ি খুশবুরা নামে ছোট্ট এক গ্রামের বাসিন্দা। গ্রামের পাশের স্কুলে পড়াশোনা শুরু। তবে সব সুযোগসুবিধা এলাকায় না থাকার কারণে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে আগের পড়াশোনা চালিয়ে যান। MBA করেন। তারপরে এক প্রাইভেট কম্পানিতে চাকরি নেন। ২০১১ সালে বিয়ে হয় পুষ্পলতার। মানেসারে চলে যান তিনি।  


সংসার জীবন শুরু হয়। বিয়ের পরেই তিনি ভেবেছিলেন IAS পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার কথা। না, সম্যক ধারণা ছিল না। ছিল একটা ইচ্ছে। আলাদা কিছু করার ইচ্ছে। সঠিক অর্থে জীবন অতিবাহিত করার ইচ্ছে। পাশে পেয়েছিলেন পেশায় চিকিৎসক স্বামীকে। পুষ্পলতার এগিয়ে যাওয়ার পিছনে সবটুকু সহযোগিতা ছিল যাঁর। সবসময় সাপোর্ট দিয়ে গিয়েছেন পুষ্পলতাকে। 


লড়াইটা সত্যিই কঠিন ছিল। কারণ প্রায় বছর পাঁচেক বই আর পড়াশোনার জগৎ থেকে দূরে ছিলেন পুষ্পলতা। সঙ্গে শিশুসন্তানের দেখভাল। IAS-এর মতো পরীক্ষা। আর সেই পরীক্ষায় সফল হওয়া। বজ্রকঠিন মানসিক দৃঢ়তা নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেন পুষ্পলতা। পাশে পেয়েছিলেন  শ্বশুরবাড়ির লোকজনকেও। প্রয়োজনমতো পড়াশোনা যাতে চালিয়ে যেতে পারেন তিনি, তার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন যাঁরা।


ছেলেকে স্কুলে পাঠানোর আগে সকালে ঘণ্টাদুয়েক পড়তেন। তারপরে ছেলেকে স্কুলে পাঠিয়ে আবার শুরু করতেন পড়াশোনা। ছেলে স্কুল থেকে ফিরে এলে তাকে সঙ্গ দিতেন। সন্ধেয় আবার পড়তেন কিছুক্ষণ। ছোট্ট ছেলে, কিন্তু সেও কখনও পড়াশোনার সময় মাকে বিরক্ত করেনি- শেয়ার করেছেন পুষ্পলতা। 


২০১৭ সালে লড়াই সফল হয় পুষ্পলতার। গোটা দেশে সফল-তালিকায় তাঁর নাম ছিল ৮০ নম্বরে। 


পুষ্পলতার পরামর্শ


১. কোচিংয়ের সুবিধা না থাকলেও ঘাবড়ানোর কিছু নেই। ইন্টারনেটের দৌলতে হাতের কাছে সবকিছু। প্রয়োজনমতো সদ্ব্যবহার করে প্রিলিমিনারি থেকে ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে। 


২. সঠিক ও উপযুক্ত প্ল্যানিং আগেভাগেই করে ফেলতে হবে। মন থেকে কোনও কিছু চাইলে তা পাওয়া যায়- এই বিশ্বাসে ভর করে একাগ্রচিত্তে এগোতে হবে। 


৩. যখনই সুযোগ পেয়েছেন বই নিয়ে বসে পড়তেন পুষ্পলতা। তাঁর পরামর্শ, সমস্যা হাজারো থাকবে। তবে তাতে বেশি আমল না দিয়ে লক্ষ্যভেদকে পাখির চোখ করে এগিয়ে যেতে হবে। 


তথ্যসূত্র - এবিপিলাইভ হিন্দি


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI