Anshuman Raj Success Story: দেশের সবথেকে কঠিন পরীক্ষাগুলির মধ্যে একটি UPSC। বহু ছাত্র-ছাত্রীর স্বপ্ন থাকে এই পরীক্ষা পাশ করে সম্মানীয় IAS বা IPS হওয়ার। কিন্তু পথ সহজ নয়। সাফল্যের পথ সহজ ছিল না কখনই। আর এই কঠিন পথের বাধা পেরিয়ে, সকল কাঁটা ধন্য করে যাঁরা সফল হন, তাঁদের নিজস্ব কিছু না কিছু কাহিনি থাকে। যেমন রয়েছে অংশুমানেরও। আইএএস অংশুমান রাজ। একসময় বাড়িতে যাকে পড়তে হত কেরোসিনের আলোয়, তিনিই আজ দেশের সকল উৎসাহী ছাত্রদের কাছে আলোর দিশারী।


বড় হয়ে ওঠা


বিহারে বড় হয়ে উঠেছেন অংশুমান। দেশের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের পরেই সবথেকে বেশি আইএএস পরীক্ষার্থী উঠে আসেন বিহার থেকে। কিন্তু চারপাশে এত উৎসাহীদের ভিড় দেখে ভাল চাকরি, সম্মানের চাকরির নেশাতে আইএএস হতে চাননি অংশুমান। দেশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা হিসেবে দেশসেবা করেন আইএএস অফিসারেরা। আর এত বিশাল স্বপ্ন দেখা কখনও তাঁর রক্তে ছিল না। ঘরে অভাব নিয়ে দুনিয়া জয় করার স্বপ্ন তাঁর মত বাস্তববাদী মানুষ কখনও ভাবেননি। সাফল্যের পরে এমনটাই জানিয়েছিলেন তিনি।


কেরোসিনের আলোয় পড়া


বিহারে এমন পরিবেশে বড় হয়ে উঠেছেন অংশুমান যেখানে জীবনের স্বাভাবিক চাহিদাগুলো সেভাবে পূরণ হত না। রাস্তাঘাট ভাল ছিল না, বিদ্যুৎ ছিল না ভালমত। বক্সার জেলার নওয়ানগর স্কুলে পড়ার সময় দিনের বেশিরভাগ সময়টাই কেরোসিনের আলো জ্বেলে পড়তে হয়েছে তাঁকে। দিনে মাত্র ৩-৪ ঘণ্টা আলো আসত গ্রামে, তাও খুব কম ভোল্টেজের। ফলে এই পরিস্থিতিতে কেরোসিনের আলো ছাড়া উপায় ছিল না।



সংসারের অভাব


অংশুমানের মা সংসার চালানোর জন্য সারাদিন কাজ করতেন। পেশায় তিনি একজন স্কুলের আংশিক সময়ের শিক্ষিকা ছিলেন। মাসে মাত্র ১৫০০ টাকা বেতন পেতেন। স্কুলের কাজ মিটিয়ে বাড়ি এসে তিনি নিজের একটি বিউটি পার্লার চালাতেন অতিরিক্ত কিছু টাকা উপার্জনের জন্য।


২০০২ সালে অংশুমানের বাবার চালের মিলে প্রচুর ক্ষতি হওয়ার পর থেকেই তাঁর মাকেই সংসারের ভার নিজের কাঁধে তুলে নিতে হয়। তাছাড়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কারণে অংশুমানের বাবা শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। ২০১৩ সালে স্নাতক উত্তীর্ণ হওয়ার পরে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ শুরু করেন অংশুমান। আর এই সময় বছরের ৬ মাস তিনি কাজে থাকতেন, আর বাকি ছয় মাস ভাইয়ের কাছে এসে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতেন। দিল্লিতে গিয়ে কোচিং নেওয়ারও সামর্থ্য ছিল না, আবার বাড়িতে একটা আলাদা জায়গাও ছিল না পড়াশোনার জন্য যেহেতু তাঁরা ৩০ জন সদস্য একই বাড়িতে থাকতেন।


চেষ্টা শুরু


২০১৬ সালে তিনি প্রথম UPSC প্রিলিমস উত্তীর্ণ হন, কিন্তু সেই বছর মেনস পরীক্ষা দিতে পারেননি। তবে ২০১৭ সালে দিল্লিতে গিয়ে প্রস্তুতি নিয়ে মেনস পরীক্ষা উত্তীর্ণ হন অংশুমান। তবে এখানেও কিছু ঘাটতি ছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে ফের একবার পুরো উদ্যমে প্রস্তুতি নিয়ে সমস্ত স্তরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন অংশুমান। ইন্ডিয়ান রেভিন্যু সার্ভিসের জন্য নির্বাচিত হন। কিন্তু তার ইচ্ছে ছিল IAS হবেন। আর তাই ২০১৯ সালে আরেকবার পরীক্ষা দিয়ে ১০৭ র‍্যাঙ্ক করেন তিনি।


আরও পড়ুন: Success Story: মাত্র দশ টাকাই ছিল বাবার আয়, দুরূহ অভাব পেরিয়ে আজ ৩০০০ কোটির কোম্পানির মালিক মুস্তাফা


Education Loan Information:

Calculate Education Loan EMI