কলকাতা: অর্থনীতির (Economics) মতো বিষয়ের সঙ্গে আমাদের প্রতিদিনের জীবন জড়িয়ে রয়েছে। এই বিষয়ের সঙ্গে কারোর পরিচয় ঘটে স্কুল-কলেজ স্তরে, কারোর আবার প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাতে। এই বিষয় গুরুত্বপূর্ণ সরকারি চাকরির পরীক্ষাতেও। ব্যতিক্রম নয় WBCS পরীক্ষা। এবিপি লাইভে WBCS- মেনসে Economics নিয়ে আলোচনা করলেন WBCS অফিসার রাজনীশ কুমার যাদব। বর্তমানে যিনি পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Midnapore) ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট-ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে কর্মরত।
এবিপি লাইভ: WBCS পরীক্ষায় কেন গুরুত্বপূর্ণ Economics?
রাজনীশ কুমার যাদব: WBCS পরীক্ষায় যে বিষয়গুলি রয়েছে তার মধ্যে অর্থনীতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি। প্রিলিমসের যে পরীক্ষা দিই তার মধ্যে ২৫ নম্বরের প্রশ্ন Economics থেকে থাকে। মেনসে ১০ নম্বর। ভাষার মধ্যেই অর্থনীতি সংক্রান্ত প্রশ্ন থাকে। কনসেপ্ট পরিষ্কার থাকলে তবেই ভাল নম্বর তোলা যাবে। ধরা যাক ভারতীয় অর্থনীতির উপর কোভিডের প্রভাব – এই নিয়ে প্রশ্ন এসেছে। এর উত্তর লিখতে আগে কনসেপ্ট বোঝা জরুরি।
এবিপি লাইভ: ইন্ডিয়ান ইকোনমির ক্ষেত্রে কেন পড়তে হবে ব্যাঙ্কিং সিস্টেম?
রাজনীশ কুমার যাদব: ব্যাঙ্কিং সিস্টেম মানে প্রথমেই মনে হয় ব্যাঙ্কের কাজকর্ম। কিন্তু অর্থনীতিতে এই ব্যাঙ্কিং সিস্টেম হল অন্যতম স্তম্ভ। এটা বোঝার জন্য বেশ কিছু বই এবং ভিডিও ফলো করা হয়। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে পড়া যেতে পারে দ্বাদশ শ্রেণির ইন্ডিয়ান ইকোনমিকসের যে বইটা। সেখানে বেসিক ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের দুটো অংশ আছে। যা পড়লে বুঝতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। বলা হয় ইন্ডিয়ান ইকোনমিকসের কাণ্ডারি ব্যাঙ্কিং সিস্টেম। কিছু বেসিক প্রশ্ন থাকে, ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও, এসএলআর, কত ধরনের ব্যাঙ্ক আছে এগুলো বিস্তারিতভাবে পড়তে হবে। সব অংশই কেন তৈরি করা হয়েছে পড়লেই পড়া মনে থাকবে। প্রতিবছর ৮ থেকে ১০টা প্রশ্ন আসে ব্যাঙ্কিং সিস্টেম থেকে।
এবিপি লাইভ: নন- ব্যাঙ্কিং বা ফিনান্সিয়াল সংস্থার কাজ মনে রাখা কি গুরুত্বপূর্ণ?
রাজনীশ কুমার যাদব: একটা কয়েনের যেমন দুটো দিক হয় তেমনই ভারতীয় অর্থনীতিতেও এই দুটো দিক রয়েছে, একটা ব্যাঙ্কিং সিস্টেম, অন্যটা নন ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল কোম্পানি। নন ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল কোম্পানি সংখ্যায় অনেকগুলি রয়েছে। প্রথমে দেখতে হবে ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের থেকে এর পার্থক্য কোথায়। এমন অনেক ক্ষমতা ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের আছে কিন্তু নন ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল কোম্পানির নেই। কোন বডি কাকে কন্ট্রোল করে, কী ক্ষমতা রয়েছে, কী ধরণের কাজ করে এই বিষয়গুলি মনে রাখতে হবে। যেমন নন ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল কোম্পানির কাজ লোন দেওয়া, ব্যাঙ্কের কাজ অর্থ সঞ্চয় করা।
এবিপি লাইভ: প্রতিবছর কেন্দ্র এবং রাজ্যের বাজেট কেন ইকনোমিকসে গুরুত্বপূর্ণ?
রাজনীশ কুমার যাদব: প্রতিবছর নতুন নতুন স্কিম থাকে। যেগুলি মনে রাখতে হবে। সরাসরি এই স্কিম নিয়ে প্রশ্ন আসে। আমার এই স্কিমের কিছু প্রভাব থাকে অর্থনীতির উপরও। কীভাবে প্রভাব ফেলছে সেটা দেখতে হবে। যেমন কোনও স্কিমে কত টাকা কোন কোন খাতে ব্যয় করা হবে, সেটা পড়তে হবে। আবার সংবিধানের কয়েকটা ধারা রয়েছে বাজেট সংক্রান্ত, সেটা মনে রাখতে হবে। আর সবশেষে বাজেট যেহেতু প্রতিবছরই ঘোষণা হয়, তাই একেবারে আপটু ডেট থাকতে হবে।
এবিপি লাইভ: নীতি আয়োগ না কি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, WBCS -এ কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ?
রাজনীশ কুমার যাদব: ২০১৪-১৫ সালে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা সরিয়ে নীতি আয়োগ আনা হয়। ২০২০ সালে যে প্রশ্ন আসে সেই প্রশ্নতেও পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা সংক্রান্ত প্রশ্ন এসেছিল। ফলে ওই অংশটা পরব না, এরকম যেন না হয়। প্রত্যেক পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার নাম, বিষয়বস্তু কী ছিল সেটাও মনে রাখা জরুরি। শুধু তাই নয়, এই প্রত্যেকটা পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ঘটনাপ্রবাহও মনে রাখতে হবে।
এবিপি লাইভ: WBCS -এ কেন গুরুত্বপূর্ণ RBI-এর ভূমিকা?
রাজনীশ কুমার যাদব: রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। এই অংশের ইতিহাস বা আইন পড়া যেমন জরুরি। তেমনই জানতে হবে কাজও। সিলেবাসে বলা রয়েছে আরবিআই-এর কাজ পড়তে হবে। এটার উপর একটা বই রয়েছে। প্রত্যেকটা কাজ মনে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে বাদ দেওয়ার কিছু নেই। কেন ওই কাজ আরবিআই করে একইসঙ্গে সেটাও করতে হবে। আরবিআই-এর কাজের সঙ্গে যুক্ত রেপো রেট, রিভার্স রেপো রেট, এসএলআর, সিএলআর এই সব পড়তে হবে।
এবিপি লাইভ: সেন্ট্রাল এবং স্টেট ফিনান্স কমিশনের কাজের পার্থক্য বোঝা যাবে কী করে?
রাজনীশ কুমার যাদব: কেন্দ্র এবং রাজ্যের আলাদা ক্ষমতা থাকে। এই ধরনের টপিক পড়ার আগে প্রথমেই এটা বুঝতে হবে। সেন্ট্রাল ফিনান্স কমিশন হচ্ছে যে টাকা রাজ্যকে দেওয়া হবে তার নীতি নির্ধারক। রাজ্য ফিনান্স কমিশন ঠিক করে কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত টাকা রাজ্য তথা জেলার উন্নয়নের কাজে বা কোনও দুর্যোগ মোকাবিলার কাজে লাগানো যায়।
এবিপি লাইভ: যাঁরা প্রথমবার ইকোনমিকস পড়ছেন তাঁদের ভয় কাটানো উপায় কী?
রাজনীশ কুমার যাদব: আমি নিজে প্রথম যখন পড়া শুরু করি। একটা বই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছিলাম। স্বাভাবিকভাবেই কিছু বুঝতে পারিনি। আমার সায়েন্স ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল, তারপর বি.টেক। এই বিষয়ে যাঁরা প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় এসে পড়েছেন তাঁদের মধ্যে আমিও একজন। একাধিক ভিডিও আছে ইউটিউবে যেগুলো দেখলে ইকোনমিকসের সম্পর্কে প্রাথমিক একটা ধারণা পাওয়া যাবে। এই ধারণা পাওয়ার পর বিষয়টা সম্পর্কে পড়া সহজ হবে। এরপর দ্বাদশ শ্রেণির ম্যাক্রো ইকোনমিকস বইটা পড়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন: WBCS Exam Preparation: দেশের নীতি নির্ধারক হওয়ার স্বপ্ন! সিভিল সার্ভিসে কতটা জরুরি পলিটি?
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI