বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: স্বয়ং বিরোধী দলনেতার (Suvendu Adhikari) জেলায় জয়ী বিজেপি প্রার্থীদের (Elected BJP Candidates) তৃণমূলে যোগ (TMC) দিতে চাপের অভিযোগ ওঠায় তুমুল শোরগোল রাজ্য রাজনীতিতে। সূত্রের খবর, স্বয়ং বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি (BJP District Organizational Secretary) তৃণমূলে যোগ দিতে চাপ দিচ্ছেন জয়ী বিজেপি প্রার্থীদের। পাঁশকুড়ার (Panskura) কেশাপাট এবং মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২২ জন বিজেপি সদস্যকে এই মর্মে চাপ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আঙুল উঠেছে তমলুক সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও জেলা কোষাধ্যক্ষ জগদীশ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ মানেননি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখে কুলুপ জেলা কোষাধ্যক্ষের।
হইচই...
রাজ্য রাজনীতিতে পূর্ব মেদিনীপুরকে শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুক বলে মনে করেন অনেকে। সেই জেলাতেই এমন অভিযোগ ওঠায় স্বাভাবিক ভাবেই হইচই পড়ে যায় দিকে দিকে। শোনা যাচ্ছে, পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার কেশাপাট ও মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির ২২ জন সদস্যকে টাকার বিনিময়ে তৃণমূলে যোগ দিতে চাপ দিচ্ছেন বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ। অভিযোগ করেছেন পাঁশকুড়ায় বিজেপির জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশই। শুধু তাই নয়। ভয়ের চোটে একজোট হয়ে আত্মগোপন করে আছেন তাঁরা, এমনও দাবি বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যদের। অভিযোগ মানতে চাননি বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি। নীরব কোষাধ্যক্ষ। কেশাপাট ও মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে বিজেপি। কিন্তু গেরুয়া শিবিরের জয়ী সদস্যদের বক্তব্য, ভোটগণনার দিন থেকেই তাঁদের তৃণমূলে যোগ দিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। ক্ষুদিরাম নায়েক নামে এক জয়ী বিজেপি সদস্য বললেন, 'নির্বাচিত হওয়ার হওয়ার পর তৃণমূলের তরফ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার লোভ দেখানো হচ্ছে। কাউকে ২০ লক্ষ টাকা, কাউকে আবার প্রধান পদের লোভ দেখানো হয়। এর পরই আমরা একত্রিত হয়ে থাকব বলে ঠিক করি। কিন্তু আমরা যখন চলে আসি, তখনই আমার দলের লোক, জগদীশ প্রামাণিক আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন, হুমকি দেন। সঙ্গে বলেন, যে দিন আসছি, সেদিনের মধ্যে যদি না কথা মতো পৌঁছই, তা হলে আমার ঘর জ্বালিয়ে দেবেন।' মিতা সোরেন নামে পঞ্চায়েতের আর এক জয়ী বিজেপি সদস্য বললেন, 'আমাদের নিয়ে একদম গরু-ছাগলের মতো বেচা-কেনা করা হচ্ছে।' তাঁর মুখেও জগদীশ প্রামাণিক-সহ একাধিক 'ঊর্ধ্বতন' বিজেপি নেতাদের নাম। অভিযোগ, তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলাতে চাইছেন এঁরা। যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে তমলুক সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,'কেশাপাট এলাকায় যাঁরা বিজেপির নির্বাচিত প্রার্থী তাঁরা বিভিন্ন প্রলোভন ও দলবিরোধী কাজে যাঁরা লিপ্ত, তাঁদের সঙ্গে গভীর ষড়যন্ত্রে সামিল হয়েছেন।' সব মিলিয়ে আলোড়ন শুভেন্দু অধিকারীর জেলায়।