কলকাতা: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সামনে রেখেই দেশ চালাচ্ছে বিজেপি-এনডিএ। ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে তাঁকে মুখ হিসাবে প্রজেক্ট করেই সাফল্য পেয়েছে শাসক জোট। ২০১৬-র নভেম্বরে নোটবন্দির মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে বিরোধীরা সরব হলেও দেশবাসী সাধারণ নির্বাচনে মোদির ওপরই আস্থা রেখেছেন। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে সন্ত্রাসবাদী শিবির গুঁড়িয়ে দেওয়া, বালাকোট বিমান হানার মতো পদক্ষেপ নিয়ে আমজনতার মধ্যে কয়েকগুণ জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছেন তিনি। এমনকী কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা ভোটের প্রচারেও তিনিই ছিলেন বিজেপির প্রচারের মূল স্তম্ভ।
তবে করোনাভাইরাস অতিমারী রুখতে জারি হওয়া লকডাউনের ধাক্কায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা যখন বিপর্যস্ত হয়েছে, অর্থনীতি জোর ধাক্কা খেয়েছে, বহু মানুষ রুটি-রুজি হারিয়েছেন, সেই প্রেক্ষাপটে তাঁর ওপর কতটা ভরসা করছেন এ রাজ্যের মানুষ? সি ভোটার পরিচালিত জনমত সমীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী মোদির ভূমিকাকে কী চোখে দেখছেন রাজ্যবাসী, তার হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, মোদির ওপর প্রধানমন্ত্রী হিসাবে খুব সন্তুষ্ট ৩৭ শতাংশ, আংশিক সন্তুষ্ট ৩৭ শতাংশ। দুটি যোগ করলে দাঁড়ায় ৭৪ শতাংশ। চূড়ান্ত অসন্তুষ্ট বলে মতামত জানিয়েছেন ২৪ শতাংশ। জানি না বলেছেন, মাত্র ২ শতাংশ। অর্থাত্ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মোদির ওপর খুশি সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ। এ রাজ্য়েও প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে তিনি কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীকে অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছেন। তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে চান ৬২ শতাংশ পশ্চিমবঙ্গবাসী। রাহুলকে পছন্দ মাত্র ২৮ শতাংশের।
বর্তমানে দেশে প্রধানমন্ত্রী মোদির কোনও বিকল্প আছে কি, এই প্রশ্নেও জনমত তাঁর অনুকূলেও গিয়েছে। ৫০ শতাংশ বলেছেন, তাঁর কোনও বিকল্প নেই। বিকল্প আছে, এটা মনে করেন ৩৫ শতাংশ, ১৫ শতাংশের উত্তর, বলতে পারব না।
এমনকী ভবিষ্যতে কোন বিরোধী নেতা প্রধানমন্ত্রী মোদিকে টক্কর দিতে পারেন, সেই প্রশ্নেও পরিষ্কার, মোদির বিকল্প হিসাবে কাউকেই বেশি নম্বর দিতে নারাজ দেশবাসী। রাহুল গাঁধী, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেউই নন। ২৬ শতাংশের মত, ভবিষ্যতে রাহুল টক্কর দিতে পারেন মোদিকে, কেজরিবাল, মমতা তাঁর সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবেন, এমনটা মনে করেন যথাক্রমে ২২ ও ৮ শতাংশ। ৪৪ শতাংশের অভিমত, এই তিনজনের কেউই মোদিকে টক্কর দিতে যথেষ্ট নন।
শুধু তাই নয়, অধিকাংশ দেশবাসীই করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে মোদি সরকারের পদক্ষেপে খুশি বলে দেখা যাচ্ছে সমীক্ষায়। করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পারফরম্যান্স কেমন? জানতে চাওয়া হলে ভাল বলেছেন ৫১ শতাংশ, খারাপ বলেছেন ৩২ শতাংশ, বলতে পারব না, জানিয়েছেন ১৭ শতাংশ।
প্রায় দুমাস হতে চলা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জেরে কেন্দ্রীয় সরকারের ভাবমূর্তি কি ধাক্কা খেয়েছে, জানতে চাওয়া হলে ‘হ্যাঁ’ বলেছেন ৫২ শতাংশ, ৩৪ শতাংশ বলেছেন ‘না’, ‘জানি না’ বলেছেন ১৪ শতাংশ।