রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: ফলঘোষণা হতেই তৃণমূলে (TMC) যোগদান করলেন সিপিএম প্রার্থী (Winning CPM Candidate Joined TMC)। কালনা (Kalna) ১ নম্বর ব্লকের কাকুরিয়া পঞ্চায়েতের ঘটনা। সেখানে ওই একটি আসনেই জয়ী হয়েছিল সিপিএম। কিন্তু ফল (Panchayat Elections Result 2023) ঘোষণা হতেই তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। তবে কি এখানেও কাজ করে গেল বায়রন-মডেল? তুঙ্গে জল্পনা। যদিও জয়ী প্রার্থী গীতা হাঁসদা জানাচ্ছেন, তিনি তৃণমূলেই ছিলেন। পারিবারিক কারণে সিপিএমের (CPM) হয়ে ভোটে দাঁড়ান।
কী নিয়ে জল্পনা?
কাকুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮টি আসনের মধ্যে ১৭টিতেই জিতে গিয়েছিল তৃণমূল। মাত্র ১টি-তে জেতেন সিপিএম প্রার্থী গীতা হাঁসদা। কিন্তু দলীয় কর্মীদের একাংশের দাবি, তাঁরা জয়ী প্রার্থীকে নিয়ে জয়োধ্বনি দেওয়ার আগেই দেখেন গীতা বেরিয়ে তৃণমূল কর্মীদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। এর পর তাঁকে তৃণমূলের হয়ে জয়োধ্বনি দিতে দেখা যায়। হতচকিত হয়ে পড়েন তাঁরা। পরে গীতা জানান, তিনি তৃণমূলই করেন। স্রেফ পারিবারিক কারণেই সিপিএমের হয়ে দাঁড়াতে হয়েছিল। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বেরও এক দাবি। গীতা তৃণমূল করতেন। কিছু সমস্যা হওয়ায় সিপিএমের প্রতীকে দাঁড়িয়েছিলেন। জিতে ফিরে এসেছেন। সিপিএম নেতৃত্ব সেই ব্যাখ্যা স্বাভাবিক ভাবেই মানতে চাননি। তাঁদের ধারণা, কোনও না কোনও ভাবে ভয় দেখিয়ে, ব্ল্যাকমেল করে সিপিএমের জয়ী প্রার্থীকে তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য় করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, পুনর্নির্বাচনের আগের দিন, অর্থাৎ গত রবিবারই নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় যে গুলি চলে, তাতেও সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ ছিল, তাদের প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা বেশি থাকায় ওই হামলা চালিয়েছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।
নদিয়ায় যা ঘটেছিল...
নাকাশিপাড়ার ঘটনায় জখম সিপিএম কর্মীর নাম সাজ্জাদ মণ্ডল। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল, যেখানে সংঘর্ষ হয়, সেখানে ভোটের দিন কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। তবে সূত্রের খবর, সেখানে সিপিএমের যিনি প্রার্থী দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর একটা জিতে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল বলে মনে করছেন স্থানীয় দলীয় কর্মীরা। পাশাপাশি, গত শনিবার ভোট মেটার পর থেকেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সেখানে ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করছিল বলে অভিযোগ। বোমা-গুলি চলতে শুরু করে। সেই সংঘর্ষের জেরেই জখম হন সাজ্জাদ মণ্ডল, তাঁকে বেথুয়াডহরি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সিপিএমের বক্তব্য, বিরোধী প্রার্থী জিতে জেতে পারে আশঙ্কা থেকেই এই তাণ্ডব শুরু করে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। কম-বেশি একই তত্ত্ব শোনা গেল কাকুরিয়া পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রেও। ফারাক একটাই। সিপিএমের নেতৃত্বের ধারণা অনুযায়ী, চাপের মুখে এখানে দল পাল্টাতে বাধ্য হলেন জয়ী প্রার্থী। এর আগে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস সাগরদীঘি থেকে জিতে আসার পরও যে ভাবে তৃণমূলে চলে গিয়েছিলেন, তাতে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় পড়ে যায়। সেই একই ঘটনার কি পুনরাবৃত্তি হল কাকুরিয়ায়? প্রশ্ন থাকছেই।